বাংলার খবর
বাড়ছে সংক্রমণ! ৩ তারিখের স্টুডেন্টস উইকের অনুষ্ঠান ও দুয়ারে সরকার কর্মসূচি স্থগিত

বেঙ্গল এক্সপ্রেস নিউজ : গোটা দেশের সঙ্গে রাজ্যেও প্রতিদিন করোনা আক্রান্তের সংখ্যা লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে। শুক্রবার রাজ্যে আক্রান্ত হয়েছেন তিন হাজারেরও বেশি মানুষ। করোনার সঙ্গে বাড়ছে ওমিক্রন আতঙ্কও। শনিবার রাজ্যে নতুন করে আরও চারজন করোনার নতুন প্রজাতিতে আক্রান্ত হয়েছেন। ইতিমধ্যেই রাজ্যে ওমিক্রনে আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে কুড়ি।
তার মধ্যে তিনজন সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরে গিয়েছেন। এই উদ্বেগজনক পরিস্থিতির কথা মাথায় রেখেই আবারও রাজ্যে আংশিক লকডাউনের সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে। ১ জানুয়ারি থেকে ৭ জানুয়ারি পর্যন্ত ‘স্টুডেন্টস উইক’ পালনের ঘোষণা করেছে রাজ্যে সরকার। সেই উপলক্ষে আগামী ৩ তারিখ নেতাজি ইন্ডোর স্টেডিয়ামে একটি অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছিল রাজ্য সরকার। সেই অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকার কথা ছিল মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের। কিন্তু রাজ্যের এই উদ্বেগজনক করোনা পরিস্থিতির জন্য ৩ তারিখের সেই অনুষ্ঠান স্থগিত রাখার কথা ঘোষণা করেছে নবান্ন। শুধু তাই নয়, রবিবার থেকে শুরু হতে চলা ‘দুয়ারে সরকার’ প্রকল্পও স্থগিত করা হয়েছে। রাজ্যজুড়ে দুয়ারে সরকার প্রকল্পের জন্য ৮০ হাজার ক্যাম্প হওয়ার কথা ছিল।
কিন্তু করোনার কারণে সেই কর্মসূচিও আপাতত স্থগিত করা হচ্ছে বলে নবান্নের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে। প্রসঙ্গত গত বৃহস্পতিবার গঙ্গাসাগর থেকে কলকাতায় ফেরার আগেই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় রাজ্যের ক্রমবর্ধমান করোনা পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে ইঙ্গিত দিয়েছিলেন যে, আগামী ৩ জানুয়ারি থেকে রাজ্যে আবারও করোনার কিছু কিছু বিধিনিষেধ জারি করা হবে। প্রয়োজনে হলে আবারও বন্ধ করা হবে স্কুল-কলেজ, রেস্তোরাঁ, সিনেমা হল ও পার্ক। লোকাল ট্রেনের সংখ্যাও প্রয়োজনে কমানোর ইঙ্গিত দিয়েছিলেন তিনি। ইতিমধ্যেই পাঁচের অধিক ব্যক্তি যে সমস্ত এলাকায় করোনা আক্রান্ত হয়েছেন সেই সমস্ত এলাকাগুলোকে মাইক্রো কনটেইনমেন্ট জোন হিসেবে দ্রুত ঘোষণা করার কথা জানিয়েছেন মেয়র ফিরহাদ হাকিম।
ব্রিটেন থেকে আগত বিমানের কলকাতায় অবতরণের ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করে ইতিমধ্যেই কেন্দ্রীয় সরকারকে চিঠি দিয়েছে রাজ্য সরকার। রাজ্যের করোনা পরিস্থিতি নিয়ে যথেষ্ট উদ্বিগ্ন নবান্ন। শনিবার এই সমস্ত বিষয়ে রাজ্যের মুখ্যসচিব হরিকৃষ্ণ দ্বিবেদীর সঙ্গে আলোচনা করেন মুখ্যমন্ত্রী। তার পরেই সিদ্ধান্ত হয়, দুয়ারে সরকার এবং ছাত্র সপ্তাহের অনুষ্ঠান আপাতত স্থগিত রাখা হবে। গোটা পরিস্থিতির ওপর নজর রাখছে সরকার ও প্রশাসন। তবে এখনই আংশিক লকডাউন, ট্রেন, বাস, মেট্রো পরিষেবা ও সমস্ত মেলা বন্ধ বা স্কুল-কলেজ বন্ধ রাখার পথে হাঁটছে না সরকার। পরিস্থিতি পর্যালোচনা করেই ধাপে ধাপে বিধি নিষেধ জারির কথাই ভাব হচ্ছে। ইতিমধ্যেই কলকাতা পুরসভার ৪ নম্বর বোরোর চেয়ারম্যান সাধনা বসু সহ একাধিক কাউন্সিলর কোভিড আক্রান্ত হয়েছেন।
করোনা আক্রান্ত হয়েছেন বিধায়ক তাপস রায়। শনিবারই রাজ্যের বিদ্যুৎমন্ত্রী অরূপ বিশ্বাস করোনা আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। রাজ্যের একের পর এক চিকিৎসক করোনায় আক্রান্ত হচ্ছেন। তবুও শনিবার বছরের প্রথম দিনে ইকোপার্ক, চিড়িয়াখানায় জনতার ঢল নেমেছিল। অনেকের মুখেই নেই মাস্ক! মাস্ক না পরায় শনিবার চিড়িয়াখানায় পুলিশ বহু মানুষকে আটক করে এবং চিড়িয়াখানা থেকে বার করে দেয়। প্রশাসনের পক্ষ থেকে শহরের সমস্ত রাস্তায় চলছে মাইকিং। কিন্তু সিংহভাগ মানুষের মধ্যেই কোনও সচেতনতা না থাকায় সোমবার থেকেই হয়তো আবারও বিধিনিষেধের কড়াকড়ির মধ্যে পড়তে হবে রাজ্যবাসীকে।