ভাওয়াইয়া টানে, দোতারার সুর, রাজনৈতিক প্রচারে অন্যতম হাতিয়ার হয়ে উঠতে চলেছে কোচবিহারের গান
Connect with us

বাংলার খবর

ভাওয়াইয়া টানে, দোতারার সুর, রাজনৈতিক প্রচারে অন্যতম হাতিয়ার হয়ে উঠতে চলেছে কোচবিহারের গান

Rate this post

বেঙ্গল এক্সপ্রেস নিউজ: সীমান্ত ঘেরা, প্রধানত কৃষিনির্ভর রাজার জেলা কোচবিহার। সভ্যতার এত বছর পরেও এখানকার গ্রাম বাংলার মানুষ সব থেকে বেশি পছন্দ করেন তাঁদের নিজেদের ভাষা। আর সেই ভাষায় গান গেয়েই চলেছেন ওঁরা। ভাটিয়ালি গান।

আরেকটু ভালো করে বললে কাঁঠাল কাঠের দোতলা টানে ভাওয়াইয়া গান। এই গান একদিকে যেমন মাটির ভাষা, মানুষের ভাষাকে তুলে ধরে, ঠিক তেমনই সম্প্রতি রাজনৈতিক প্রচারের ক্ষেত্রেও শক্তিশালী অস্ত্র হয়ে দাঁড়িয়েছে। ছোট ছোট জনসভা থেকে শুরু করে কর্মীসভা, এমনকি মুখ্যমন্ত্রীর জনসভাতেও ডাক পড়ে ওঁদের। সম্প্রতি ওঁরা কোচবিহার ছাড়িয়ে পৌঁছে গিয়েছেন রাজধানী কলকাতায়। ওঁরা কোচবিহার দিনহাটা মহকুমার গোবরাছাড়া নয়ারহাট অঞ্চলের তিতুমীরের দল। এই তিতুমীর বাঁশের কেল্লা বানাননি। তিনি বানিয়েছেন কোচবিহারের ভাষায় গান। আর এই গানই ছড়িয়ে পড়ছে রাজ্যের বিভিন্ন এলাকায়। ভালো নাম মীর আল্লামা কোবির। গ্রামের নাম পিকনিধারা। দোতারায় আইনুল হক, ঢোলকে আছেন মনেশ্বর বর্মন, খগেশ্বর, ওকুল। হারমোনিয়ামে শরিফুল হক। এছাড়াও রয়েছেন আরও এক-দু’জন। মোট ৭ জনের দল।

হঠাৎ করেই তাঁদের সঙ্গে দেখা হয়ে গেল তাঁদের মহড়া প্রাঙ্গণে। খোলা আকাশের নিচে বিরাট পুকুর, তার পাশেই রয়েছে বাঁশের মাচা। তার উপরেই বসে চলে মহড়া। তিতুমীর বাবু জানান, তাঁর ১৩ বছর বয়স থেকে রাজনৈতিক প্রচার গান করে আসছেন তিনি। সেই সঙ্গে সমাজের বেশকিছু কুপ্রথার বিরুদ্ধেও গান রয়েছে তাঁর। এখনও পর্যন্ত ১৩৮ টি গান লিখেছেন তিনি। ১৯৯৮ সালের পর থেকে তৃণমূল কংগ্রেসের হয়ে প্রচার করে চলেছেন। রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীকে মাতৃজ্ঞানে রাখেন তিনি। এত কিছুর মাঝেও কোথাও বঞ্চনার সুর প্রকাশ পেল তাঁর গলায়। তিনি বললেন, ‘ভাওয়াইয়া সঙ্গীত উত্তরবঙ্গে এখন প্রচারের সব থেকে বড় হাতিয়ার। অথচ শিল্পী হিসেবে মাসে মাত্র এক হাজার টাকা পাই।

Advertisement

না পাওয়ার থেকে হাজার টাকা পাওয়া ভালো। কিন্তু সেটা দিয়ে খুব বেশি এগোয় না। সংগতে যাঁরা আছেন, তাঁরাও কমবেশি ভাতা পান। এই ভাতার পরিমাণ যদি আরেকটু বারানো যেত শিল্পীদের কথা ভেবে, তাহলে খুব উপকার হত।‘ ‘মমতাময়ী’ মুখ্যমন্ত্রীর কাছে তাঁর একটাই আবেদন। সামনেই পঞ্চায়েত নির্বাচন এবং তারপর লোকসভা নির্বাচন। উভয় ক্ষেত্রেই গ্রামাঞ্চলে প্রচারের অন্যতম বড় হাতিয়ার হয়ে উঠবে এই ভাওয়াইয়া গান। এমনটাই দাবি তাঁদের। তাঁদের আশা, মানুষ খুব সহজেই এই ভাষার সঙ্গে নিজেকে একাত্ম করতে পারে। খুব সহজেই মিশে যেতে পারে। তাই এই গান এবং গানের মাধ্যমে প্রচার অন্যতম হাতিয়ার হবে নির্বাচনে।