খেলা-ধূলা
ধোনির শহরে সিরিজ জয় ভারতের, আজই কলকাতায় আসছে রোহিতরা

বেঙ্গল এক্সপ্রেস নিউজ: ২০১৯ ওয়ানডে বিশ্বকাপ থেকে বিদায়, ওয়ার্ল্ড টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনালে হার এবং সদ্য সমাপ্ত টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে হার। নিউজিল্যান্ডের কাছে এই তিন হারের বদলা অবশেষে দেশের মাটিতে ধোনির শহরেই নিল ইন ইন্ডিয়া।
শুক্রবার রাতে টি-টোয়েন্টি সিরিজের দ্বিতীয় ম্যাচে নিউজিল্যান্ডকে ৭ উইকেটে হারিয়ে সিরিজ জিতে নিল ভারত। সেইসঙ্গে অধিনায়ক এবং কোচ হিসেবেও প্রথম সিরিজ জয় রোহিত এবং রাহুল দ্রাবিড়ের। প্রায় দুই বছর পর কলকাতার ইডেন গার্ডেন্সে অনুষ্ঠিত হতে চলা আন্তর্জাতিক ম্যাচম্যাচও নিয়মরক্ষার হয়ে গেল। রবিবার ইডেনে সিরিজের শেষ তথা তৃতীয় ম্যাচে কিউয়িদের বিরুদ্ধে ব্যবধান বাড়ানোই একমাত্র লক্ষ্য থাকবে রোহিতদের। শুক্রবার টসে জিতে প্রথমে ফিল্ডিং করার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন রোহিত। ঠিক যেন জয়পুরের রিপ্লে রাঁচিতে। প্রথমে বল করে দেড়শো রানের কাছাকাছি নিউজিল্যান্ডকে আটকে দিয়ে ব্যাট হাতে দাপট দেখালেন রোহিত শর্মা, লোকেশ রাহুলরা। মাঠে শিশির পড়ায় বাকি কাজটা আরও সহজ হয়ে গেল ভারতীয় ব্যাটারদের জন্য। তবে শুরুটা অবশ্য দুরন্ত করেছিলেন নিউজিল্যান্ডের দুই ওপেনার মার্টিন গাপ্তিল ও ড্যারেল মিচেল। ভুবনেশ্বর কুমারের প্রথম ওভারেই ১৪ রান করে আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে বিরাট কোহলিকে টপকে সর্বোচ্চ রানের অধিকারী হলেন গাপ্তিল। ওপেনিং জুটিতে ৪৮ রান তোলার পরই গাপ্তিলকে (৩১) ফিরিয়ে দেন দীপক চাহার। মিচেলও করেন ৩১ রান। ১০ ওভারেই ৯০ রান করে বড় রানের পথেই এগোচ্ছিল কিউইরা।
কিন্তু ভারতীয় পেস এবং স্পিন অ্যাটাকের কাছে হার মানতে বাধ্য হয় কিউয়ি মিডল অর্ডার। গ্লেন ফিলিপস অবশ্য খানিকটা দলকে টেনে তোলার চেষ্টা করেছিলেন। তবে মূল্যবান সময়ে হর্ষল প্যাটেল তুলে নেন তাঁর উইকেটটি। কিউইদের হয়ে ২১ বলে এক বাউন্ডারি ও ৩ ওভার বাউন্ডারির রাজ্যে সর্বাধিক ৩৪ রান করেন ফিলিপস। অভিষেক ম্যাচেই ৪ ওভারে ২৫ রান দিয়ে জোড়া উইকেট নিয়ে ম্যাচের সেরা হয়েছেন হর্ষল। ভুবনেশ্বর, দীপক চাহার, অক্ষর