বাংলার খবর
ঝালদার কংগ্রেস কাউন্সিলর খুনের প্রত্যক্ষদর্শীর মৃত্যুতেও সিবিআই তদন্তের নির্দেশ হাইকোর্টের

বেঙ্গল এক্সপ্রেস নিউজ : ঝালদার কংগ্রেস কাউন্সিলর তপন কান্দুর খুনের অন্যতম প্রত্যক্ষদর্শী নিরঞ্জন বৈষ্ণবের মৃত্যুর তদন্তভারও এবার সিবিআই-এর হাতে তুলে দিল কলকাতা হাইকোর্ট। সোমবারই তপন কান্দুর খুনের তদন্ত সিবিআইর হাতে তুলে দেয়া হয়েছে। মঙ্গলবার প্রধান বিচারপতি রাজশেখর মান্থার নিরঞ্জন বৈষ্ণবের রহস্য মৃত্যুর ঘটনারও সিবিআই তদন্তের নির্দেশ দেন। এতদিন নিরঞ্জন বৈষ্ণবের মৃত্যুর তদন্ত করছিল রাজ্য পুলিশ এবং সিআইডি।
মঙ্গলবার এই নির্দেশ দিতে গিয়ে বিচারপতি বলেছেন, দুটি মামলাই পরস্পর সম্পর্কযুক্ত। তাই, এই দুই মামলার তদন্তভার একই সংস্থার হাতে থাকা উচিত। উল্লেখ্য, কিছুদিন আগেই তপন কান্দু খুনের প্রত্যক্ষদর্শী নিরঞ্জন বৈষ্ণবের ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার হয় তাঁর বাড়ির থেকেই। তাঁর হাতে লেখা একটি সুইসাইড নোট উদ্ধার হয় দেহর পাশ থেকে। মানসিক চাপের জন্যই তিনি এই পথ বেছে নিয়েছেন বলে সুইসাইড নোটে লেখা ছিল। তবুও পুলিশের বিরুদ্ধে আত্মহত্যায় প্ররোচনার অভিযোগ তোলে নিরঞ্জন বৈষ্ণবের পরিবার। নিরঞ্জনের দাদার অভিযোগ, প্রয়াত কাউন্সিলর তপন কান্দুকে দীর্ঘদিন ধরেই চিনতেন নিরঞ্জন। তপনের মৃত্যুর পরই তাঁর ভাইকে বারেবারে ডেকে পাঠিয়েছিল পুলিশ। জিজ্ঞাসাবাদের নামে তাঁকে ঘন্টার পর ঘন্টা থানায় বসিয়ে রাখা হয়েছিল।
আরও পড়ুন – বালিগঞ্জে জয় নিয়ে নিশ্চিত বাবুল, গান গেয়ে ফুরফুরে মেজাজে তৃণমূল প্রার্থী
আর তাতেই মানসিক চাপ বাড়ছিল নিরঞ্জনের ওপর। তার থেকে মুক্তি পেতেই নিরঞ্জন চরম সিদ্ধান্ত নেন বলে অভিযোগ তাঁর দাদার। মঙ্গলবার শুনানির সময় বিচারপতি জানান, তপন কান্দু খুনের অন্যতম প্রত্যক্ষদর্শী ছিলেন নিরঞ্জন বৈষ্ণব। রাজ্যের পক্ষ থেকে বলা হয়, ইতিমধ্যে এই ঘটনায় এফআইআর দায়ের করা হয়েছে। সুইসাইড নোট উদ্ধার করা হয়েছে। পরিবার ও প্রতিবেশীদের সাক্ষ্য নেওয়া হয়েছে। রাজ্য প্রশাসন তৎপরতার সঙ্গেই কাজ করছে। ফরেনসিক দলকেও আসতে বলা হয়েছে। তবে তারা এখনও এসে পৌঁছায়নি। নিরঞ্জন বৈষ্ণবের দেহের পাশ থেকে যে সুইসাইড নোট উদ্ধার হয়েছে তা তাঁরই লেখা কিনা, তা যাচাই করতে ইতিমধ্যেই পেশায় শিক্ষক নিরঞ্জনের ছাত্রদের খাতাও পরীক্ষা করা হয়েছে বলেও এদিন রাজ্যের পক্ষ থেকে আদালতের কাছে জানানো হয়। মামলাকারীর পক্ষের আইনজীবী আদালতকে বলেন, ‘এই ঘটনার তদন্ত করছে রাজ্য পুলিশ। তারা হাতের লেখা মিলিয়ে দেখার জন্যই শুধু সিআইডি কে বলেছিল।
আরও পড়ুন – দময়ন্তী সেনের নজরদারিতে রাজ্যের ৪ ধর্ষণের ঘটনার তদন্ত, নির্দেশ কলকাতা হাইকোর্টের
তপন কান্দুর স্ত্রী পূর্ণিমা কান্দু এবং ভাইপো মিঠুন কান্দু রিট পিটিশন করেছিল। তপন কান্দুকে যেদিন হত্যা করা হয় সেদিন ঘটনাস্থলের কাছেই নিরঞ্জন বৈষ্ণব ছিলেন বলে জানিয়েছেন তারা। সেকথা রাজ্য প্রশাসন স্বীকার করে নিয়েছে। তাহলে নিরঞ্জন বৈষ্ণবের মৃত্যুটাও অস্বাভাবিক। তাই এই ঘটনারও সিবিআই তদন্ত হওয়া উচিত।’ তারপরই বিচারপতি বলেন, ‘সবই ঠিক আছে। কিন্তু নিরঞ্জন বৈষ্ণব অন্যতম প্রত্যক্ষদর্শী। দুটি ঘটনাই একে অপরের সঙ্গে সম্পর্কযুক্ত। তাই দুটি ঘটনার তদন্ত ভার একই সংস্থার হাতে থাকা উচিত।’