বাংলার খবর
সাথীকে বিয়ে করতে চুল কেটে ছেলে সেজে ছিলেন ঝুম্পা!

বেঙ্গল এক্সপ্রেস নিউজ: গত মাসেই ধনিয়াখালীর দাদপুর সাটিথানের নাগবোল গ্রামের বাসিন্দা ঝুম্পা ঢালী ও বলাগড় গুপ্তিপাড়ার গোসাইডাঙার বাসিন্দা সাথী বাগ লুকিয়ে বিয়ে করেছিলেন। কয়েক বছর আগেই দু’জনের বিয়ে হয়েছিল। একজনের আবার একটি সন্তানও আছে। ১০ মাস আগে ফেসবুকে দু’জনের পরিচয় হয়। সেখান থেকে আলাপ তারপরে বন্ধুত্বে পরিবর্তিত হয়। তারপরই তাঁরা একসঙ্গে জীবন কাটানোর সিদ্ধান্ত নেন। তারপরই গত মাসে ব্যারাকপুরে পালিয়ে গিয়ে ঝুম্পা ও সাথী বিয়ে করেন। সেখানে থাকাকালীন সোশ্যাল মিডিয়াতে ছবি পোস্ট করতেন ওই দুই যুবতী। এই সম্পর্কের কথা লুকাতে ঝুম্পা কেটে ফেলেছিলেন তাঁর চুল। নারীত্ব ঢাকতে সেজেছিলেন পুরুষ। তবুও শেষ রক্ষা হয়নি। গত বৃহস্পতিবারই দু’জনের সমকামী সম্পর্কের কথা জানতে পারে তাঁদের পরিবার। স্বাভাবিকভাবেই এই বিয়েতে বেঁকে বসেছে দুই পরিবারই।
এই ঘটনায় হুগলির পোলবায় রীতিমতো হইচই পড়ে গিয়েছে। তাঁদের সম্পর্ক নিয়ে রাজ্যে তোলপাড় পড়ে গিয়েছে। দেশে সমকামী প্রেম আইনত স্বীকৃত হলেও এই ঘটনার জন্য রীতিমত ঝড় বয়ে গিয়েছে ঝুম্পা ও সাথীর উপর দিয়ে। সাথী বলছিলেন, ‘আমার বাড়িতে যখন প্রথম জানতে পারে আমি সমকামী, তখন আমার বিয়ে দিয়ে দিয়েছিল। আমার পরিবারের ধারণা ছিল বিয়ের পর আমি নাকি ঠিক হয়ে যাব। কিন্তু, আমি ঠিক হইনি। আমি এখনও ঝুম্পাকেই ভালোবাসি। আমাদের ভাবনাটা পরিবারের মানুষরা একটু বুঝছে। ঝুম্পা আমার বাড়িতে এক সপ্তাহ ছিল। একসঙ্গে থাকব বলে আমি আর ঝুম্পা পালিয়ে গিয়েছিলাম। ব্যারাকপুরে আমার এক বন্ধু বলেছিল ঝুম্পা যদি চুল কেটে নিজেকে ছেলের পরিচয় দেয় তাহলে ওকে চাকরি দেবে। ওই আমাদের বিয়ে দিয়েছিল। কিন্তু, ঝুম্পা চুল কাটার পরও আমার ওই বন্ধু ওর কোনও চাকরির ব্যবস্থা করে দেয়নি। উল্টে আমাদের তাড়িয়ে দেয়। ঝুম্পার পরিবার আমাদের এই সম্পর্ক মেনে নিতে রাজি নয়। আগামী সোমবার আমাদের দেখা করাতে রাজি হয়েছে বাড়ির লোকেরা। দেখি কী হয়।’
সাথীকে শাঁখা-সিঁদুর পরিয়েই রীতিমতো শাস্ত্রমতেই বিয়ে করেছিলেন ঝুম্পা। কিন্তু পরিবার সাথীর সিথির সিঁদুর মুছে দিয়েছে। দুই পরিবারই তাঁদের আলাদা করে নিজেদের বাড়িতে নিয়ে গিয়েছে। সাথীর বক্তব্য, সোমবার দুই পরিবার বসে মিটমাট করতে পারে। ঝুম্পাও জানিয়েছেন যে তিনি সাথীর সঙ্গেই থাকতে চান। কিন্তু তাঁদের পরিবার তা মেনে নিচ্ছে না। ঝুম্পার মা বলেছেন, ‘আমার মেয়ের সঙ্গে সাথীর অনেক দিনের বন্ধুত্ব ছিল। বাড়িতে প্রায়ই আসা-যাওয়া করত। আমাকে বলল সে একটা কাজ পেয়েছে তাই ঝুম্পাকে নিয়ে যাচ্ছে। তারপরে মেয়ের কোনও খবর পাইনি। পরে মোবাইলে দেখলাম দু’জনে বিয়ে করেছে। এই ঘটনায় লজ্জায় আমাদের মাথা কাটা যাচ্ছে। তাই মেয়েকে এখন বাড়িতেই থাকতে বলেছি। সাথীর সঙ্গে আমরা মেয়ের আর কোনও সম্পর্ক রাখতে দিতে চাই না।’