বাংলার খবর
বিজেপিতে থেকে তৃণমূলকে সাহায্য! জেলা সভাপতির বিরুদ্ধে বিস্ফোরক অভিযোগ

বেঙ্গল এক্সপ্রেস নিউজ: সর্ষের মধ্যেই ভূত? পদ্মে থেকে জোড়া ফুলকে সাহায্য করার অভিযোগ! দলে থেকে প্রধান বিরোধী তৃণমূলকে সাহায্য করার বিস্ফোরক অভিযোগ উঠল জলপাইগুড়ি বিজেপি জেলা সভাপতির বিরুদ্ধে! জেলা সভাপতি বাপি গোস্বামীর বিরুদ্ধে এমনই অভিযোগ করলেন সদ্য বিজেপি থেকে বহিষ্কৃত নেতা অলোক চক্রবর্তী।
সম্প্রতি অলোক চক্রবর্তী সহ চার নেতাকে সাসপেন্ড করেছে বিজেপি। সেই নিয়ে শনিবার জলপাইগুড়ি প্রেসক্লাবে সাংবাদিক সম্মেলন করেন চার বহিষ্কৃত নেতা। সেখানেই অলোক চক্রবর্তী এই বিস্ফোরক অভিযোগ করেন। তার অভিযোগ, জেলা সভাপতি বাপি গোস্বামী সকালে বিজেপি করেন। আর রাতে নাকি তৃণমূল করেন। রাজ্য নেতৃত্বকে না জানিয়ে সম্পূর্ণ অনৈতিকভাবে তিনি দিনের পর দিন এই কাজ করে চলেছেন বলেই অভিযোগ করেছেন বহিস্কৃত বিজেপি নেতা।
শনিবার সাংবাদিক সম্মেলনে অলক চক্রবর্তী দাবি করেন, ‘বাপি গোস্বামী একটি সিমেন্ট কোম্পানির কাছ থেকে টাকা নিয়েছেন। বাড়ি বানিয়েছেন। গত তিন বছর ধরে যেখানে চা বাগান গুলো ধুঁকছে, বন্ধ হয়ে যাচ্ছে, বাগানের কর্মীরা টাকা পাচ্ছেন না, সেখানে সাধারণ চা পাতার ব্যবসা করে কী করে বছরে তিন কোটি টাকা টার্নওভার হয়? এমনকি পার্টি অফিসের গাড়িটাও নিজের কাজে ব্যবহার করেন। আমরা রাজ্য নেতৃত্বকে সবকিছু জানিয়েছি। বিভিন্নভাবে তিনি তৃণমূলকে সাহায্য করে চলেছেন। অবিলম্বে তাকে দল থেকে অপসারণ করতে হবে।’
অলোক চক্রবর্তী আরও বলেছেন, ‘জলপাইগুড়িতে বিজেপির সংগঠন যথেষ্ট শক্তিশালী। গত পঞ্চায়েত নির্বাচনে আমরা এখানে যথেষ্ট ভালো ফল করেছি। এই বাপি গোস্বামী ও তাঁর দলবলের জন্যই গত বিধানসভা নির্বাচনে এখানে আমাদের ভালো ফল হয়নি। চারটি আসনকেই উনি ও তাঁর দলবল তৃণমূলের কাছে বিক্রি করে দিয়েছে। জলপাইগুড়ির পার্টি অফিস ভাঙার পিছনেও তাঁর গোষ্ঠীর লোকজনদের হাত রয়েছে। প্রকৃত তদন্ত হলেই সব কিছু প্রমাণ হয়ে যাবে। আজকেও আমি পার্টি অফিসে ঢুকতে গিয়ে দেখি দরজায় তালা দেওয়া। যদি জেলা সভাপতি এটা করে থাকেন, তাহলে তিনি খুবই অনৈতিক কাজ করেছেন। কারণ বহু দূর দুরান্ত থেকে গ্রামের মানুষ বিভিন্ন সমস্যা নিয়ে আসেন। অথচ দলীয় কার্যালয় বন্ধ।’
এখনই যদি যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া না হয়, তাহলে আগামী দিনে জলপাইগুড়িতে সংগঠন তাসের ঘরের মতো ভেঙে পড়বে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন তিনি। সেই সঙ্গে অলোকবাবু রাজ্য নেতৃত্বকে কার্যত বার্তা দিয়ে জানিয়ে দিয়েছেন, এখনই যদি জেলা সভাপতিকে সরানো না হয়, তাহলে এই দাবানল সামলানো পড়ে রীতিমতো মুশকিল হবে। এই প্রসঙ্গে অলোক চক্রবর্তী বলেছেন, ‘এখন বাপি গোস্বামীর নেতৃত্বে জলপাইগুড়ি অফিসে তালা দেওয়া হয়েছে। আগামী দিনে প্রত্যেক বিধানসভা এলাকায় যত পার্টি অফিস আছে, সব বন্ধ করে দেবেন কর্মীরা৷ তাই কোথাও গেলে সাবধানে যাবেন৷ যে কোনও কর্মীদের বিক্ষোভের মুখে পড়তে পারেন।’
এ বিষয়ে বিজেপি জেলা কমিটির সাধারণ সম্পাদক দধিরাম রায়কে জিজ্ঞাসা করা হলে তিনি জানান, ‘জেলা কমিটির সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ওই চারজনকে চিঠি দিয়ে এবং হোয়াটসঅ্যাপের মাধ্যমে শোকজ লেটার পাঠানো হয়েছিল। রাজ্য নেতৃত্বের কাছ থেকে সবুজ সংকেত পাওয়ার পরই আমরা এই বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম। যদি কোনও আপত্তি বা অভিযোগ থাকে তাহলে তাঁরাও রাজ্য নেতৃত্বকে জানাতে পারেন। তাতে আমাদের কোনও অসুবিধা নেই। প্রতিদিনই আমাদের দলে প্রচুর মানুষ যোগ দিচ্ছেন। তাই এই ব্যাপারটাকে আমরা খুব একটা গুরুত্ব দিচ্ছি না। যাঁরা দলের শৃঙ্খলা ভঙ্গ করবে, তাঁদের বিরুদ্ধে এইরকম ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’