বাংলার খবর
তৃণমূল নেতা তপন দত্ত খুনে সিবিআই তদন্তের নির্দেশ হাইকোর্টের, খুশি স্ত্রী
বেঙ্গল এক্সপ্রেস নিউজ: বালির তৃণমূল নেতা তপন দত্তের খুনের মামলায় এবার সিবিআই তদন্তের নির্দেশ দিল কলকাতা হাইকোর্ট। বৃহস্পতিবার এই মামলার শুনানিতে বিচারপতি রাজশেখর মান্থার জানিয়েছেন এই খুনের ঘটনার তদন্ত এবং বিচার প্রক্রিয়ায় অংশগ্রহণের সমস্ত দায়িত্ব সিবিআই-এর। সিবিআই-এর বিশেষ আদালতেই এই মামলার বিচার চলবে।
২০১১ সালের ৬ মে বালির তৃণমূল নেতা তপন দত্তকে গুলি করে খুন করা হয়। জলা জমি ভরাট করার বিরুদ্ধে আন্দোলন করতে গিয়েই তপন দত্ত খুন হয়েছিলেন বলে অনুমান পুলিশের। এই ঘটনায় নাম জড়ায় মন্ত্রী-সহ জেলার ১৩ তৃণমূল নেতা-কর্মীর। এই মামলা গড়ায় নিম্ন আদালত, হাইকোর্ট থেকে সুপ্রিম কোর্টে। রাজ্য সরকারের সিদ্ধান্তে এই মামলার তদন্ত করেছে সিআইডি। ২০১১ সালের ৩০ আগস্ট এই মামলায় প্রথম চার্জশিট পেশ করে সিআইডি। ওই বছরেরই ২৬ সেপ্টেম্বর আরও একটি সাপ্লিমেন্টারি চার্জশিট পেশ করে সিআইডি। কিন্তু সেখানে প্রথম চার্জশিটে নাম থাকা ৯ জনের নাম বাদ দিয়ে দেওয়া হয়। এরপরই ২০১২ সালে সিবিআই তদন্তের দাবি জানিয়ে হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয়ে ছিলেন তপন দত্তের স্ত্রী প্রতিমা দত্ত। ২০১৪ সালের ডিসেম্বরে চার্জশিটে নাম থাকা বাকি পাঁচ জন তথ্য-প্রমাণের অভাবে বেকসুর খালাস পেয়ে যান। ২০১৭ সালের নিম্ন আদালতের এই রায় খারিজ করে দেয় কলকাতা হাইকোর্ট। হাইকোর্টের এই নির্দেশের বিরুদ্ধে অভিযুক্তরা সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হলে দেশের শীর্ষ আদালত হাইকোর্টের রায় বহাল রাখার এবং দ্রুত মামলার নিষ্পত্তি করার নির্দেশ দেয়।
কিন্তু এক দশক কেটে গেলেও এই খুনের মামলার কোনও কিনারা এখনও পর্যন্ত হয়নি। ১১ বছর পর সেই মামলাতেই বৃহস্পতিবার কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি রাজশেখর মান্থার সিবিআই তদন্তের নির্দেশ দিলেন। সেই সঙ্গে এতদিন তদন্ত চালানো সিআইডি-কে সমস্ত তথ্য সিবিআই-এর হাতে তুলে দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন বিচারপতি। এবং প্রয়োজনে সিবিআই আরও তদন্ত করতে পারবে বলেও জানিয়ে দিয়েছেন বিচারপতি।
কলকাতা হাইকোর্ট সিবিআই তদন্তের নির্দেশ দেওয়ায় স্বভাবতই খুশি তখন দত্তের স্ত্রী প্রতিমা দত্ত। বৃহস্পতিবার তিনি বলেছেন, ‘আদালত সিবিআই তদন্তের নির্দেশ দেওয়ায় আমি খুশি। গত ১১ বছর ধরে আমি বাড়িতে বন্দী। আমার মেয়ে বাড়ি থেকে বের হতে পারে না। দরজায় সবসময় তালা দিয়ে রাখতে হয়। অথচ দেখছি খুনিরা জামার বোতাম খুলে রাস্তায় ঘুরে বেড়াচ্ছে। এবার মনে হচ্ছে অপরাধীরা শাস্তি পাবে। হয়তো আরেকটু দেরি হবে। আরও চার-পাঁচ বছর সময় লাগবে। কিন্তু দোষীদের আমি শাস্তি পাইয়েই ছাড়ব।’