বাংলার খবর
সেতু তৈরি হলে সড়ক পথে রায়গঞ্জ-বারসইয়ের মধ্যে প্রায় ১৪ কিমি দূরত্ব কমবে!

বেঙ্গল এক্সপ্রেস নিউজ: রায়গঞ্জ-বারসই সড়কে সেতু তৈরির বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে বিবেচনার আশ্বাস দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। মঙ্গলবার উত্তর দিনাজপুরের রায়গঞ্জে কর্ণজোরা অডিটোরিয়ামে অনুষ্ঠিত উত্তর ও দক্ষিণ দিনাজপুরের প্রশাসনিক বৈঠকে এই বিষয়ে আবারও মুখ্যমন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণ করেন রায়গঞ্জের বিধায়ক তথা বিশিষ্ট শিল্পপতি কৃষ্ণ কল্যাণী।
রায়গঞ্জ-বারসই সড়কে নাগর নদীর ওপর সেতু নির্মাণের দাবি রায়গঞ্জবাসীর বহুদিনের। এদিন সেই দাবিকেই তুলে ধরে বিধায়ক কৃষ্ণ কল্যাণী জানিয়েছেন, বিহার সংলগ্ন শহর রায়গঞ্জ। বলরামপুর, বারসইয়ের আশেপাশের ৫০-৬০ কিলোমিটারের মধ্যে একমাত্র বড় বাজার রায়গঞ্জ। মুখ্যমন্ত্রী এই রাস্তা আগেই করে দিয়েছেন। কিন্তু ওই সড়কের উপর একটি ব্রিজ না থাকার কারণে বিহার-সহ বলরামপুর, বারসইয়ের মানুষজনের রায়গঞ্জ বাজারে আসতে যথেষ্ট সমস্যায় পড়তে হচ্ছে। এই ২৫০ মিটারের সেতু তৈরি হলে রায়গঞ্জের অর্থনৈতিক উন্নতি হবে। এবং সরকারের ৩.৪ শতাংশ রেভিনিউ বাড়বে। রায়গঞ্জের বিধায়কের এই প্রস্তাব শোনার পরেই বিষয়টি গুরুত্বসহকারে বিবেচনা করার আশ্বাস দেন মুখ্যমন্ত্রী। রায়গঞ্জ থেকে বারসই যাওয়ার রাস্তা তৈরির ১৩ কোটি টাকার প্রশাসনিক অনুমোদন আগেই পেয়েছিল পূর্তদফতর (সড়ক)। রায়গঞ্জ থেকে বারসই পর্যন্ত সড়ক যোগাযোগ তৈরি করতে নাগর নদীর ওপরে এই সেতু নির্মাণ করতে হবে। এই সেতু তৈরি হলে রায়গঞ্জবাসী খুব সহজেই বারসই পৌঁছতে পারবে।
এই সেতু তৈরি না হওয়ায় এখন রায়গঞ্জ থেকে বারসই যেতে হলে ৩৪ নম্বর জাতীয় সড়ক ধরে অনেকটা ঘুরে যেতে হয়। রায়গঞ্জ থেকে ট্রেনে দেশের অনত্র যেতে হলে এখানকার মানুষকে বারসই যেতে হয়। আবার ওই এলাকার বহু মানুষও রায়গঞ্জে আসেন। রায়গঞ্জ-বারসই যাতায়াত করার জন্য কয়েকটি ট্রেন রয়েছে। রায়গঞ্জ শহর থেকে বারসইয়ের দূরত্ব প্রায় ২৩ কিমি। রায়গঞ্জের বারদুয়ারি মোড় থেকে চাপদুয়ার হয়ে বাহিন হাইস্কুল পর্যন্ত ৯.২ কিলোমিটার রাস্তা ইতিমধ্যেই তৈরি হয়ে গিয়েছে। নাগর নদীর ওপারে বিহারের দিকের কাছনা থেকে বারসই পর্যন্ত ১২ কিমি রাস্তা তৈরির কাজও প্রায় শেষ। এই সেতুটা তৈরি হয়ে গেলে সরাসরি সড়ক পথে বারসই থেকে রায়গঞ্জ যাতায়াত করা যাবে। এখন রায়গঞ্জ শহর থেকে বারসই যেতে হলে ৩৪ নম্বর জাতীয় সড়ক ধরে বারদুয়ারি, টুঙিদিঘি হয়ে বিহারের বলরামপুর হয়ে পৌঁছতে হয়। এক্ষেত্রে মোট ৩৭ কিমি রাস্তা অতিক্রম করতে হয়। এই সেতু তৈরি হলে রায়গঞ্জ ও বারসইয়ের মধ্যে দূরত্ব ১৪ কিলোমিটার কমে যাবে। সময়ও বাঁচবে। সেতু না থাকায় এই রাস্তায় সরাসরি কোনও গাড়ি চলাচল করতে পারে না।
সেই কারণে সড়কপথে বারসই যেতে হলে দুই-তিন দফায় গাড়ি বদল করতে হয়। অথবা গাড়ি ভাড়া করে বারসই যেতে হয়। ফলে সাধারণ মানুষ রায়গঞ্জ থেকে ট্রেনেই বারসই যান। এবং বারসই স্টেশনে গিয়ে তাঁদের দীর্ঘক্ষণ ট্রেনের জন্য অপেক্ষা করতে হয়। সেখান থেকেই ট্রেন ধরে দেশের অন্যান্য জায়গায় পৌঁছতে হয়। আবার কোনও দূরপাল্লার ট্রেনে এসে বারসইতে নেমে রায়গঞ্জ পৌঁছতে হলে ট্রেনের জন্য বারসই স্টেশনে দীর্ঘক্ষণ অপেক্ষা করতে হয়। বারসই থেকে বহু মানুষ প্রতিদিন রায়গঞ্জ শহরে আসেন বাজারে কেনাকাটা করতে। ফলে এই সেতুটি নির্মাণ হলে খুব সহজেই রায়গঞ্জ শহরের সুভাষগঞ্জ থেকে গাড়িতে চেপে বারসই পৌঁছনো যাবে। দীর্ঘদিন ধরেই এই সেতুটি নির্মাণের জন্য সাধারণ মানুষ দাবি জানিয়ে আসছেন। রায়গঞ্জের বর্তমান বিধায়ক কৃষ্ণ কল্যাণীও বারবার এই সমস্যার সমাধানে উদ্যোগী হয়েছেন। মঙ্গলবার তিনি মুখ্যমন্ত্রীর কাছে আবারও এই সেতু তৈরির প্রস্তাব দেন। এবং মুখ্যমন্ত্রী সেই প্রস্তাবে অনুমোদন দিয়ে বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে বিবেচনা করার আশ্বাস দিয়েছেন। বিধায়ক কৃষ্ণ কল্যাণীর উদ্যোগে দীর্ঘদিনের এই সমস্যা এবার দূর হতে চলেছে বলেই মনে করছে রায়গঞ্জবাসী।