বাংলার খবর
রায়গঞ্জের প্রশাসনিক বৈঠক থেকে বিএসএফ নিয়ে রাজ্য পুলিশকে কড়া বার্তা মুখ্যমন্ত্রীর
বেঙ্গল এক্সপ্রেস নিউজ: মঙ্গলবার রায়গঞ্জের কর্ণজোরে উত্তর ও দক্ষিণ দিনাজপুরের প্রশাসনিক বৈঠক থেকে আবারও বিএসএফ’কে নিয়ে কড়া বার্তা দিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আইন, শৃঙ্খলা রাজ্যের বিষয়, বিএসএফ-এর নয় বলে পরিষ্কারভাবে জানিয়ে দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী।
কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের জারি করা বিএসএফ-এর এক্তিয়ার বৃদ্ধির নয়া ফরমানে রাজ্যের সেই অধিকার লঙ্ঘিত হচ্ছে বলেও দাবি করেছেন। শুধু তাই নয়, পুলিশকে না জানিয়েই বিএসএফ গ্রামে ঢুকে গ্রামবাসীদের অত্যাচার করে বলেও অভিযোগ তুলেছেন মুখ্যমন্ত্রী। মঙ্গলবারের প্রশাসনিক বৈঠক থেকে মুখ্যমন্ত্রী বলেছেন, ‘বিএসএফ মাঝে মাঝেই গ্রামে ঢুকে পড়ে। গ্রামবাসীদের অত্যাচার করারও অভিযোগ আসে। এমনকি ভোটের সময় লাইনেও তাঁদের দাঁড়িয়ে পড়তে দেখা যায়! বিএসএফ-এর ১৫ কিলোমিটার পর্যন্ত আসার কথা। সেটাও পুলিশকে জানিয়ে। তা না করে, ওঁরা যেখানে সেখানে ঢুকে পড়ে।’ তার পরই দক্ষিণ দিনাজপুরের প্রশাসনিক কর্তাদের ইঙ্গিত করে মুখ্যমন্ত্রীর প্রশ্ন করেন, ‘কে কে বিএসএফ-কে ছেড়ে দেয়, নাম বলুন?’ বিএসএফ-এর ডিজি-র সঙ্গে কথা হয় কি না, তাও জিজ্ঞাসা করেন।
তারপরই তিনি নির্দেশ দেন, বিএসএফ-এর ডিজির সঙ্গে এবার থেকে সরাসরি কথা বলবেন পুলিশের ডিজি। মুর্শিদাবাদ, মালদহ, উত্তর দিনাজপুর, দক্ষিণ দিনাজপুরের মতো জেলায় এই সংক্রান্ত সমস্যা আছে বলেও এদিন দাবি করেছেন তিনি। তার পরই মুখ্যমন্ত্রী নাগাল্যান্ড প্রসঙ্গ টেনে বলেন, ‘নাগাল্যান্ডে দেখেছেন তো, কী সমস্যা হল! শীতলকুঁচিতেও দেখেছেন। ক’দিন আগে কোচবিহারে তিন জন গুলিতে মারা গিয়েছেন। স্থানীয় পুলিশকে না জানিয়ে কোনও সঙ্ঘাত হোক, আমি চাই না। তাই পুলিশকে আরও সতর্ক হতে হবে। আমাদের অনেক আইসি ভাবেন, না না ওঁদের ছেড়ে দাও। কিন্তু কেন? বিডিও-দের বলব, একটু বেশি সতর্ক থাকুন। কোনও অভিযোগ এলে আইসি-কে নিয়ে এলাকায় যান।
বিএসএফ-কে বলে দেবেন, এটা তাঁদের এক্তিয়ারের মধ্যে পড়ে না।’ বিএসএফ-এর এক্তিয়ার বৃদ্ধির সিদ্ধান্ত নিয়ে কেন্দ্রের বিরুদ্ধে প্রথম থেকেই সরব হয়েছে তৃণমূল এবং পশ্চিমবঙ্গ সরকার। ইতিমধ্যেই বিধানসভায় বিএসএফের এক্তিয়ার বৃদ্ধির বিরোধিতা করে বিল পাস হয়েছে। গতমাসে দিল্লি সফরে গিয়ে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে সাক্ষাতেও এই নিয়ে তীব্র আপত্তির কথা জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এদিনের প্রশাসনিক বৈঠকে বিএসএফের এক্তিয়ার বৃদ্ধি প্রসঙ্গে নাগাল্যান্ডের ঘটনাকে টেনে এনে মুখ্যমন্ত্রী কেন্দ্রের ওপর আরও চাপ বাড়ালেন, তা আর বলার অপেক্ষা রাখে না।