দেশের খবর
পুরীর জগন্নাথ দেবের মহাপ্রসাদ খাজা, জানেন কি তার ইতিহাস ?
পুরী ধামের জগন্নাথ দেবের দর্শন আমাদের মধ্যে কমবেশি সকলেই করেছে কিন্তু এই জগন্নাথ দর্শন কিন্তু সম্পুর্ণ হয় না শুকনো খাস্তা মিষ্টি ‘খাজা ‘ ছারা

ডিজিটাল ডেস্ক: পুরী ধামের জগন্নাথ দেবের দর্শন আমাদের মধ্যে কমবেশি সকলেই করেছে কিন্তু এই জগন্নাথ দর্শন কিন্তু সম্পুর্ণ হয় না শুকনো খাস্তা মিষ্টি ‘খাজা ‘ ছারা । উড়িষ্যা বাসির কাছে এই খাজা হলো ঐশ্বরিক প্রসাদ । পুরীর এই জগন্নাথ মন্দির বিভিন্ন রহস্যে মোরা, এবং মন্দিরের রহস্যময় রান্নাঘর বিশ্বের বৃহত্তম রান্নাঘর হিসেবে বিবেচিত। এই রান্না ঘরেই প্রতিদিন কাঠের আগুনে মাটির পাত্রে ৫৬ রকমের ভোগ তৈরি করে জগন্নাথ দেবকে প্রসাদ হিসেবে দেওয়া হয় এবং এই ৫৬ রকম প্রসাদের মধ্যে খাজা জগন্নাথ দেবের (Jagannath) অন্যতম প্রিয় খাবার বলে বলে জানা যায়। পুরীতে এই খাজা ‘ ফেনী’ নামেও পরিচিত।
এই পুরী ধামে প্রতি পিস খাজা ৩ টাকা থেকে ১০ টাকা হিসেবে খোলা বিক্রি হয় যা খাজার আকার ও মানের ওপর নির্ভর করে এবং প্রতি কেজি তে ৭৫ থেকে ৮০ টাকা হিসেবে বিক্রি হয়। খাজা বাইরে থেকে শুকনো এবং ভেতর থেকে রসালো হয় এবং অনেক দিন সংরক্ষণ করে রাখার মতো করে তৈরি করা হয়। ময়দাকে ঘি ও চিনির সংযোগে সুন্দর করে মেখে স্তর যুক্ত কুচকানো আকার দেয়া হয় এবং গরম ঘি বা তেলে সোনালী করে ভেজে চিনির রসে ডোবানো হয়।
চলুন জেনে নেওয়া যাক এই খাজার জন্ম কি এই পুরীতেই ?
জানা যায় খাজা অযোধ্যা ও অগ্রার পূর্বাঞ্চল থেকে উৎপন্ন হয়েছিল যা উত্তর প্রদেশ ও বিহারের কিছু অংশের মধ্যে পরে। বলা হয় মৌর্য শাসনকালে ‘ সিলাও’ নামে একটি ছোট গ্রামে উদ্ভূত হয়েছিল এই খাজা, যা বর্তমানে বিহারের প্রাচীন শহর মিথিলা ও নালন্দার মধ্যে অবস্থিত । চিনা পরিব্রাজক হিউ এন সাং সিলাও তে এসে এই খাজার মুখোমুখি হন এবং তরপর থেকে প্রাচ্যের শহরগুলিতেও এর জনপ্রিয়তা অনেক বৃদ্ধি পায়। জানা যায় গৌতম বুদ্ধ রাজগীর থেকে ফেরার সময় সিলাওর কাছে এসে থামেন এবং সেখানকার স্থানীয় লোকেরা তাকে মিষ্টি হিসেবে খাজা উপহার দিয়েছিলেন। এতে মুগ্ধ হয়ে তিনি তার শিষ্যদেরও এদের স্বাদ নিতে বলেন এবং এই মিষ্টির প্রচারে আরো উৎসাহিত করে তোলেন।
আরও পড়ুন – বিশ্বের সবচেয়ে দামি আম কোনটি জানেন? এক কিলো আম ৩.৫ লক্ষ টাকা! জানুন বিস্তারিত
যখন খাজা উড়িষ্যায় আসে এবং ১২ শতক থেকে জগন্নাথ দেবের ৫৬ ভোগের অবিচ্ছেদ্য অংশ হয়ে ওঠে তখন থেকে এই খাজার মধ্যে বেশ কিছু পরিবর্তন হয়েছে। ওড়িশার রাধুনী রাই এই খাজার প্রস্তুতিতে ময়দার ব্যবহার শুরু করেছে। এখন নিরাপদে বলা যেতে পারে পুরীর খাজা ভারতের খাদ্য ইতিহাসের এক অবিচ্ছেদ্য অংশ।