রাজনীতি
তৃণমূলে যোগ দিয়েই কৃষ্ণ কল্যাণী জানিয়ে দিলেন, ষড়যন্ত্রের অস্ত্র দিয়ে রাজনৈতিক লড়াই জেতা যায় না
নীপমঞ্জরী মুখোপাধ্যায় : রায়গঞ্জের প্রাক্তন বিজেপি বিধায়ক কৃষ্ণ কল্যাণী আজ বিজেপি ছেড়ে তৃণমূলে যোগদান করলেন। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের অনুমোদনে এবং পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের হাত ধরেই তিনি আজ তৃণমূল পরিবারের সদস্য হলেন।
রায়গঞ্জের এই বিশিষ্ট শিল্পপতি বিধায়ক ব্যাপকভাবে পরিচিত তাঁর জনসেবামূলক কাজের জন্য। করোনা মহামারীর দুঃসময়ে গরীব মানুষের মুখে প্রতিদিন খাদ্য তুলে দিয়ে তাদের মুখে হাসি ফুটিয়ে চলেছেন রায়গঞ্জের জনদরদী বিধায়ক তথা সবার প্রিয় ‘রিঙ্কু দা’। কেন তিনি তৃণমূলে যোগদান করলেন, সাংবাদিকদের এই প্রশ্নের উত্তরে কৃষ্ণ কল্যাণী বলেছেন, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের জনকল্যাণমূলক কাজ তথা রাজনৈতিক মতাদর্শ কোথাও না কোথাও তাঁর মতাদর্শের সাথে মিলে যাওয়ায় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সাথে রাজনৈতিক পথে অগ্রসর হতে তিনি আগ্রহী হয়েছেন।
বিজেপি সরকার সাধারণ মানুষের সমস্যা বোঝে না। কিন্তু মমতা বন্দোপাধ্যায়ের সরকারের সবুজসাথী, কন্যাশ্রী প্রকল্প, লক্ষ্মীর ভান্ডার, রূপশ্রীর মতো আরও সামাজিক প্রকল্পের দ্বারা সমাজের মানুষ খুবই উপকৃত হয়েছেন। এই সকল উন্নয়নমূলক কাজ দেখেই জনদরদী বিধায়ক কৃষ্ণ কল্যাণী মনে করছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের হাত ধরলে তিনি প্রকৃতভাবে জনগণের পাশে দাঁড়াতে পারবেন। কৃষ্ণ কল্যাণীর বক্তব্য, ছয় মাসের ভুল তিনি সারা জীবন নিয়ে চলতে চান না। তাই আজ শুধরে নিলেন নিজের ভুল।
তিনি আরও বলেছেন, বিজেপিতে ভালো কাজ করলে পেতে হয় তিরষ্কার। আর কাজ না করে পাওয়া যায় পুরস্কার। সাধারণ মানুষের নিত্য প্রয়োজনীয় সামগ্রীর উর্দ্ধমুখী দামবৃদ্ধি বুঝিয়ে দেয় বিজেপি সরকার সাধারণের সরকার নয়। এদিন তৃণমূলে যোগ দিয়েই রায়গঞ্জের বিজেপি সাংসদ দেবশ্রী চৌধুরী ও জেলা নেতৃত্বকেও তীব্র আক্রমণ করেছেন রায়গঞ্জের বিধায়ক। একুশের বিধানসভা নির্বাচনের পর থেকেই রায়গঞ্জের সাংসদ এবং জেলা বিজেপি নেতৃত্বের সঙ্গে বিরোধ ক্রমশ প্রকট হয়ে উঠছিল কৃষ্ণ কল্যাণীর। রায়গঞ্জের দলীয় সাংসদের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রের মারাত্মক অভিযোগ তুলেছিলেন কৃষ্ণ কল্যাণী।
একুশের নির্বাচনে দেবশ্রী চৌধুরী তাঁকে হারানোর ষড়যন্ত্র করেছিলেন বলেও বিস্ফোরক অভিযোগ করেছিলেন তিনি। এদিনও তৃণমূলে যোগ দিয়ে দেবশ্রী চৌধুরী এবং বিজেপিকে তীব্র ভাষায় আক্রমণ করে রায়গঞ্জের বিধায়ক বলেছেন, ‘বিজেপিতে ভালো কাজের মূল্যায়ন নেই, ভালো কাজের পরিবেশ নেই। আছে শুধু ষড়যন্ত্র। এই ষড়যন্ত্রের অস্ত্র দিয়ে রাজনৈতিক লড়াইয়ে জেতা যায় না। তার জন্য জনগণের উন্নয়ন, বিকাশের দরকার। মানুষকে পরিষেবা দেওয়া দরকার। আর সেটা মা-মাটি-মানুষের সরকারের নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় দিচ্ছেন।
অনেকদিন ধরেই আমার বিরুদ্ধে চক্রান্ত চলছিল। রায়গঞ্জে বিধানসভা নির্বাচনেও আমাকে হারানোর চক্রান্ত করা হয়েছিল। তা সত্ত্বেও আমি ভালো কাজ করে গিয়েছি, মানুষকে পরিষেবা দিয়েছি। বিজেপিতে থাকাকালীন আমি ৬ বড় যোগদান করিয়ে ছিলাম। তারপরও আমি গত মাসের ২৯ তারিখে শোকজের চিঠি পেয়েছি। আজ আমি ভালো কাজ করেও ষড়যন্ত্রের শিকার হয়ে শোকজ নোটিশ পেয়ে তিরস্কৃত হলাম। আর উনি কোনও কাজ না করে পুরস্কার পেলেন। গত তিন বছরে উনাকে উনার লোকসভা কেন্দ্রেও দেখা যায়নি।’