পুরভোটে সন্ত্রাসের অভিযোগ তুলে হাইকোর্টে মামলা বাম-বিজেপির, বৃহস্পতিবার শুনানি
Connect with us

বাংলার খবর

পুরভোটে সন্ত্রাসের অভিযোগ তুলে হাইকোর্টে মামলা বাম-বিজেপির, বৃহস্পতিবার শুনানি

Published

on

Rate this post

বেঙ্গল এক্সপ্রেস নিউজ: গতকালই কলকাতা পুর নির্বাচন সম্পন্ন হয়েছে। নির্বাচনের জন্য কেন্দ্রীয় বাহিনী চেয়ে আবেদন করেছিল প্রধান বিরোধীদল বিজেপি। কিন্তু রাজ্য নির্বাচন কমিশন রাজ্য পুলিশ দিয়ে নির্বাচন করার ব্যবস্থা করে। কলকাতা হাইকোর্টও রাজ্য পুলিশে আস্থা রেখেছিল।

কিন্তু রবিবার সকাল থেকেই ভোটগ্রহণকে কেন্দ্র করে বিভিন্ন এলাকায় অশান্তির খবর সামনে আসতে থাকে। কলকাতা হাইকোর্ট প্রত্যেক বুথে সিসিটিভি ক্যামেরা লাগানোর নির্দেশ দিলেও সেই সিসিটিভি ক্যামেরা নিয়েই নানান অভিযোগ সামনে আসে। কোথাও শাসক দলের বিরুদ্ধে বিরোধীদলের পোলিং এজেন্টকে বের করে দেওয়ার খবর পাওয়া যায়, আবার কোথাও মারধরের খবর সামনে আসে। কোথাও ছাপ্পা ভোট, আবার কোথাও বা ভুয়ো ভোটার ধরার একাধিক অভিযোগ তোলে বিরোধীরা। কোথাও আবার বিরোধীদলের প্রার্থীদের মারধর করার অভিযোগ ওঠে রাজ্যের শাসক দল তৃণমূল কংগ্রেসের বিরুদ্ধে। বাদ যাননি মহিলা প্রার্থীও।

২২ নম্বর ওয়ার্ডে বিজেপি প্রার্থী মীনাদেবি পুরোহিতকেও হেনস্থা করা হয়। তাঁর কাপড় ধরে টানাটানি এবং ব্লাউজ ছিঁড়ে দেওয়ার অভিযোগও ওঠে। শিয়ালদহ এবং বেলেঘাটায় বোমাবাজির ঘটনায় আহত হন তিনজন। একাধিক জায়গায় বাম, বিজেপি এবং কংগ্রেস পথ অবরোধ করে বিক্ষোভ দেখায়। বিরোধীদের অভিযোগ, পুলিশকে বারবার অভিযোগ করা হলেও পুলিশ নীরব দর্শকের ভূমিকা পালন করেছে। গতকাল ভোট পর্ব মিটতেই বিরোধীরা দাবি করে নির্বাচন কমিশন এবং রাজ্য পুলিশ অবাধ ও শান্তিপূর্ণভাবে ভোট করতে সম্পূর্ণ ব্যর্থ। গোটা নির্বাচনটাই নাকি প্রহসন। তাই বিরোধীরা একাধিক ওয়ার্ডে পুনর্নির্বাচনের দাবি জানিয়েছিল। তবে, সেই দাবি খারিজ করে দিয়েছে রাজ্য নির্বাচন কমিশন।

Advertisement

কমিশনের বক্তব্য, কোথাও ভোটে বাধা দেওয়া হয়নি, ভোট বন্ধও হয়নি। কিছু বিক্ষিপ্ত ঘটনা ছাড়া পুরভোট শান্তিপূর্ণ হয়েছে। তাই নির্ধারিত সময়েই ভোট গণনা হবে। তবে নির্বাচন কমিশনের এই দাবিকে মানতে নারাজ বিরোধীরা। তাই ভোটের দিন শাসক দলের বিরুদ্ধে সন্ত্রাসের অভিযোগ তুলে কলকাতা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হল রাজ্য বিজেপি এবং বামেরা। ২ নম্বর ওয়ার্ডের সিপিআইএম প্রার্থী দেবলীনা সরকার এবং বিজেপির পক্ষে প্রতাপ বন্দ্যোপাধ্যায় মামালা করেছেন। দু’জনের মামলাই গ্রহণ করেছেন প্রধান বিচারপতি প্রকাশ শ্রীবাস্তব। আগামী ২৩ ডিসেম্বর মামলার শুনানির দিন ধার্য হয়েছে।

যদিও ২১ তারিখে কলকাতা পুর ভোটের গণনা এবং ফল প্রকাশ হওয়ার কথা রয়েছে। এখন পরিস্থিতি কোন দিকে মোড় নেয় সেটাই দেখার। কেন্দ্রীয় বাহিনীর দাবি খারিজ করে দিলেও হাইকোর্ট আগেই নির্দেশ দিয়েছিল, ভোটে যদি কোনও রকম অশান্তি কিংবা বিশৃঙ্খলার অভিযোগ ওঠে, তাহলে কলকাতা পুলিশ কমিশনার ও ডিজি এবং রাজ্য নির্বাচন কমিশনকে তার উত্তর দিতে হবে। এবং গোটা ভোট গ্রহণ প্রক্রিয়ার উপর নজর থাকবে বলেও জানিয়ে দিয়েছিল আদালত। রবিবার ভোটে প্রত্যেক বুথে লাগানো সিসিটিভি ফুটেজে যে ছবি ধরা পড়েছে, তাতে পুলিশের ভূমিকা ঠিক কী ছিল, তা নিয়ে কমিশন আদালতে কী বলে, সেটা অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ।

বিজেপি নেতা জয়প্রকাশ মজুমদার অভিযোগ করেছেন, পুনর্নির্বাচন করা হবে না আগে থেকেই ঠিক করে নিয়ে শাসকদলের নির্দেশেই ভোটগ্রহণের একদিন পরেই গণনার দিন ঠিক করেছে নির্বাচন কমিশন। পুননির্বাচনের জন্য কোনও দিন ধার্য করা হয়নি। এদিকে, পুরভোটে সন্ত্রাসের অভিযোগ তুলে সোমবার নির্বাচন কমিশনের সামনে বিক্ষোভ দেখায় বাম ও কংগ্রেস। তাদের দাবি, ১৯ ডিসেম্বরের ভোট বাতিল করে নতুন করে নির্বাচন করতে হবে। একইসঙ্গে এই বিক্ষোভ থেকে রাজ্য নির্বাচন কমিশনারের পদত্যাগের দাবিও তোলা হয়েছে। ২৩ ডিসেম্বর হাইকোর্টে এই মামলার সঙ্গে মেয়াদ উত্তীর্ণ পুরভোটগুলিতে কত দফায় ভোট হবে, কবে ভোট হবে, সেই মামলারও শুনানি হবে।

Advertisement
Ads Blocker Image Powered by Code Help Pro

Ads Blocker Detected!!!

We have detected that you are using extensions to block ads. Please support us by disabling these ads blocker.