কালিয়াগঞ্জে খাটের তলা থেকে টেনে বার করে পুলিশকর্মীদের পেটাচ্ছে জনতা

ফের উত্তর দিনাজপুরের কালিয়াগঞ্জে ঘরে বন্ধ করে পুলিশকর্মীদের বেধড়ক মারধরের অভিযোগ আন্দোলনকারীদের বিরুদ্ধে। সূত্রের খবরে জানা যায়, গতকাল (২৫ এপ্রিল) আদিবাসী ও রাজবংশীদের কালিয়াগঞ্জ থানা ঘেরাও অভিযানের সময় থানা লাগোয়া একটি বাড়িতে থাকা প্রায় ২৫ জন পুলিশকর্মীকে ঘরে বন্ধ করে প্রায় ৩ ঘণ্টা ধরে মারধর করে খুব্দ জনতা। এর পরে গুরুতর আহত পুলিশকর্মীদের উদ্ধার করে কালিয়াগঞ্জ থানার বিশেষ পুলিশ বাহিনী।

ইতিমধ্যে সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়েছে মঙ্গলবারের ওই ঘটনার একটি ভিডিয়ো । যে বাড়িতে পুলিশকর্মীদের মারধর করা হয়েছে তার মালিক অনীতা পাল বলেন, ‘গন্ডগোলের সময় প্রাণ বাঁচাতে বিশ থেকে পচিশ জন পুলিশকর্মী আমার ঘরে ঢুকে পড়েন। কিন্তু ওই ঘরের রাস্তার দিকে একটা জানলা ছিল। সেই জানলা দিয়ে আন্দোলনকারীরা ঘরে থাকা পুলিশকর্মীদের দেখতে পেয়ে যান। এর পর জানলা ভেঙে ঘরে ঢোকেন তাঁরা। তার পর পুলিশকর্মীদের  এলোপাথাড়ি মারধর করতে থাকেন আন্দোলনকারীরা। কেউ কেউ লাঠি, ধারাল অস্ত্র নিয়ে হামলা চালায়। এমনকি পুলিশকর্মীদের জামা – জুতো খুলে পেটায় আন্দোলনকারীরা। মারের চোটে গুরুতর আহত হন বেশ কয়েকজন পুলিশকর্মী। সঙ্গে আমার ঘরও ভাঙচুর করেছে আন্দোলনকারীরা। বাড়িয়ালীর অভিযোগ লুঠ করা হয়েছে, ঘরের আলমারি ও বিছানার তলায় রাখা টাকা। প্রায় ৩ ঘণ্টা ধরে ধরে চলে এই ভয়ঙ্কর তাণ্ডব। তার পর কালিয়াগঞ্জ থানার বাহিনী এসে আহত পুলিশকর্মীদের উদ্ধার করে নিয়ে যায়।’

২৬ তারিখ সকালে ঐ অনীতাদেবীর বাড়িতে গিয়ে দেখা যায় উঠোনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে র‍য়েছে পুলিশকর্মীদের জুতো, টিয়ার গ্যাসের সেলের খালি বাক্স। উঠোনের এক পাশে পড়ে রয়েছে আন্দোলনকারীদের ব্যবহার করা লাঠি ও কাটারি। অনীতাদেবী বলেন, ঘটনার সময় নিজেকে পাশের বাড়িতে আশ্রয় নিয়ে কোনও ক্রমে প্রাণ বাঁচাই। আমার বাড়িতে এরকম ঘটনা ঘটবে কোনও দিন ভাবিনি।

ওদিকে বুধবার সকাল থেকে ক্রমশ স্বাভাবিক হচ্ছে কালিয়াগঞ্জ থানা চত্বর। রাতভর সেখানে চলে তল্লাশি। সকালে থানার সামনে রাস্তায় পড়ে থাকা ইট সরিয়ে ফেলে পুলিশ। রাতে সেখানে পৌঁছন এডিজি অজয় কুমার। তিনি বলেন গতকালের থানা হামলা ও পুলিশকে মারধরের ঘটনায় মোট ৩০ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।