দেশের খবর
হয় নাতি-নাতনী না হয় পাঁচকোটি, ছেলে- বৌমার বিরুদ্ধে আদালতে বৃদ্ধ দম্পতি
বেঙ্গল এক্সপ্রেস নিউজ: ছেলে-বৌমা বৃদ্ধ বাবা-মাকে দেখে না। বাবা-মায়ের খোঁজখবর রাখেন না অনেক ছেলে-বৌমা। এমন অভিযোগ জানিয়ে আদালতে মামলা দায়ের হয় ভুরি-ভুরি।
সংবাদপত্র থেকে শুরু করে বিভিন্ন খবরের চ্যানেলে এই ধরণের খবর দেখা যায় হামেশাই। কিন্তু হরিদ্বারের এক বৃদ্ধ দম্পতি যে অভিযোগ নিয়ে ছেলে-বৌমার বিরুদ্ধে আদালতে মামলা ঠুকলেন তা শুনলে কিছুটা হতচকিত হতেই হবে। হয় নাতি-নাতনীর মুখ দেখাও না হয় ফেলো কড়ি। নাতি-নাতনীর মুখ দেখার সুখ থেকে বঞ্চিত রেখেছে ছেলে-বৌমা। এই অভিযোগে পাঁচ কোটি টাকা ক্ষতিপূরণ বাবদ চেয়ে ছেলে-বৌয়ের বিরুদ্ধে আদালতে মামলা ঠুকেছেন ওই বৃদ্ধ দম্পতি।
জানা গিয়েছে, হরিদ্বারের বাসিন্দা আর.প্রসাদ এবং তাঁর স্ত্রী সাধনা প্রসাদ তাঁদের ছেলে-বৌমার বিরুদ্ধে এই ধরণের অভিযোগ এনেছেন। মামলাকারী সাধনা প্রসাদের দাবি, তাঁর ছেলে শ্রেয় একজন পাইলট এবং বৌমা শুভাঙ্গী নয়ডায় কাজ করে। তাঁদের বিয়ের ছয় বছর হয়ে গেলেও ঠাকুমা-দাদুকে নাতি-নাতনীর মুখ দেখা থেকে বঞ্চিত রেখেছে তাঁরা।
আরও পড়ুন: সোশ্যাল মিডিয়ায় নয়, রাস্তায় নেমে আন্দোলনের বার্তা অভিষেকের
শুধু তাই নয়, ওই বৃদ্ধ দম্পতির আরও অভিযোগ, ছেলেকে তিনি আমেরিকায় রেখে পড়িয়েছেন। কর্মজীবনেও তাঁর ছেলে একজন সফল মানুষ। তা সত্ত্বেও মা-বাবার চাওয়া পাওয়া এখন তাঁদের কাছে অর্থহীন- অযৌতিক।
বিয়ের ছয় বছর হয়ে গেলেও বাচ্চা নেওয়ায় অনীহা রয়েছে তাঁর বৌমার। ছেলে হোক বা মেয়ে হোক এ নিয়ে তাঁদের কোনও সমস্যা নেই। কিন্তু এতদিনেও নাতি-নাতনীর মুখ দেখার সুখ থেকে বঞ্চিত রয়েছেন তাঁরা।
অভিযোগকারী বৃদ্ধ আর.প্রসাদের দাবি ছেলেকে বিদেশে রেখে পড়াশোনা শেখানো, বাড়িঘর তৈরি করা সহ সন্তানের ভবিষ্যৎ সুরক্ষিত করতে গিয়ে তাঁর কর্মজীবনের প্রায় সব সঞ্চয়ই শেষ। এমনকি ২০১৬ সালে ছেলের বিয়ে দেওয়া এবং তাঁদের হানিমুনে থাইল্যাণ্ড ঘুরতে যাওয়ার জন্য যাবতীয় খরচ তাঁরাই দিয়েছিলেন। তবুও এখন ছেলে-বৌ তাঁদের দেখে না। এমনকি তাঁদের কোনও কথায় গুরুত্ব দিয়ে শোনে না।
তিনি আরও জানান, বিয়ের পরই ছেলে তাঁর বৌকে নিয়ে হায়দরাবাদে থাকতে শুরু করেছে। সেখানে তাঁদের নিয়ে পর্যন্ত যায়নি। এমনকি ওই বৃদ্ধের আরও অভিযোগ, ছেলে কি করবে না করবে, তাঁর বেতন কোথায় দেবে তা সবই শ্বশুরবাড়ির পরামর্শে হয়ে থাকে। এই অবস্থায় তিনি আদালতে ছেলে-বৌমার বিরুদ্ধে পাঁচকোটি টাকা দিতে হবে না হয় নাতি-নাতনীর মুখ দেখাতে হবে এই অভিযোগ জানিয়ে মামলা করেছেন।
আরও পড়ুন: স্ত্রীর সম্মতি ছাড়া সহবাস কি অপরাধ, মামলা গড়াল সুপ্রিম কোর্টে
এদিকে ওই বৃদ্ধ দম্পতির করা মামলার খবর সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হতেই ব্যাপক প্রভাব পড়েছে জনমানষে। অনেকেই তাঁদের মামলা দায়েরের বিষয়টিকে সমর্থন জানিয়েছেন। শুধু তাই নয়, এই মামলার মাধ্যমে ওই বৃদ্ধ দম্পতি বোঝাতে চেয়েছেন বাবা-মা সন্তানকে কষ্ট করে মানুষ করে এই দিন দেখার জন্য নয়। একজন সফল দায়িত্ববান সন্তানের উচিত শেষ বয়সে বাবা-মায়ের প্রধান অবলম্বন হয়ে পাশে দাঁড়ানো।