বাংলার খবর
চোখ নয়, অন্তরের দৃষ্টি দিয়েই মাহেশের রথের মেলা উপভোগ করল কচি-কাচার দল
বেঙ্গল এক্সপ্রেস নিউজ: মাহেশের ৬২৬ বছরের ঐতিহ্যবাহী জগন্নাথ দেবের রথযাত্রার মেলা। মেলায় অগুন্তি মানুষের ভিড় প্রতিদিনই। তারা মেলায় আসে, মেলা দেখে, আনন্দ করে। কিন্তু সোমবারের মেলা প্রাঙ্গণ ছিল একটু অন্যরকম। সেদিনও মেলায় আনন্দ করতে এসেছিল একদল কচি-কাচা। সাধারণ দিনের মেলা পরিদর্শনকারীদের থেকে এরা একটু আলাদা। এদের পুরো দেখাটাই নির্ভর করে অনুভূতির ওপর। হ্যাঁ ঠিকই ধরেছেন। উত্তরপাড়ার এক দৃষ্টিহীন স্কুলের ছাত্র ছাত্রীরাও চোখ নয় অন্তরের দৃষ্টি দিয়েই মাহেশের রথের মেলার আনন্দ উপভোগ করলো। মেলায় সমস্ত ছাত্র-ছাত্রীদের ঠাকুরের ভোগ খাওয়ানো হয়। প্রথমবার মেলায় এসে খুশি ছাত্র-ছাত্রীরা।
এই দৃষ্টিহীন ছাত্র-ছাত্রীদের মেলা পরিদর্শনের নেপথ্যে যিনি ছিলেন তিনি হলেন শ্রীদাম সাহা। শ্রীরামপুরের বাসিন্দা শ্রীদাম পেশায় একজন আই ব্যাঙ্কের কর্মচারী। কর্ম সূত্রেই দৃষ্টিহীন স্কুলের সঙ্গে তাঁর যোগাযোগ। স্কুলের প্রিন্সিপালের অনুরোধে তিনি এই ব্যাবস্থা করে ছিলেন। এই বিষয়ে তিনি জানান, ‘এদিকে যখন গোটা রাজ্য মেতে রয়েছে মাহেশের রথের আনন্দে। তখন অন্যদিকে অন্ধকারাচ্ছন্ন জীবন কাটাচ্ছে দৃষ্টিহীন এই ছোটো ছোটো ছেলে মেয়ে গুলো। পৃথিবীর সমস্ত সুখ তাদের এক হাতের দূরে থেকেও আজ তারা সেগুলো ছুঁতে ব্যর্থ। এই রকম দৃষ্টিহীন পড়ুয়াদের ক্ষণিকের সুখ দিতেই মেলায় নিয়ে এসেছি।’
দৃষ্টি না থাকলেও মনের সমস্ত অনুভূতি দিয়ে নিজেদের এক হাত দূরত্বে থাকা সুখকে ছুঁয়ে ফেলল তারাও। একটা গোটাদিন হাসি-মজা, খাওয়া–দাওয়া করে একটু অন্যরকম ভাবেই কাটলো। একরাশ অন্ধকারের মধ্যে দৃষ্টিহীন মুখ গুলোতে ক্ষণিকের জন্য আলো মেলে ধরতে পেরে মানসিক ভাবে শান্তি পাচ্ছেন বলেই জানালেন শ্রীদামবাবু।