বাংলার খবর
আজও বহু ইতিহাসের সাক্ষী করনদিঘীর নীলকুঠি ! সংরক্ষণের দাবি স্থানীয় বাসিন্দাদের

বেঙ্গল এক্সপ্রেস নিউজ : ভারত তথা বাংলার নীলচাষ ছিল অতি প্রাচীন কৃষিকাজ। সুলতানী ও মুঘল যুগেও হত নীলচাষ। অষ্টাদশ শতকে ইংল্যান্ডে বস্ত্র শিল্পের ব্যাপক উন্নতি ঘটে। ইংল্যান্ডে প্রচন্ডভাবে নীলের চাহিদা দেখা দেওয়ায় তৎকালীন ব্রিটিশ সরকার বাংলায় চাষীদের দিয়ে নীলচাষ করিয়ে প্রচুর মুনাফা লুটত নীলকর সাহেবরা।
রাজ্যের বিভিন্ন জায়গায় স্থাপন করা হয় নীলকুঠী। এমনই এক নীলকুঠী ছিল উত্তর দিনাজপুর জেলার করনদিঘীর বেলবাড়ি গ্রামে। সেই নীলকুঠীর ধ্বংসাবশেষ যা আজও বহু ইতিহাসের সাক্ষ্য বহন করে চলেছে। জেলার ইতিহাসবিদ থেকে গবেষকেরা দাবি তুলেছেন করনদিঘীর এই নীলকুঠীর ইতিহাস তুলে ধরার এবং তা সংরক্ষণ করার। করনদিঘীর নাগর নদীর দুই তীরের জমিতে একসময় প্রচুর নীলচাষ হতো। নীলচাষের জন্যই করনদিঘীর বেলবাড়ি গ্রামে তৈরি করা হয়েছিল নীলকুঠী। কোনও কোনও জমিতে কৃষকদের বছরে দু’বার করে নীল চাষ করতে বাধ্য করতো অত্যাচারী নীলকর সাহেবরা। কেউ নীলচাষ করতে রাজি না হলে নীলকুঠীর ঘরে আটকে চরম অত্যাচার করতো।
এই কুঠীতে বড় বড় কক্ষ ছিল, ছিল লম্বা বারান্দা। নীলগাছ জলে পচানোর জন্য ছিল সার সার চৌবাচ্চা, আর নীল শুকানোর জন্য বিশালাকারের বেশ কয়েকটি উনুন। আজও তার ধ্বংসাবশেষ রয়েছে। আজ গোটা নীলকুঠী এলাকা কৃষিজমি। কোনও কোনও কৃষক তাঁদের জমিতে চাষ করতে গিয়ে এক একটি নীলের গুটি উদ্ধার করেন। সেই নীল দিয়ে তাদের বাড়ির কাপড়ও ধোওয়া হয়। স্থানীয় বাসিন্দারা বলেন এমনই উন্নতমানের নীল ছিল করনদিঘীর বেলবাড়ি গ্রামে। জেলার ইতিহাসবিদ থেকে শুরু করে গবেষকেরা দাবি তুলেছেন করনদিঘীর নীলকুঠীর ধ্বংসাবশেষ সংস্কার করে ঐতিহাসিক নিদর্শন হিসেবে তার স্বীকৃতিদানে যথাযথ পদক্ষেপ গ্রহণের। সরকার এই পদক্ষেপ গ্রহণ করলে উত্তর দিনাজপুর জেলার এই নীলকুঠী অন্যতম দর্শনীয় পর্যটন কেন্দ্রে পরিণত হবে।