লেখাপড়া করতে চাই, নিজের বিয়ে আটকাতে থানায় হাজির নাবালিকা
Connect with us

বাংলার খবর

লেখাপড়া করতে চাই, নিজের বিয়ে আটকাতে থানায় হাজির নাবালিকা

Rate this post

বেঙ্গল এক্সপ্রেস নিউজ: নিজের বিয়ে নিজেই রুখল নাবালিকা। স্থানীয় থানায় এসে বলল, ‘এখনই বিয়ে নয়, পড়াশুনা করতে চাই।’ নাবালিকার ইচ্ছাপূরণে সাহায্য করল পুলিশ ও প্রশাসনিক আধিকারিকরা। ঘটনাটি ঘটেছে বাঁকুড়ার পাত্রসায়েরে। জানা গিয়েছে, দশম শ্রেণীর এক নাবালিকা ছাত্রী জানতে পারে তার পরিবারের লোকজন বিয়ের দেখশোনা শুরু করেছে। সেই খবর তার কানে আসতেই স্থানীয় পাত্রসায়ের থানায় হাজির হয় ওই নাবালিকা। পাত্রসায়ের পুলিশকে সে জানায়, এখন বিয়ে করতে চায় না, পড়াশোনা করে শিক্ষিকা হতে চায় সে। নাবালিকার এই সাহসীকতাকেকে কুর্নিশ জানিয়েছেন পুলিশ ও প্রশাসনের আধিকারিকরা।

জানা গিয়েছে, পাত্রসায়ের থানা এলাকার মাধ্যমিকের ছাত্রী সে। এখন বিয়ে নয়, আপাতত পড়াশুনা। তারপর নিজের পায়ে দাঁড়ানোই তার স্বপ্ন। সেই স্বপ্ন নিয়েই পাত্রসায়র থানায় এসে পুলিশকে সবকথা জানায় সে। এই মেয়ের সাহস দেখে খুশি পুলিশ ও প্রশাসন। তারপরেই মেয়ের বাবা ও মা’কে থানায় ডেকে পাঠিয়ে সচেতন করল পুলিশ। সমাজের বিশিষ্ট জনেরা বলছেন, পাত্রসায়েরের এই মেয়ে সমাজকে ফের এক বার দেখিয়ে দিলো, বাল্য বয়সে কোনোভাবেই বিয়ে নয়। তার এই সাহসিকতা ভবিষ্যতে আরও অনেক এইরকম কিশোরীকে অনুপ্রেরণা জোগাবে বলেও মনে করছেন তাঁরা।

পাত্রসায়েরের বিডিও নিবিড় মন্ডল বলেছেন, ‘এটা একটা সত্যি আশার কথা। একটা নাবালিকা বিয়ে করতে চায় না, পড়াশোনা করতে চায়। তার জন্য সে থানায় চলে এসেছে। আমরা মাঝেমধ্যেই পাড়ায় পাড়ায় ঘুরে মানুষের মধ্যে চেতনা আনার চেষ্টা করি। ১৮ বছরের নিচে কাউকে বিয়ে দেবেন না। সরকারের কন্যাশ্রী, রূপশ্রী প্রকল্প আছে। এই মেয়েটা আমাদের ডাকে সাড়া দিয়েছে। সে বুঝতে পেরেছে, থানাতে গেলে তার বাবা-মা নাবালিকা অবস্থায় তার বিয়ে দিতে চাইছে, তা সে আটকাতে পারবে। সে সরাসরি থানায় চলে এসেছে। এটা সত্যিই আমাদের কাছে গর্বের বিষয়। আমরা চাই এইরকম বাচ্চা মেয়েরা আরও এইভাবে এগিয়ে আসুক। মানুষের মধ্যে চেতনা জাগুক। তাদের বাবা-মায়েদের মধ্যে এই ধারণা প্রসারিত হোক। তাহলে সমাজ আরআরও উন্নত হবে।’

Advertisement

বিডিও আরও বলেছেন, ‘সমাজের এক শ্রেনীর মানুষের জন্যই তো এই ধরনের ঘটনাগুলো ঘটছে। গ্রামের দিকে অনেক সময় হয় কী, ভালো পাত্র পেয়ে গেলে তখন বাবা-মায়েরা আর ভাবে না যে তাদের মেয়ে শারীরিক বা মানসিক এখনও পরিণত হয়নি। সরকারের একাধিক প্রকল্প চালু রয়েছে। ১৮ বছর পার হলেই তারা টাকা পাচ্ছে। আবার বিয়ের জন্য রূপশ্রী প্রকল্প চালু হয়েছে। সেখানে কেন আর বিয়ে দিতে যাবে। বিয়ের জন্যই তো তারা ৫০ হাজার টাকা পেয়ে যাচ্ছে। এইগুলোই আমরা মানুষকে বোঝানোর চেষ্টা করছি।’