বাংলার খবর
দুর্নীতি, স্বজনপোষণের অভিযোগে কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে দেশের প্রধান বিচারপতিকে চিঠি আইনজীবীদের!

বেঙ্গল এক্সপ্রেস নিউজ: কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়কে নিয়ে বিতর্ক এবং ক্ষোভ যেন কিছুতেই থামছে না। শ্রীরামপুরের সাংসদ তথা আইনজীবীর বিরুদ্ধে দুর্নীতি, স্বজনপোষণের অভিযোগ তুলে মঙ্গলবারই কলকাতা হাইকোর্টে পোস্টার হাতে বিক্ষোভ দেখিয়েছিলেন তৃণমূলের লিগাল সেলের আইনজীবীরা।
এবার কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে দেশের প্রধান বিচারপতিকে চিঠি দিলেন তৃণমূলের আইনি সেলের সদস্যরা। সেই চিঠিতে কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে সহকারী পদে থেকে দুর্নীতি, স্বজনপোষণ এবং মহিলা আইনজীবিদের বিশেষ অনুগ্রহের বিনিময়ে সুবিধা পাইয়ে দেওয়ার মতো মারাত্মক অভিযোগ করা হয়েছে। তাঁর দৃষ্টান্তমূলক শাস্তিরও দাবি জানানো হয়েছে। শুধু সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতিকেই নয়, কলকাতা হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি এবং মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কেও এই চিঠি পাঠিয়েছেন আইনজীবীরা। আইনজীবীদের একাংশের অভিযোগ, একজন সাংসদ হয়েও কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় দুর্নীতি এবং স্বজনপোষণের সঙ্গে জড়িত। তিনি ক্ষমতা বলে তাঁর পুত্র ও কন্যাকে সরকারি সুবিধা পাইয়ে দিয়েছেন। পুত্র শীর্ষণ্য বন্দ্যোপাধ্যায়ের জন্য হাইকোর্টের ভিতরে ব্যক্তিগত চেম্বার করে দিয়েছেন তিনি।
শুধু তাই নয়, বিশেষ অনুগ্রহের বিনিময়ে মহিলা আইনজীবীদেরও তিনি একাধিক সুবিধা পাইয়ে দিয়েছেন। আইনজীবীদের আরও অভিযোগ, একজন সাংসদ হয়েও তিনি প্রায়ই প্রকাশ্যে অসংসদীয় ভাষা প্রয়োগ করেন। প্রধান বিচারপতি, আইনজীবীদের কুৎসিত ভাষায় আক্রমণ করেন। আর এই সমস্ত কিছু বন্ধ করতেই কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে কড়া ও দৃষ্টান্তমূলক পদক্ষেপ নেওয়ার দাবি জানিয়েছেন তাঁরা। অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে নিয়ে বিতর্কিত মন্তব্য করার পর থেকেই ঘরে-বাইরে ক্ষোভ এবং কটাক্ষের মুখে পড়েছেন শ্রীরামপুরের সাংসদ। তাঁর সংসদীয় ক্ষেত্রের বিভিন্ন জায়গায় তাঁর বিরুদ্ধে পড়েছে পোস্টার। এমনকি অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের তুতো ভাই ও বোনেরাও সোশ্যাল মিডিয়ায় কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে সরব হয়েছেন।
‘শ্রীরামপুর এবার নতুন সাংসদ চায়’- স্লোগান দিয়ে অভিষেক অনুগামীরাও সোশ্যাল মিডিয়ায় জোরকদমে প্রচার চালাচ্ছেন। দলের একের পর এক নেতা, বিধায়করা কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে প্রকাশ্যে মুখ খুলেছেন। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে আসরে নেমেছে তৃণমূলের শীর্ষ নেতৃত্ব। এই নিয়ে প্রকাশ্যে কেউ কোনও মন্তব্য করলে দলের শৃঙ্খলা রক্ষা কমিটি কড়া পদক্ষেপ নেবে বলেও হুঁশিয়ারি দিয়েছেন দলের মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায়। কিন্তু তারপরও কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়কে নিয়ে প্রকাশ্যে বিক্ষোভ চলছে। তৃণমূলের পক্ষ থেকে গোটা ব্যাপারটাকে যতই ‘চ্যাপ্টার ক্লোজড’ বলে দাবি করা হোক না কেন, বাস্তবে যে তা আদৌ নয়, তা বারবার প্রমাণিত হচ্ছে।