বাংলার খবর
শহীদ দিবসের প্রস্তুতি খতিয়ে দেখতে গিয়ে রাজ্যবাসীর কাছে ক্ষমা চেয়ে নিলেন তৃণমূল নেত্রী!

বেঙ্গল এক্সপ্রেস নিউজ: রাত পোহালেই একুশে জুলাই। করোনার জন্য দু’বছর নমো নমো করে ভার্চুয়ালি অনুষ্ঠিত হলেও এবারে মহাসমারোহে অনুষ্ঠিত হতে চলেছে তৃণমূলের একুশে জুলাইয়ের শহীদ দিবসের অনুষ্ঠান। ইতিমধ্যেই রাজ্যের বিভিন্ন জেলা থেকে হাজার হাজার মানুষ একুশে জুলাইয়ের অনুষ্ঠানে যোগ দিতে শহরে পৌঁছে গিয়েছেন। বুধবার সকালেই বিভিন্ন জেলা থেকে আগত তৃণমূল কর্মী-সমর্থকদের উদ্দেশ্যে বিশেষ বার্তা দিয়েছিলেন তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সকলকে সাবধানে, সহযোগিতা করে আসার জন্য অনুরোধ করেন তিনি।
বুধবার বিকালে সভা স্থল পরিদর্শনেও যান মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেখানে আগে থেকেই উপস্থিত ছিলেন সাংসদ সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়, মন্ত্রী অরূপ বিশ্বাস, কলকাতার মেয়র তথা মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম সহ তৃণমূলের অন্যান্য শীর্ষ নেতৃত্ব। সেখানে পৌঁছে তাঁদের সঙ্গে বেশ কিছুক্ষণ কথাও বলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং সভার আয়োজনের খুঁটিনাটি ও প্রস্তুতিও খতিয়ে দেখেন তিনি। প্রত্যেক বছরই নিয়ম করে সমাবেশের আগের দিন সভাস্থল পরিদর্শন করেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এবারও তার অন্যথা হয়নি। বুধবার বিকেল সাড়ে পাঁচটা নাগাদ তিনি সভাস্থলে আসেন।
সেখান থেকেই আবারও তিনি সকলের উদ্দেশ্যে শান্ত ও সুন্দরভাবে, শৃঙ্খলা মেনে মিছিল করে আসার জন্য কর্মী-সমর্থকদের বার্তা দেন। তৃণমূল নেত্রী বলেন, ‘আমি সকলকে শান্ত ও সুন্দর ভাবে, শৃঙ্খলা মেনে মিছিল করে আসতে বলছি। মিটিং শেষে আবার শান্ত ভাবে বাড়ি ফিরে যাবেন। রাস্তা দিয়ে জোরে গাড়ি চালাবেন না। কোনও জেলায় কোনও সমস্যা হলে সঙ্গে সঙ্গে প্রশাসনের সঙ্গে কথা বলে সমাধান করবেন।’
একুশে জুলাইয়ের এই সভার জন্য যে বিশাল জনসমাবেশ হবে তাতে নিত্যযাত্রীদের সমস্যায় পড়তে হবে। তা স্বীকার করে নিয়ে আগাম সকলের কাছে ক্ষমা প্রার্থনাও করে নিয়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি বলেছেন, ‘জায়গাটা তো আর বদলাতে পারব না। কারণ, ঘটনাটা এখানেই ঘটেছিল। আমি সাধারণ মানুষের কাছে ক্ষমা চেয়ে নিচ্ছি। একটু ভিড় হবে। আপনারা একটু কষ্ট সহ্য করে নেবেন একটা দিন। আমরা গত দু’বছর কোভি়ডের জন্য সমাবেশ করতে পারিনি। এ বছর করছি। আপনাদের কোনও অসুবিধা হলে তার জন্য আমি ক্ষমাপ্রার্থী।’
সেইসঙ্গে বৃহস্পতিবারের সভার রিংও টোনও সেট করে দিলেন তৃণমূল নেত্রী। বৃহস্পতিবারের মঞ্চ থেকে তিনি যে বিজেপি চালিত কেন্দ্রীয় সরকারকেই নিশানা করবেন, তা বুধবার জানিয়ে দিলেন। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছেন, ‘কেন্দ্রীয় সরকার যেভাবে একের পর এক জনবিরোধী কাজ করে চলেছে, রাজ্যের সঙ্গে প্রতিমুহূর্তে বঞ্চনা করছে, তার প্রতিবাদ আমাদের সকলকে একত্রিতভাবে করতে হবে।’
বুধবার মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সভাস্থল পরিদর্শনে আসার আগেই সেখানে ঘুরে যান দলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ও। কর্মী সমর্থকদের সঙ্গে কথা বলে সেখান থেকে বেরোনোর সময় অভিষেক দাবি করেছেন, এবারে একুশে জুলাইয়ের সমাবেশে ২০ লক্ষেরও বেশি মানুষের জমায়েত হবে। গোয়া, ত্রিপুরা, মেঘালয়, অসম থেকেও প্রচুর মানুষ বৃহস্পতিবার সমাবেশে যোগ দেবেন বলেও জানিয়েছেন তিনি।
এবারের সমাবেশে কোনও চমক থাকবে কিনা জিজ্ঞাসা করা হলে অভিষেক বলেন, ‘গত দু’বছর কোরোনার জন্য আমরা একুশে জুলাইয়ের অনুষ্ঠান করতে পারিনি। তাই এবারে মানুষের মধ্যে যে স্বতঃস্ফূর্ততা, আবেগ ও উচ্ছ্বাস দেখেছি, তা আমি আগে কখনও দেখিনি। একুশে জুলাইয়ে একটাই চমক। সেটা হল জননেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ভাষণ। তিনি ভাষণে যা বলবেন সেটাই চমক। আর তাঁর ভাষণ শোনার জন্যই এবারে ২০ লক্ষেরও বেশি মানুষের জমায়েত হবে।’