খেলা-ধূলা
সংসার সামলে জাতীয় অ্যাথলেটিক্স মিটে জোড়া পদক গৃহবধূ তনুশ্রীর
বেঙ্গল এক্সপ্রেস নিউজ: যে রাঁধে, সে চুলও বাঁধে। কথাটা আবারও প্রমাণ করলেন তনুশ্রী লালা। ১৯ বছর ধরে খেলাধূলার সঙ্গে কোনও যোগ ছিল না। খেলার ইচ্ছা থাকলেও সাংসারিক চাপে খেলা চালিয়ে যাওয়া সম্ভব হয়নি। তবে ইচ্ছে ও জেদ থাকলে একদিন না একদিন সাফল্য আসবেই। তাই তিন বছর আগে আবার অনুশীলন শুরু করেছিলেন। আর তাতেই সাফল্য। ঘরে এবং বাইরের কাজ সামলে প্রাপ্তবয়স্কদের ন্যাশনাল অ্যাথলেটিক্স মিটে ওয়াকিঙে সোনা ও দৌড়ে ব্রোঞ্জ জিতলেন মালদহর বছর ৩৮এর গৃহবধূ তনুশ্রী লালা। বাড়ি ইংরেজবাজারে কৃষ্ণ পল্লী এলাকায়। স্বামী সুব্রত লালা পেশায় বেসরকারি কর্মী। গত ২৭ এপ্রিল থেকে ১ মে চেন্নাইয়ের জওহরলাল নেহরু স্টেডিয়ামে মাস্টার্স অ্যাথলেটিক্স ফেডারেশন অব ইন্ডিয়া আয়োজিত ৪২তম ন্যাশনাল মাস্টার্স অ্যাথলেটিক্স চ্যাম্পিয়নশিপ অনুষ্ঠিত হয়। সেখানেই তনুশ্রী ৫ কিলোমিটার হাঁটা এবং ১৫০০ মিটার দৌড় প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করেন। এবং হাঁটা প্রতিযোগিতায় ৩৫.৫৪ সেকেন্ড সময় করে সোনা এবং দৌড়ে ৬.৫২১ সেকেন্ড সময় করে ব্রোঞ্জ জিতেছেন।
ছোটবেলা থেকেই খেলাধূলার প্রতি ঝোঁক তনুশ্রীর। বর্তমানে স্বামী, দুই ছেলেকে নিয়ে তাঁর সংসার। কিন্তু সাংসারিক চাপে খেলাধূলো ছাড়তে হয়েছিল। ১৯ বছর পর গত ৩ বছর ধরে আবারও শুরু করেছিলেন অনুশীলন। আর তাতেই সাফল্য ধরা দিল তাঁর ঝুলিতে। এখন পরিবার সামলেও খেলাধূলাও চালিয়ে যাচ্ছেন। তনুশ্রী বলছিলেন, ‘গত তিন বছর ধরে আমি অনুশীলন করছি। পারিবারিক সমস্যায় বেশ কিছুদিন ধরে অনুশীলন চালাতে পারেনি। ১৯ বছর বন্ধ ছিল খেলাধূলা। তারপর পরিবার এবং জেলা ক্রীড়া সংস্থার সহযোগিতায় আবারও মাঠে অনুশীলন শুরু করেছি। প্রতিদিনই দু’ঘণ্টা সকালে এবং বিকালে দেড়ঘন্টা অনুশীলন করেছি। আমি আমার এই সাফল্য আমার কোচকে উৎসর্গ করছি।’ এবার তাঁর লক্ষ্য আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতায় অংশ নেওয়া। তবে আর্থিক সংকটের জন্য কিছু সমস্যা রয়েছে।
তনুশ্রীর কোচ অসিত পাল ছাত্রীর এই সাফল্যে খুশি। তিনি জানান, ‘তনুশ্রীর এই সাফল্যে খুশি এবং গর্বিত মালদাবাসী। খুশি জেলা ক্রীড়া সংস্থার খেলাপ্রেমী মানুষরা। তনুশ্রীই প্রথম অ্যাথলিটি যে মাস্টার্স অ্যাথলেটিক্সে জাতীয় স্তরে সোনা জিতল। আগামী দিনে তনুশ্রীর ইচ্ছাপূরণ করার ক্ষেত্রে আমি ওর পাশে রয়েছি। আর্থিক সহায়তা পেলে তনুশ্রী আন্তর্জাতিক স্তরেও সাফল্য পাবে বলেই আমার বিশ্বাস।’