ভাইরাল খবর
মাঝ পথে বন্ধুর ধোঁকা! খবরের কাগজ বিক্রি করে আজ সফল IAS তিনি
ডিজিটাল ডেস্ক : নিষ্ঠা আর কঠোর পরিশ্রমই হলো সাফল্যের চাবিকাঠি। যেখানে আত্মবিশ্বাস আর সঠিক পন্থা অবলম্বন করে নেমে পড়তে হয় জীবনের ময়দানে। তবে এই কিন্তু লড়াইটা সবার জন্য একদম সমান হয়না । দারিদ্রতার যে পাহাড় বাধা হয়ে দাঁড়ায় এই লড়াইয়ে। তবে এমন অনেক মানুষও দেখেছি যারা এই সমস্ত প্রতিবন্ধকতা পেরিয়ে আজকের দিনে সাফল্যের বিছানায় বসে আড়মোড়া ভাঙছে। আজ এমনই একজন ব্যক্তির সাথে পরিচয় করাবো আমাদের পাঠকদের।
UPSC অর্থাৎ ‘Union Public Service Commission’ যা একটা বিশাল বড়ো নাম। দেশের বাকি অন্যতম কঠিন পরীক্ষা তো বটেই পাশাপাশি হাজারো পরীক্ষার্থীর স্বপ্ন এই পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হবার। প্রতি বছর ক্যেক লাখ পরীক্ষার্থী ছুটে চলেছে UPSC-এর পেছনে তা ক্র্যাক করার জন্য। যদিও এই যুদ্ধে জয়ের হাসি হাসতে পারে গুটি কয়েকজন। এমনও মানুষ আছেন যারা একাধিকবার চেষ্টা করেও এই কাঙ্খিত সফলতা অর্জন করতে পারেননা, অন্যদিকে এমনও উদাহরণ আছে যারা কোনো কোচিং ছাড়াই সম্পূর্ণ নিজের একনিষ্ঠ চেষ্টায় হাসিল করে নেন আইএএস, আইপিএস-এর মতো গুরুত্বপূর্ণ পদ। এমনই এক ব্যক্তি হলেন মধ্যপ্রদেশ রাজ্যের IAS অফিসার নিরীশ রাজপুত।
আরোও পড়ুন – স্লিপার ক্লাস থেকে সোজা একেবারে AC ক্লাসে! নয়া স্কিম শুরু করেছে ভারতীয় রেল
মধ্যপ্রদেশের এক হতদরিদ্র পরিবার থেকে IAS অফিসার নিরীশ কে কম কাঠ পোড়াতে হয়নি। নিরীশের বাবা এক সামান্য মজুরির দর্জি। পরিবারের অবস্থা প্রায় নুন আনতে পান্তা ফুরায় হলেও ছেলেমেয়েদের পড়াশোনায় কোনো খামতি রাখেননি নিরীশের বাবা। নীরিশের আরো দুই দাদা রয়েছে যারা সম্পূর্ণ নিজের চেষ্টায় আজ অধ্যাপক হয়েছেন।
নিরীশের সম্পর্কে জানা যায়, গ্র্যাজুয়েশন এবং মাস্টার্স উভয় ক্ষেত্রেই পরপর টপার ছিলেন তিনি। সেইসময় তার এক বন্ধু নিরীশকে জানায় সে নাকি নতুন কোচিং সেন্টার খুলছে, আর তার কোচিং সেন্টারে পড়ানোর পরিবর্তে নিরীশকে UPSC-এর জন্য স্টাডি মেটেরিয়াল এবং অন্যান্য সাহায্য করবে বলে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ হন। কিন্তু প্রায় ২ বছর পড়ানোর পর, তার সেই বন্ধু কোনো প্রতিশ্রুতি তো রাখেনইনা উলটে প্রতিষ্ঠান থেকে বের করে দেন নিরীশকে।
হটাৎ এমন ঘটনার পর অথৈ জলে পরে যায় নিরীশ। হাতে টাকাপয়সা দূর বইপত্র কিছুই ছিলো না। তখন নিরুপায় হয়ে সকালে খবরের কাগজ বিক্রি করার কাজ নেন তিনি। কিছুদিন পর সবকিছু ভাগ্যের উপর ছেড়ে দিয়ে দিল্লি যাওয়ার পরিকল্পনা করেন নিরীশ। সেখানেই এক বন্ধুর কাছে পড়াশোনার জন্য বই ধার নিয়ে শুরু করেন UPSC- প্রস্ততি।
কিন্তু কতদূর আর ধার করে চালানো যায়? থাকা খাওয়ার জন্যেও একটা নূন্যতম টাকার প্রয়োজন থাকে সবারই । তাই UPSC-এর প্রস্ততির পাশাপাশি সে পার্ট টাইম জব করা শুরু করেন। কিন্তু ভাগ্যের ফেরে প্রথম তিন বারের কোনোবারই সাফল্যের মুখ দেখতে পাননি নিরীশ। তবে চতুর্থবার আর নিরাশ হতে হয়নি নিরীশকে। অবশেষে সাফল্য ধরা দেয় তার চতুর্থ প্রচেষ্টায়, সর্বভারতীয় ৩৭০ তম স্থান অর্জন করেন নিরীশ রাজপুত। এককথায় আজ তিনি দেশের লাখো তরুণ তরুণীর অনুপ্রেরণা ।
আরোও পড়ুন – মাল্টি ন্যাশনাল কোম্পানির চাকরি ছেড়ে শিক্ষকতা করে ২৫০ কোটির মালিক
(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, Twitter এবং Instagram পেজ)