বাংলার খবর
মনের জোরকে সম্বল করে ট্রাইসাইকেল কামাক্ষ্যার পথে বসিরহাটের খোকন
বেঙ্গল এক্সপ্রেস নিউজ : ‘থাকব না কো বদ্ধ ঘরে, দেখব এবার জগৎটাকে, কেমন করে ঘুরছে মানুষ যুগান্তরের ঘূর্ণিপাকে। দেশ হতে দেশ দেশান্তরে ছুটছে তারা কেমন করে’- কাজী নজরুল ইসলামের এই কবিতাই যেন উদ্বুদ্ধ করেছে তাঁকে। অসম্ভব মনের জোর আর ঈশ্বরে ভক্তিকে সম্বল করে ট্রাইসাইকেলে কলকাতা থেকে গৌহাটি তীর্থ ভ্রমণে বেরিয়ে পড়েছেন বিশেষভাবে সক্ষম এক ব্যক্তি। নাম খোকন মাঝি (৪০)।
উত্তর ২৪ পরগনার বসিরহাটের সংগ্রামপুরে বাড়ি। দু’টো পা অবস। তাই ট্রাইসাইকেল নিয়ে চলাফেরা করেন। মনের জোরকে সম্বল করে দু’সপ্তাহ আগে তিনি দীর্ঘপথ ভ্রমণে বেরিয়েছেন। সঙ্গে কিছু শুখনো খাবার ও পানীয় জল। পথে কারও থেকে কোনও সাহায্য তিনি নেবেন না। নিজের ট্রাইসাইকেলটাকেই বানিয়ে ফেলেছেন বাড়ি। ট্রাইসাইকেলের চারপাশে মাটির টবের মধ্যে মানিপ্লান্ট, কৃষ্ণ তুলসী, রক্ত জবা, অ্যালোভেরা, লজ্জাবতী, নীলকন্ঠ, মনসা বিভিন্ন প্রজাতির গাছ রয়েছে। কখন জিজ্ঞাসা করলে খোকন জানিয়েছেন, রাস্তায় চলতে শরীর খারাপ হলে এই গাছগুলো জুরিবুটির কাজ করে। শুধু তাই নয়, গাছ লাগালে বিশ্ব বাঁচবে- এই বার্তা তুলে ধরতেই তিন চাকার যানে গাছ লাগিয়েছেন।
খোকন বলেছিলেন, ‘১৫ দিন আগে ট্রাইসাইকেল নিয়ে অসমের উদ্দেশ্যে বেরিয়েছি। পথে সমস্ত ধর্মীয় স্থান- মন্দির, মসজিদ, মাজার দর্শন করব। ঈশ্বর ও গাছকে ভালবাসার বার্তা নিয়ে আমার এই ভ্রমণ। প্রতিদিন ৩০–৪০ কিলোমিটার ট্রাইসাইকেল চালিয়ে যেখানে রাত হয় সেখানেই ঘুমিয়ে পড়ি। কোনও কষ্ট নেই। সেচ্ছায় কেউ দিলে খাই, নয়তো নিজের কাছে থাকা শুখনো খাবার খেয়েই দিন কাটে। অসমে গিয়ে কামরূপ কামাক্ষ্যা মন্দির দর্শন করাই উদ্দেশ্য।
সব ধর্মের মানুষের নিজ নিজ ঈশ্বরের প্রতি ভক্তি থাকা উচিত। ঈশ্বরকে জানতে হবে। ঈশ্বরের পথে চলতে হবে। কে কোথায় আছে তা দেখতে হবে। ১৫ দিন আগে বাবা-মায়ের অনুমতি নিয়ে বাড়ি ছেড়েছি। কামাক্ষ্যা দর্শন করে আবার বাড়ির পথে ফিরব। আমার গাড়িতে এই এত গাছ লাগানো আছে, এগুলো সবই জরিবুটির কাজ করে। গাছকে রক্ষা ও বৃক্ষরোপণ করা দরকার। ঈশ্বর ও গাছই মানুষকে বাঁচিয়ে রাখতে পারে।’