কয়লা নেই বলে বিদ্যুৎ নেই, তাই ট্রেন বাতিল করছে কেন্দ্র: মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়

বেঙ্গল এক্সপ্রেস নিউজ: বাংলার শাসক দল হিসেবে তৃতীয় তৃণমূল সরকারের বর্ষপূর্তি উপলক্ষে বৃহস্পতিবার নেতাজী ইন্ডর স্টেডিয়ামে উপস্থিত হয়ে আরও একবার কেন্দ্রের সহ বিরোধীদের সমালোচনায় সরব হলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।

এদিন কারও নাম না করে সরাসরি বিরোধীদের তোপ দেগে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ”আমরা আগে বলতাম লোডশেডিংয়ের সরকার আর নেই দরকার। কিন্তু এখন আর লোডশেডিং নেই। আমরা এসে লোডশেডিং বন্ধ করে দিয়েছি। এখন আর রাজ্যে লোডশেডিং হয় না।”

তিনি বলেন, ”প্রতিদিন হু-হু করে সবকিছুর দাম বাড়িয়ে চলেছে কেন্দ্র। সারাদেশে কয়লা সঙ্কট দেখা দিয়েছে। ঘাটতি মেটাতে দ্রুত রাজ্যগুলিতে কয়লা সরবরাহের জন্য বাতিল করে দেওয়া হয়েছে প্যাসেঞ্জার ট্রেন। কিন্তু আমাদের রাজ্যে কোনও লোডশেডিং নেই। কয়লা সঙ্কটের জেরে বাতিল করে দেওয়া হয়েছে একাধিক এক্সপ্রেস ট্রেন।”

”আমি হা করলে বদনাম করে। ওঁরা খুন করলে কিচ্ছু হয় না। আমি বিভেদ করি না, আমি মানুষের কাজ করি। বাংলার দুর্গাপুজো UNESCO-তে সম্মান পেয়েছে। এতে ওঁদের কোনও অবদান নেই। যা করার মানুষ আর ক্লাবগুলো করেছে। ওঁরা বলে দুর্গাপুজো, সরস্বতী পুজো ভালো হয় না। ওঁরা আসলে মন্ত্র জানে না।” 

আরও পড়ুন: যারা বাম ছিল, তাঁরাই এখন বিজেপি হয়ে গিয়েছে: মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়

”রাজনীতিতে আমি কোনও ব্যক্তি স্বার্থ দেখি না। শুধু রাজনীতি করলে হয় না। রাজনীতি করতে গেলে মানুষের সেবা করতে হয়। ওঁরা বিভেদের রাজনীতি করতে ভালোবাসে। আমি মানুষকে ভালোবাসি। রাজনীতি করতে গেলে শুধু ব্যক্তি স্বার্থ দেখলে হয় না। সরকারের ভালো-মন্দ বিচার করার ক্ষমতাও থাকা চাই।”

শুধু তাই নয়, বৃহস্পতিবার নেতাজি ইন্ডোরে উপস্থিত হয়ে আরও একবার নাম না করে কেন্দ্রের সমলোচনায় সরব হন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি বলেন, ”আমরা করি লক্ষ্মীর ভান্ডার, ওঁরা করে কুৎসার ভান্ডার। বাম ৩৪ বছর ধরে নর কঙ্কালের মালা পরিয়েছে। বছরে দু’বার বাড়িয়ে দিয়েছে ওষুধের দাম। রান্নার গ্যাস থেকে শুরু চাল-ডাল-তেল সবকিছুর দাম বেড়ে গিয়েছে। এভাবে দাম বাড়িয়ে মানুষের পকেট কাটছে। ওদের এত সম্পত্তি তাও ভিক্ষা করছে। ১১ বছরে যা করেছি ক্ষমতা থাকলে সামনে দাঁড়িয়ে বলুন। ভোট পরবর্তী সন্ত্রাসের নামে ভিক্ষা করছে বিজেপি।”

তিনি আরও বলেন, ” ভুয়ো খবর ছড়িয়ে মিথ্যে বললে শাস্তি হতে পারে। এত ছেলেমেয়ে মাধ্যমিক, উচ্চমাধ্যমিক দিলো একটাও দুর্ঘটনা ঘটেনি। আমরা রঙ দেখে বিভেদ করি না। ১১ কোটি লোকের মধ্যে ৫টি ঘটনা ঘটেছে। সেটাই সবাই সারাক্ষণ দেখিয়ে যাচ্ছে। কেউ কেউ বলছেন বাংলায় গেলে খুন হয়ে যাবে এগুলি ঠিক না। আমি মনে করি বাংলা অন্য রাজ্যের থেকে অনেক ভালো। কোনও ঘটনা ঘটলে দোষীদের শাস্তি চান, কুৎসা করবেন কেন? আমরা সকলের পাশে আছি।”

আরও পড়ুন: হাঁসখালি ধর্ষণে নির্যাতিতার পরিবারকে এক কোটি টাকা ক্ষতিপূরণ দেওয়ার আবেদন হাইকোর্টে

শুধু তাই নয়, এদিন মুখ্যমন্ত্রী নাম না করে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের তীব্র সমালোচনা করেন। তিনি বলেন,”উত্তরপ্রদেশে কেউ থানায় অভিযোগ জানাতে গেলে পুলিশ ধর্ষণ করে। বাংলায় এসব হয় না। বাংলা অন্য রাজ্যের থেকে অনেক ভালো আছে। আমরা যা বলি তা করে দেখাই। এটা উত্তরপ্রদেশ, বিহার নয় এটা বাংলা। এখানে অন্যায় দেখলে পুলিশকে রঙ না দেখে ব্যবস্থা নিতে বলেছি। যারা রোজ বদনাম করছেন তাঁরা পারলে করে দেখান।”