বাংলার খবর
দীর্ঘদিন ধরেই বন্ধ রায়গঞ্জের কুলিক ডেয়ারি, দ্রুত খোলার আশ্বাস বিধায়ক কৃষ্ণ কল্যাণীর
বেঙ্গল এক্সপ্রেস নিউজ: চারিদিকে আগাছা ও জঙ্গলে ভর্তি। মূল ফটকে ঝুলছে তালা। আচমকা দেখে কোনও পরিত্যক্ত বাংলো বলে মনে হলেও আদতে এটি বন্ধ হয়ে যাওয়া এক সরকারি প্রতিষ্ঠান। উত্তর দিনাজপুরের রায়গঞ্জ ব্লকের কমলাবাড়ি গ্রাম পঞ্চায়েতের অধীন কর্নজোড়ায় রাজ্য সড়কের ধারে অবস্থিত কুলিক দুগ্ধ প্রকল্প। প্রায় বছর খানেক হল এই প্রকল্পে ভাটা পরেছে। বর্তমানে একেবারেই বন্ধ হয়ে রয়েছে এটি। জানা গিয়েছে, একসময় এখানে স্থায়ী, অস্থায়ী মিলিয়ে প্রায় ৪০ জন কর্মী কাজ করতেন। এছাড়াও ২ দিনাজপুর জেলা থেকে প্রচুর পরিমানে দুধ আমদানি হত। যার সঙ্গে যুক্ত ছিলেন প্রায় ৪০ জন গোয়ালা এবং বেশ কিছু ডিসট্রিবিউটার।
এই কুলিক ডেয়ারিতেই বাইরে থেকে আাসা দুধকে প্রক্রিয়াকরণের পর প্যাকেটজাত করা হত। দুধের পাশাপাশি ঘি, পনীর-সহ অন্যান্য দুগ্ধজাত সামগ্রীকে বাজারজাত করা হত সরকারিভাবে। কিন্তু, আচমকাই এক বছর আগে প্রকল্পটি বন্ধ হয়ে যাওয়ায় তীব্র সংকটে পড়েছেন এই প্রকল্পের সঙ্গে যুক্ত মানুষরা। হারিয়েছেন কর্মসংস্থান। ফলে বিভিন্ন পেশার সঙ্গে যুক্ত হয়ে কোনও রকমে সংসার চালাচ্ছেন তাঁরা।
এই প্রকল্পের প্রাক্তন এক অস্থায়ী কর্মী সুশীল কুমার দাস জানিয়েছেন, ‘প্রকল্পটি বন্ধ হয়ে যাওয়ায় চরম দুরাবস্থায় দিন কাটছে। ছোটোখাটো একটি খাবারে দোকান করে কোনও রকমে চলছে এখন।’ এই পরিস্থিতিতে প্রকল্পটি পুণরায় চালু করার দাবি জানিয়েছেন তিনি। সমস্যার কথা স্বীকার করেছেন কমলাবাড়ি গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান প্রশান্ত দাস। এ বিষয়ে প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়েও কোনও সুরাহা হয়নি বলেই অভিযোগ করেছেন তিনি।
বিষয়টি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন রায়গঞ্জের বিধায়ক কৃষ্ণ কল্যাণী। রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী যখন রায়গঞ্জে প্রশাসনিক বৈঠক করতে এসেছিলেন, সে সময় পিপিপি মডেলে এই প্রকল্পটিকে পুণরায় চালু করার প্রস্তাব দিয়েছিলেন বিধায়ক। মুখ্যমন্ত্রীর উদ্যোগে প্রকল্পটিকে পুণরায় চালু করার আশ্বাস দিয়েছেন তিনি। রায়গঞ্জের বিধায়ক কৃষ্ণ কল্যাণী বলেছেন, ‘মুখ্যমন্ত্রী যখন প্রশাসনিক বৈঠক করতে এখানে এসেছিলেন, তখন আমি এই প্রসঙ্গটা তুলেছিলাম। দীর্ঘদিন ধরেই কুলিক ডেয়ারি বন্ধ হয়ে রয়েছে। রুগ্ন অবস্থায় রয়েছে। আর্থিক দুর্নীতির কারণে এই কুলিক ডেয়ারি বন্ধ হয়ে গিয়েছে। সেই কারণে আমি মুখ্যমন্ত্রীকে প্রস্তাব দিয়েছিলাম যদি পিপিপি মডেলে চালু করা হয়, তাহলে এখানে বিনিয়োগ করার জন্য আমাদের হাতে আগ্ৰহী বিনিয়োগকারী রয়েছেন। তাহলে আমরা এই কুলিক ডেয়ারিকে আবার চালু করতে পারব। মুখ্যমন্ত্রী প্রিন্সিপ্যাল সেক্রেটারিকে ব্যবস্থা নিতে বলেছিলেন। আমিও ব্যাপারটা জানিয়েছিলাম। তারপর ডিএমকে চিঠিও দিয়েছিলাম। গোটা বিষয়টাই প্রক্রিয়ার মধ্যে রয়েছে। হয়তো কিছুদিনের মধ্যেই এই কুলিক ডেয়ারি আবার চালু করার সিদ্ধান্ত রাজ্য সরকার নেবে। এই কুলিক ডেয়ারি বন্ধ হয়ে যাওয়াটা খুবই দুর্ভাগ্যজনক। যাতে পুণরায় এটি চালু হয়, তার চেষ্টা আমরা করছি। এখানে অনেক কর্মচারী ছিলেন। এই ডেয়ারি বন্ধ হয়ে যাওয়ায় তাঁরা বেকার হয়ে পড়েছেন। তাঁরা যাতে আবার সেখানে কাজে যোগ দিতে পারেন, সেই দিকটাও আমরা দেখছি। কথা হয়েছে। খুব শীঘ্রই আমি মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করে বিষয়টি তাঁকে জানাব।’