গানের গলা সরু হওয়ায় বহু ডিরেক্টর, প্রডিউসার ফিরিয়ে দিয়েছিলেন লতা মঙ্গেশকরকে!
Connect with us

আন্তর্জাতিক

গানের গলা সরু হওয়ায় বহু ডিরেক্টর, প্রডিউসার ফিরিয়ে দিয়েছিলেন লতা মঙ্গেশকরকে!

Published

on

Rate this post

বেঙ্গল এক্সপ্রেস নিউজ: ১৯২৯ সালের ২৮ সেপ্টেম্বর ইন্দোর শহরে জন্মগ্রহণ করেন লতা মঙ্গেশকর। তাঁর বাবার নাম ছিল দীনানাথ মঙ্গেশকর এবং মায়ের নাম ছিল শ্রেবন্তী মঙ্গেশকর। বাবা দীননাথ মঙ্গেশকর ছিলেন একজন সঙ্গীত শিল্পী এবং তাঁর একটি নাটকের দল ছিল।

বাবার কাছেই শাস্ত্রীয় সংগীত শেখেন লতা মঙ্গেশকর। ১৯৪২ সালের এপ্রিল মাসে বাবার মৃত্যু হওয়ায় পরিবারে আর্থিক সংকট নেমে আসে। মাত্র ১৩ বছর বয়সে পরিবারের দায়িত্ব নিজের কাঁধে তুলে নেন লতা। মাস্টার বিনায়কের সুপারিশে বিভিন্ন মারাঠি সিনেমায় অভিনয় করার সুযোগ পান। মাস্টার বিনায়ক বেশ কয়েকটি মারাঠি সিনেমায় তাঁকে দিয়ে গান করান। মাস্টার বিনায়ক বুঝতে পেরেছিলেন লতা মঙ্গেশকর অভিনয় করলেও তাঁর মধ্যে সঙ্গিত শিল্পী হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। সেই সময় সমস্ত অভিনেত্রীর গলার আওয়াজ মোটা হওয়ার জন্য অনেক ডিরেক্টর, প্রডিউসার লতা মঙ্গেশকরকে দিয়ে গান করাতে অস্বীকার করেন। কারণ লতা মঙ্গেশকরের গলার আওয়াজ খুব পাতলা। এরপর বিখ্যাত মিউজিক ডিরেক্টর মহম্মদ সফির সুপারিশে গান করেন “আয়েগা আনেবালা।” এই গান সুপারহিট হওয়ার জন্য আর পিছনে ফিরে তাকাতে হয়নি লতাকে। তার পর থেকে বিখ্যাত অভিনেত্রীদের গলার আওয়াজ হয়ে ওঠেন লতা মঙ্গেশকর।

১৯৫০ সাল থেকে ২০০০ সাল পর্যন্ত অধিকাংশ মহিলা অভিনেত্রীর ঠোঁটে গান গেয়েছেন লতা মঙ্গেশকর। প্রায় সমস্ত মিউজিক ডিরেক্টরের সঙ্গে কাজ করেছেন লতা মঙ্গেশকর। একদিনে পাঁচ-ছয়টি গান রেকর্ড করেছেন সেই সময় থেকে। ১৯৭৪ সালে একবছরে সবচেয়ে বেশি গান গাওয়ার জন্য গিনেস বুক অফ ওয়ার্ল্ড রেকর্ডে নাম ওঠে লতা মঙ্গেশকরের। তিনি তাঁর গানের জন্য দেশে-বিদেশে বহু পুরস্কারে পুরস্কিত হয়েছেন। তিনবার জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার পান লতা মঙ্গেশকর। বাংলা, হিন্দির পাশাপাশি দেশের প্রায় ৩৬টি ভাষায় গান গেয়েছেন লতা মঙ্গেশকর। এছাড়া অনেক বিদেশী ভাষাতেও গান গেয়েছেন তিনি। তিনি প্রায় ৫০ হাজারের বেশি গান গেয়েছেন। লতা মঙ্গেশকরের গাওয়া অনেক গান মানুষের মধ্যে শিহরণ জাগিয়ে তোলে। লতা মঙ্গেশকরের গাওয়া ‘অ্যায় মেরে ওয়াতন কি লোগো, জারা আঁখমে ভারলো পানি, জো শহীদ হুয়ে হে উনকি জারা ইয়াদ করো কুরবানী’ এই গান আজও দেশের মানুষের মধ্যে দেশাত্মবোধ জাগিয়ে তোলে।

Advertisement

১৯৬৩ সালে একটি অনুষ্ঠানে লতা মঙ্গেশকর এই গানটা যখন গেয়েছিলেন সেই সময় ওই মঞ্চে উপস্থিত তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী জওহরলাল নেহরুর চোখে জল এসে গিয়েছিল। তিনি দেশকে খুব ভালো বাসতেন। ব্যক্তিগত জীবনে বিয়ে করেননি, তাইতো তিনি সবসময়ের জন্য দেশের মেয়ে হয়ে থাকবেন। লতা মঙ্গেশকর জীবনে বহু পুরস্কারে পুরস্কিত হয়েছেন। ন্যাশনাল অ্যাওয়ার্ড, ফ্লিম ফেয়ার অ্যাওয়ার্ড, বেস্ট ফিমেল প্লে ব্যাক সিঙ্গার, ফ্লিম ফেয়ার স্পেসাল অ্যাওয়ার্ড, ফ্লিম ফেয়ার লাইফটাইম অ্যাচিভমেন্ট অ্যাওয়ার্ড পেয়েছেন। ১৯৬৯ সালে ভারত সরকার পদ্মভূষণ সম্মানে সম্মানিত করে। ১৯৮৯ সালে দাদাসাহেব ফালকে পুরস্কার পান। ১৯৯৭ সালে মহারাষ্ট্র ভূষণ পুরস্কার পান। ১৯৯৯ সালে পদ্মবিভূষণ পুরস্কার পান। এরপর ভারত সরকার দেশের সর্বোচ্চ সম্মান ভারতরত্ন সম্মানে সম্মানিত করে। তাঁর গানের জন্য মানুষ তাঁকে বলে সঙ্গীতের সরস্বতী। বেশ কিছুদিন অসুস্থ থাকার পর আজ প্রয়াত হন লতা মঙ্গেশকর।

Ads Blocker Image Powered by Code Help Pro

Ads Blocker Detected!!!

We have detected that you are using extensions to block ads. Please support us by disabling these ads blocker.