মা এখানে অষ্টভূজা, মায়ের পায়ের নীচে নেই মহাদেব, জেনে নিন চঞ্চলা কালীপুজোর অজানা ইতিহাস
Connect with us

বাংলার খবর

মা এখানে অষ্টভূজা, মায়ের পায়ের নীচে নেই মহাদেব, জেনে নিন চঞ্চলা কালীপুজোর অজানা ইতিহাস

Rate this post

বেঙ্গল এক্সপ্রেস নিউজ: প্রতিবছরের মতো দক্ষিণ দিনাজপুর জেলার বালুরঘাট ব্লকের হোসেনপুর এলাকার চকবাকর গ্রামে শুরু হ চঞ্চলা মায়ের পুজো। এই পুজো উপলক্ষে বসেছে তিন দিনব্যাপী বিরাট মেলা। জানা যায় প্রায় ৩০০ বছর আগে এই এলাকা গভীর জঙ্গলে পরিপূর্ণ ছিল। সেই সময় এলাকার বাসিন্দা কেরানু বর্মণ নামে এক ব্যক্তি প্রথম মায়ের দর্শন পান। এবং মায়ের পুজো শুরু করেন।

কালক্রমে সেই পুজো জনসাধারণের পুজোয় পরিণত হয়েছে। মা এখানে অষ্টভূজা, মায়ের পায়ের নীচে নেই মহাদেব। মা এখানে ছিন্ন মস্তক অসুরের পিঠে এবং নিজের পিঠে অধিষ্ঠান করেন। এখানে প্রতি বছর দোল পূর্ণিমার পরের দিন মায়ের পুজো অনুষ্ঠিত হয়। মা এখানে শাক্ত মতে পূজিত হন বলেএখানে বলি প্রথা ও রয়েছে। প্রতিবছর শতাধিক পাঠা বলি হয় এই মায়ের কাছে। গত দু’বছর করোনার সংকটের কারণেএই পুজো কিছুটা ম্লান হলেও করোনার পরিস্থিতি কিছুটা উন্নতি হতেই ফের দলে দলে সাধারণ মানুষ  মায়ের দর্শন পেতে ছুটে আসছেন দূরদুরান্ত থেকে।পুজো উপলক্ষে মেলা চলে তিনদিনব্যাপী।

বালুরঘাট শহরের অদূরে ডাঙ্গা গ্রাম পঞ্চায়েতের হোসেনপুরের কাছে চকবাখর গ্রাম। প্রতি বছর এখানে দোলপূর্ণিমার পরের দিন অর্থাৎ প্রতিপদের গভীর রাতে চঞ্চলা কালীর পুজো হয়। চিরাচরিত কালী মায়ের পায়ের নীচে শিবের দেখা মিললেও এই কালী মায়ের পায়ের নিচে অসুর রয়েছে। পাশাপাশি, অন্য পায়ের নিচে আছে সিংহ। বলা হয়, মহামায়া ও চামুণ্ডার এক রূপ এই চঞ্চলা কালী। আজ থেকে আনুমানিক ৩০০ বছর আগে ওই এলাকায় চঞ্চলা কালীর পুজো শুরু হয়।

Advertisement

আরও পড়ুন: সম্প্রীতির নজির! পীরবাবার মাজারের চাদর মাথায় নিয়ে পথ পরিক্রমা করল গোটা গ্রাম

কথিত আছে, ওই মন্দির এলাকা থেকে কিছু অলৌকিক নিদর্শন খুঁজে পাওয়া গিয়েছিল। তখন ওই গ্রামেরই বাসিন্দা ক্যারালু বর্মন কালীপুজো করার সিদ্ধান্ত নেন। কিন্তু তাঁর সামর্থ্য না থাকায় তিনি স্বপ্নাদেশে তৎকালীন জমিদার সুধীর চৌধুরীর সাহায্য নেওয়ার নির্দেশ পান। প্রথমে মাটির মন্দির। তারপরে টিনের ও পরে পাকা মন্দির তৈরি হয়েছে। যদিও এখনও সেই মন্দির নির্মাণের কাজ চলছে। একজন পুরোহিত বার্ষিক পুজো করেন। প্রতি অমাবস্যা ও পূর্ণিমায় চঞ্চলার পুজো অন্য একজন পুরোহিত করেন। পুজো উপলক্ষে প্রায় ৩০০ জন ভক্ত পৈতা ধারণ করেন। চঞ্চলা কালীর মন্দিরের পাশেই রয়েছে শ্মশান কালী ও মাশান কালীর মন্দির। মা চঞ্চলার পুজোর পরের দিন এঁরা তন্ত্র মতে পূজিত হন। মন্দিরের সামনে রয়েছে নাটমন্দির যেখানে পুজোর পরে দুদিন রাতভর মঙ্গলচন্ডীর গান শোনানো হয়।

আরও পড়ুন: বাড়ি ফাঁকা পেয়ে নাবালিকাকে ধর্ষণের চেষ্টা, কাঠগড়ায় জেঠু

Advertisement

মন্দিরের সামনে রয়েছে একটি পুকুর। জনশ্রুতি রয়েছে, এই পুকুর থেকে একসময় পুজোর কাজের জন্য থালা-বাসন ভেসে উঠত। বর্তমানে এই পুকুরের জল দিয়ে মায়ের পুজো করা হয়। পুজোর পাঁচদিন আগে ঘট বসে মন্দিরে। এখানে পাঁঠা, পায়রা, চুল বলির প্রথা রয়েছে। বলির জন্য কাঠের কাতরা এই পুকুরেই বছরভর ডোবানো থাকে। পুজোর দিন বিকেলে তা তোলা হয়। পুজো উপলক্ষে তিন দিনের মেলা বসে। ভক্তদের লোকক্রীড়া এই পুজোর আকর্ষনের অন্যতম কেন্দ্রবিন্দু। একটি বড় কাঠের পাটাতনে পুঁতে রাখা পেরেক ও খর্গের উপর ভক্তরা শিব কালী সেজে নাচ করেন

Continue Reading
Advertisement