বাংলার খবর
পরপর কন্যা সন্তান জন্ম দেওয়ার ‘অপরাধে’ বাড়িছাড়া গৃহবধূ!
বেঙ্গল এক্সপ্রেস নিউজ: লিঙ্গ বৈষম্যের মতো মানসিক ব্যাধি থেকে যে আমরা এখনও মুক্ত হতে পারিনি, তা আরও একবার প্রমাণিত হল। বছর দশেকের সংসারে পরপর দুই কন্যাসন্তানের জন্ম ঘিরে অশান্তি। এর জেরে আবারও বিয়ে করে নতুন বৌ ঘরে তুলেছেন স্বামী।
এমন অভিযোগ নিয়ে দুই কন্যা সন্তানকে কোলে নিয়ে থানায় হাজির হলেন এক মহিলা। জলপাইগুড়ির রাজগঞ্জের সুখানি অঞ্চলের সাহেবপাড়া এলাকার ঘটনা। রাজগঞ্জ ব্লকের সুখানি অঞ্চলের বৈরাগীপাড়া এলাকায় এই ঘটনাটি ঘটেছে। শ্বশুরবাড়ির বিরূদ্ধে অভিযোগ নিয়ে থানার দ্বারস্থ হলেন গৃহবধূ সাহেরা বানু। সাহেরার অভিযোগ, শুরুতে সব ঠিক থাকলেও পরপর দুই কন্যা সন্তান হওয়ায় তাঁর উপর মানসিক এবং শারীরিক নির্যাতন শুরু করেন স্বামী ও শ্বশুরবাড়ির লোকজন। এ বিষয়ে এলাকায় সালিশির মাধ্যমে মিটমাট করার সিদ্ধান্ত হলেও বাস্তবে কোনও ফল হয়নি।
তারপর হঠাৎ গত সোমবার নতুন করে তাঁর স্বামীর বিয়ের খবরে ক্ষোভে ফেটে পড়েন সাহেরা বানু এবং তাঁর পরিবার। রাজগঞ্জের সুখানি অঞ্চলের সাহেবপাড়ার মেয়ে সাহেরা বানু গত ১০ বছর আগে বৈরাগীপাড়া এলাকার আবু বক্কর সিদ্দিকের সঙ্গে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন। স্বামী কাজের সূত্রে কেরালায় কাজ করেন বলে জানা গিয়েছে। দুই কন্যা সন্তানের জন্ম দেন সাহেরা বানু। বর্তমানে তাদের বয়স ৩ বছর এবং ৫ বছর। মেয়ে হওয়ার পর থেকেই সংসারে অশান্তি শুরু হয় বলে অভিযোগ। সোমবার সন্ধ্যায় রাজগঞ্জ থানায় ফের লিখিত অভিযোগ জমা করেছেন সাহেরা ও তার পরিবার। সাহেরার ভাই বলেছেন, স্ত্রী থাকার পরেও আরও একজন মহিলাকে বিয়ে করে ঘরে তুলেছেন তাঁর জামাইবাবু আবু সিদ্দিক। লিখিত অভিযোগ অনুযায়ী, বিয়ের সময় দাবি মেনে ‘যৌতুক’ দেওয়া সত্ত্বেও শ্বশুরবাড়ির তরফে ভালো ব্যবহার মেলেনি বলে অভিযোগ। কন্যাসন্তানের জন্ম দেওয়ার পর থেকেই অশান্তি চরমে ওঠে।
পরে নতুন করে বিয়ে করে অন্য এক মহিলাকে ‘ঘরে তুলেছে’ বলে অভিযোগ নিয়ে থানায় হাজির হয়েছেন সাহেরার পরিবার। এ বিষয়ে সুখানি অঞ্চলের প্রধান শম্পা দত্ত জানিয়েছেন, বিষয়টি নিয়ে স্থানীয় গ্রাম পঞ্চায়েতের তরফে দুই পক্ষকে নিয়ে বৈঠক হয়েছিল, সেখানে ইতিবাচক প্রস্তাব মেনে নেওয়ার কথা থাকলেও এখনও সেই কথা রাখেননি অভিযুক্ত পরিবার। বিষয়টি নিয়ে প্রশাসনের তরফে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়ার হবে বলে জানিয়েছেন তিনি। এ বিষয়ে পুলিশ কোনও ব্যবস্থা নিক, এই আশায় থানার দ্বারস্থ পরিবার।