প্যাটেল ও অশ্বিনরা একটি করে উইকেট পেয়েছেন। নির্ধারিত ২০ ওভারে ৬ উইকেটে ১৫৩ রান তোলে নিউজিল্যান্ড। রান তাড়া করতে নেমে অবশ্য কঠিন পরীক্ষার মুখে পড়তে হয়নি রোহিত ও কেএল রাহুলকে। ওপেনিং জুটিতে দু’জনের ১১৭ রানের পার্টনারশিপ ও হাফ সেঞ্চুরিই ম্যাচের ফলাফল নির্ধারিত করে দিয়েছিল।
সেইসঙ্গে পাকিস্তানের বাবর আজম ও মহম্মদ রিজওয়ানের সর্বাধিক শতরানের পার্টনারশিপের রেকর্ডকে স্পর্শ করল এই ভারতীয় জুটি। পাওয়ার প্লে-র পরে রানের গতি কিছুটা কমলেও উইকেট হারায়নি ভারত। বিশ্বকাপের ফর্ম ধরে রেখে মিলনেকে ছক্কা মেরে অর্ধশতরান পূর্ণ করেন রাহুল। শেষে ৪৯ বলে হাফ ডজন বাউন্ডারি ও দুই ওভার বাউন্ডারির সাহায্যে ৬৫ রান করে টিম সাউদির শিকার হয়ে প্যাভিলিয়নে ফিরলেন। রাহুল ফিরলেও রোহিত শর্মা ক্রিজে ছিলেন। মিলনেকে ওভার বাউন্ডারি মেরে তিনিও অর্ধশত রান পূর্ণ করলেন। শেষে ৩৬ বলে এক বাউন্ডারি ও পাঁচ ওভার বাউন্ডারির সাহায্যে ৫৫ রান করে সাউদির শিকার হয়ে সাজঘরে ফেরেন রোহিত। তিন নম্বরে নেমেছিলেন ভেঙ্কটেশ আইয়ার। চার নম্বরে নেমেছিলেন সূর্যকুমার যাদব। তবে শুক্রবার মাত্র ১ রান করেই সাজঘরে ফেরেন সূর্য। তিনিও সাউদির শিকার। শেষে ১৭.২ ওভারি ভারতের ম্যাচ সিরিজ জয় নিশ্চিত করে দেন ভেঙ্কটেশ ও ঋষভ পন্থ। ভেঙ্কটেশ ১১ বলে জোড়া বাউন্ডারির সাহায্যে ১২ এবং পন্থ ৬ বলে জোড়া ওভার বাউন্ডারির সাহায্যে ১২ রান করে অপরাজিত থেকে যান।
সিরিজ জয়ের পর রোহিত বলেছেন, ‘গোটা দল যথেষ্ট ভালো পারফর্ম করেছে। পরিস্থিতি খুব একটা আমাদের অনুকুলে ছিল না। কিন্তু, আমরা যেভাবে নিজের মেলে ধরেছি, সেটা এককথায় অসাধারণ। আমরা ওদের ব্যাটিং দক্ষতা সম্পর্কে খুব ভালো করেই ওয়াকিবহাল ছিলাম। তবে একটাই কথা শুধুমাত্র সবাইকে বলেছিলাম, একটা উইকেট পেলেও ম্যাচ আমাদের হাতে চলে আসবে। আমাদের দলের স্পিনারদের উপরে যথেষ্ট ভরসা ছিল। আমাদের দলের প্রত্যেক ক্রিকেটারই ধারাবাহিকভাবে ভালো পারফরমেন্স করছে। এই দলটা একেবারেই তরুণ। খুব বেশি ম্যাচ এরা খেলেনি। তাই আমি এদের প্রত্যেককেই স্বাধীনতা দিতে চাই। এটাই আমার কাছে সবথেকে বেশি গুরুত্বপূর্ণ।’ আজি রাঁচি থেকে কলকাতায় আসছে ভারতীয় দল। রবিবারে ইডেনে ৩-০ করাই এখন একমাত্র লক্ষ্য টিম ইন্ডিয়ার।