দেশের খবর
বিপ্লব দেবের পদত্যাগে তেইশে ক্ষমতায় ফেরার স্বপ্ন দেখছে বামেরা
বেঙ্গল এক্সপ্রেস নিউজ: মেয়াদ শেষ হবার আগেই মুখ্যমন্ত্রীর পদ থেকে বিপ্লব দেব ইস্তফা দিতেই, ত্রিপুরায় আবারও ক্ষমতায় ফেরার স্বপ্ন দেখতে শুরু করে দিয়েছে বামেরা। বিপ্লব দেবের জায়গায় ত্রিপুরা বিজেপির সভাপতি তথা রাজ্যসভার সাংসদ ডাক্তার মানিক সাহার নাম নতুন মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে ঘোষণা হতেই যেভাবে বিজেপির একাংশ প্রকাশ্যেই ক্ষোভ দেখালেন তাতে অন্তর্দ্বন্দ্ব সামনে চলে এসেছে। আর তাতেই হাসি চওড়া হচ্ছে ত্রিপুরার বাম নেতৃত্বের মুখে।
এই প্রসঙ্গে ত্রিপুরার সিপিআইএম নেতা তথা বিধায়ক প্রভাত চৌধুরীকে জিজ্ঞাসা করা হলে তিনি বিপ্লব দেবের পদত্যাগকে বিজেপির নাটক বলেই ভাবছেন। বলেছেন, ‘২০১৮ সালের নির্বাচনের আগে বিজেপি যে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল সেই প্রতিশ্রুতি রাখতে তারা সম্পূর্ণ ব্যর্থ হয়েছে। মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব দেবের জনসমর্থন ও জনপ্রিয়তা তলানিতে ঠেকেছে। আট মাস পরে ত্রিপুরায় নির্বাচন হতে যাচ্ছে। এই পরিস্থিতিতে বিপ্লব দেবকে সামনে রেখে ভোটে যাওয়া বিজেপির পক্ষে খুবই কষ্টকর। তাই সুকৌশলে বিপ্লব দেবকে সরিয়ে অন্য কাউকে মুখ্যমন্ত্রী করে নতুন কোনও গল্প তৈরি করে মানুষের কাছে যাওয়ার নাটক করছে বিজেপি। বিপ্লব দেবের এত জনপ্রিয়তা, এত কাজ করলে তাঁকে ৫২ মাসের মাথায় কেন সরিয়ে দিতে হল? উনি এখন ত্রিপুরায় অচল পয়সা। তেইশের নির্বাচনে ওরা পার হতে পারবে না। তাই নাটক করছে। শুনেছি রাজ্য বিজেপি সভাপতি ডাক্তার মানিক সাহা নতুন মুখ্যমন্ত্রী হচ্ছেন। বিজেপির এক বাহুবলী এমএলএ রামপ্রসাদ পাল যেভাবে চেয়ার ছুড়ে ভাঙচুর করলেন, অসন্তোষ প্রকাশ করলেন, তাতেই বোঝা যায় অভ্যন্তরীণ কোন্দলে জর্জরিত বিজেপি। ত্রিপুরার মানুষের জন্য কিছুই করতে পারিনি এই বিজেপি। এভাবেই ত্রিপুরার মানুষকে বোকা বানিয়ে ২০২৩ এর নির্বাচনী বৈতরণী পার হতে চাইছে বিজেপি।’
তাই কিছু ভোট অন্যত্র গেলেও ত্রিপুরার ক্ষমতায় আবার বামেরা ফিরতে চলেছে বলে আত্মবিশ্বাসী তিনি। মনু কেন্দ্রের সিপিআইএম বিধায়ক বলেছেন, ‘এতে কোনও সন্দেহ নেই। এটা শুধু সময়ের অপেক্ষা। যতগুলো লোকাল বডির নির্বাচন হয়েছে- পঞ্চায়েত, নগর পঞ্চায়েত, আগরতলা পৌরসভা নির্বাচন, সব জায়গায় বিজেপি লাঠিয়াল বাহিনী দিয়ে নির্বাচন করিয়েছে। ওরা জানে যে ত্রিপুরার জনগণের থেকে আর সমর্থন পাবে না। তাই মানুষকে ভয়-ভীতি দেখিয়ে নির্বাচন করেছে। মানুষ জানত এই নির্বাচনে রাজ্য সরকার পরিবর্তন হবে না। তাই তারা চোখ বুজে সব অত্যাচার সহ্য করে নিয়েছে। কিন্তু বিধানসভা নির্বাচনে তা হবে না। এই সরকারের পতন হবেই। তার অপেক্ষাতেই মানুষ আছে। আমরা নিশ্চিত, আমরাই ফিরে আসছি। ২০১৮ সালের নির্বাচনে বিজেপির থেকে আমরা মাত্র দেড় শতাংশ ভোট কম পেয়েছিলাম। তেইশের নির্বাচনে তা হবে না। কংগ্রেসের ভোট কংগ্রেসকে ফিরবে। একটা পার্সেন্টেজ তৃণমূলে যাবে। ভয়-ভীতির কারণে আমাদের কিছু ভোটও অন্যত্র যাবে। তাতে খুব একটা ক্ষতি হবে না। আমাদের নির্বাচনী প্রস্তুতি অনেকটাই এগিয়ে গিয়েছে। তাই যেকোনো সময় ভোট হলে আমরা প্রস্তুত। হিসেব মতো আগামী বছরের মার্চ বা ফেব্রুয়ারি মাসে নির্বাচন হওয়ার কথা। কিন্তু বিজেপির যা মতিগতি তাতে ততদিন পর্যন্ত সরকার গড়াবে বলে আমার মনে হয় না। এই বছরের ডিসেম্বরে হিমাচল প্রদেশ, গুজরাতে ভোট হবে। তার সঙ্গেই ত্রিপুরায় ভোট হতে পারে।’