বাংলার খবর
২৫ জনের বেতন বন্ধের নির্দেশ, এসএসসি সচিবকে তীব্র ভৎসনা, সিবিআই তদন্তের হুঁশিয়ারি হাইকোর্টের

বেঙ্গল এক্সপ্রেস নিউজ: স্কুলে চতুর্থ শ্রেণির কর্মী নিয়োগ মামলায় কড়া নির্দেশ দিল কলকাতা হাইকোর্ট। যে ২৫ জনের বিরুদ্ধে নিয়োগে অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে, তাঁদের বেতন বন্ধের নির্দেশ দিয়েছে কলকাতা হাইকোর্ট। আদালতের অনুমতি ছাড়া এই ২৫ জনকে বেতন দেওয়া যাবে না। কিভাবে এই ২৫ জন বেআইনিভাবে চাকরি পেলেন তাও জানাতে হবে আদালতকে।
গ্রুপ ডি কর্মী নিয়োগ নিয়ে এসএসসি (স্কুল সার্ভিস কমিশন)-র সচিবকে তীব্র ভর্ৎসনাও করেছে কলকাতা হাইকোর্ট। নিয়োগে দুর্নীতি সংক্রান্ত মামলায় বুধবার তাঁকে ভর্ৎসনা করেছে হাইকোর্ট। বৃহস্পতিবার আবার মামলার শুনানি হবে। বুধবার এই মামলায় ক্ষোভ প্রকাশ করেন হাইকোর্টের বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ায়। প্যানেল বহির্ভূত নিয়োগের সুপারিশ স্কুল সার্ভিস কমিশন কেন করল, তা জানতে কমিশনের সচিবকে তলব করেছিল হাইকোর্ট। বুধবার আদালতে হাজির হন এসএসসির সচিব। এদিন তাঁকে তীব্র ভর্ৎসনা করেন বিচারপতি। সিবিআই তদন্তের হুঁশিয়ারি দিয়ে বিচারপতি সচিবকে বলেন, ‘আপনাদের ওপর আমার ভরসা নেই। আপনারা কী তদন্ত করবেন, তা আমার জানা আছে। নিয়োগে দুর্নীতি চলতে পারে না। পুরো কমিশনকে বরখাস্ত করে দেব।
সিবিআইকে বলব সমস্তটা দেখতে।’ সেই সঙ্গে বিচারপতি সচিবকে আরও বলেছেন, ‘কেউ যাতে কোনও জিনিস অফিস থেকে বের করতে না পারেন, সেজন্য প্রয়োজনে সিআইএসএফকে অফিসের দখল নিতে বলব। কোনও কম্পিউটারে হাত দেবেন না। কারা নিয়োগে দুর্নীতির পেছনে রয়েছেন, তা আমাদের খুঁজে বের করতে হবে।’ রাজ্য এবং মামলাকারীর পরামর্শ মেনে প্রয়োজনে হাই কোর্টের কোনও অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতিকে দিয়ে তদন্ত করারও ইঙ্গিত দিয়েছেন বিচারপতি। ২০১৬ সালে গ্রুপ ডি পদে ১৩ হাজার কর্মী নিয়োগ করা হয়েছিল। ২০১৯ সালে সেই প্যানেলের মেয়াদ শেষ হয়। অভিযোগ, তারপরও একাধিক নিয়োগ হয়েছে। সুপারিশের ভিত্তিতে নিয়োগ হওয়া ২৫ জনের তথ্য আদালতের হাতে আসে। এই নিয়োগ নিয়ে কমিশনের ব্যাখ্যা চায় কলকাতা হাইকোর্ট। বুধবার ওই ২৫ জনের বেতন বন্ধের নির্দেশ দিয়েছেন বিচারপতি।
আজ সকালে সেন্ট্রাল স্কুল সার্ভিস কমিশনের আইনজীবী কিশোর দত্ত আদালতের কাছে বলেন, ‘কাউকে রক্ষা করার ইচ্ছা আমাদের নেই। আমাদের তদন্ত করতে আরও কিছুটা সময় দেওয়া হোক।’ তার জবাবে বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় বলেন, ‘আর সময় দেওয়া সম্ভব নয়। আজই আমি প্রয়োজনীয় নির্দেশ দেব। তদন্তের আড়ালে অন্যকিছু করা হবে বলে আমার আশঙ্কা। আপনাদের ওপর আমার ভরসা নেই। আপনারা কী তদন্ত করবেন আমি জানি। রোজই কিছু না কিছু অনিয়ম সামনে আসছে। এটা চলতে পারেনা। আপনারা কাকে রক্ষা করবেন, আপনারা নিজের বর্তমান এবং প্রাক্তন চেয়ারম্যানকে রক্ষা করুন। আমি সিবিআই কে তদন্ত করতে বলব। সিআইএসএফ কে বলব আপনাদের অফিসের দখল নিতে। কেউ নিজেদের কোনও জিনিস নিয়ে অফিসে থেকে বেরোতে পারবেন না।
কোনও কম্পিউটারে হাত দিতে পারবেন না। সিবিআই কে বলব সব দেখতে। নিয়োগ নিয়ে এই দুর্নীতি চলতে পারে না। কারা এর পেছনে আছে খুঁজে বের করতে হবে। পুরো কমিশন বরখাস্ত করে দেব।
সিবিআই, সাআইএসএফ, আইবি, সিআরপিএফ আপনাদের অফিসের দখল নেবে।’ এরপরই উচ্চক্ষমতা সম্পন্ন কমিটি গড়ে তদন্তের আর্জি জানায় রাজ্য। দুপুর ৩টে পর্যন্ত কমিশনকে সময় দেয় আদালত। দুপুর তিনটের শুনানিতে নিয়োগের সুপারিশের চিঠি কমিশনের আঞ্চলিক অফিস থেকে দেওয়া হয়েছিল কিনা তা নিয়ে কমিশনকে অবস্থান জানাতে নির্দেশ দেয় আদালত। তারপরই ২৫ জনের বেতন বন্ধের নির্দেশ দেন বিচারপতি।