সূর্যাস্তের পর প্রতিমা তৈরি করে পুজো মিটিয়ে ভোরের আগেই বিসর্জন, ৫০০ বছর ধরে এই রীতিই চলে আসছে রায়গঞ্জের দেবীনগর কালীবাড়িতে
Connect with us

বাংলার খবর

সূর্যাস্তের পর প্রতিমা তৈরি করে পুজো মিটিয়ে ভোরের আগেই বিসর্জন, ৫০০ বছর ধরে এই রীতিই চলে আসছে রায়গঞ্জের দেবীনগর কালীবাড়িতে

Published

on

Rate this post

বেঙ্গল এক্সপ্রেস নিউজ: সূর্য অস্ত যাওয়ার পরে শুরু হয় প্রতিমা নির্মাণের কাজ। প্রতিমা নির্মাণ থেকে রাতভর পুজো করে ভোরের আলো ফোটার আগেই দিতে হয় দেবীর বিসর্জন। প্রায় পাঁচশো বছর ধরে এমনই রীতি মেনে দিপাবলির রাতে কালীপুজো হয়ে আসছে রায়গঞ্জ শহরের দেবীনগর কালীবাড়ি মন্দিরে।

শুধু তাই নয়, দেবীর আদেশে এই মন্দিরে নেই কোনও ছাদ বা আচ্ছাদন। চারিদিক দেওয়াল দিয়ে ঘিরে মন্দির থাকলেও খোলা আকাশের নীচেই পরম জাগ্রত দেবীনগর কালীবাড়ির দেবী পূজিত হন বেদীতেই। শুধু উত্তর দিনাজপুর জেলাই নয়, ভিন জেলা ও ভিনরাজ্য থেকেও হাজার-হাজার দর্শণার্থীদের সমাগম হয় দীপাবলির রাতে ঐতিহ্যবাহী এই শ্যামাপুজোয়। করোনা আবহ থাকায় মন্দির কর্তৃপক্ষ এবার মাস্ক এবং ডাবল ডোজ ভ্যাকসিন ছাড়া ভক্তদের মন্দিরে প্রবেশের ওপর বিধিনিষেধ জারি করেছে। কথিত আছে রায়গঞ্জ শহরের দক্ষিণ প্রান্তে দেবীনগরে রাজপথের ধারে এই কালীমন্দিরে একসময় গাছের তলায় ডাকাতদল পুজো করত। দিনাজপুরের রাজা একবার এই পথ দিয়ে ভূপালপুর রাজবাড়ি যাওয়ার পথে এই স্থানে আটকে পরেন। সেইসময় দেবীর আদেশ পান এই স্থানে মন্দির তৈরি করে পুজো করার।

দেবীর এই আদেশও ছিল মন্দির হবে ছাদ খোলা। মা রোদ বৃষ্টি ঝড়ে এখানে পূজিত হবেন। দিনাজপুরের রাজা স্বপ্নাদেশ পেয়েছিলেন দীপাবলির অমাবস্যায় সূর্য অস্ত যাওয়ার পরে মায়ের মূর্তি তৈরি করা শুরু হবে, আর সূর্যদোয় হওয়ার আগেই মায়ের বিসর্জন দিয়ে দিতে হবে। বাকি সারাটা বছর মা পূজিত হবেন পঞ্চমুন্ডির বেদীতেই। মায়ের স্বপ্নাদেশ পেয়ে দিনাজপুরের রাজা রায়গঞ্জ শহরের দেবীনগরে রাজপথের ধারে তৈরি করে দেন ছাদ খোলা মায়ের এই মন্দির। সেই থেকেই আজও এই ছাদ খোলা মন্দিরে পঞ্চমুন্ডির বেদীতে মা কালীর আরাধনা হয়ে আসছে। আর দীপাবলির একরাতেই মায়ের মূর্তি তৈরি করে পুজো করে ভোরের আলো ফোটার আগে বিসর্জন দিয়ে দেওয়া হয়। একটিবারের জন্যও এই রীতির অন্যথা হয়নি রায়গঞ্জ শহরের দেবীনগর কালীবাড়ির পুজোয়।

Advertisement

জাগ্রত দেবী বলে খ্যাতি ছড়িয়েছে গোটা দেশজুড়ে। দীপাবলির কালীপুজোর রাতে রাজ্যের অন্যান্য জেলার পাশাপাশি ঝাড়খন্ড, ওড়িশা, বিহার, ত্রিপুরা, অসম, মুম্বই- দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে ১০-১৫ হাজার ভক্তের সমাগম হয় বলে জানিয়েছেন মন্দিরের পুরোহিত সাধন সরকার মুখোপাধ্যায়। বাংলাদেশ থেকেও প্রচুর মানুষ এই মন্দিরে পুজো দিতে আসেন। মন্দিরের অন্যতম সদস্য বৃষ্ণু কর্মকার জানিয়েছেন যেহেতু সূর্যাস্তের পর কাঁচা দুধ ও মাটি দিয়ে মায়ের মূর্তি তৈরি হয় তাই কাঁচা মাটির মূর্তিই পুজো করা হয়। তবে সারা বছরই এই মন্দিরে চলে পুজো। শনি, মঙ্গলবার করে হয় আরতি। আনুমানিক পাঁচশো বছর ধরেই এই রীতি চলে আসছে বলে জানিয়েছেন তিনি।

Continue Reading
Advertisement
Ads Blocker Image Powered by Code Help Pro

Ads Blocker Detected!!!

We have detected that you are using extensions to block ads. Please support us by disabling these ads blocker.