বাংলার খবর
‘সিটি অফ রিটায়ার্ড’ বিতর্কে রাজ্যপালকে রিটায়ার্ড বলে কটাক্ষ মেয়রের
বেঙ্গল এক্সপ্রেস নিউজ: কলকাতাকে সিটি অফ রিটায়ার্ড বলায় রাজ্যপালকে ‘বুড়ো’ বলে কটাক্ষ করলেন মহানাগরিক তথা রাজ্যের মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম। তিনি বলেন, রাজ্যপালের মনে হিংসা, তাই আনন্দ দেখতে পান না।
শুক্রবার একটি অডিট কনক্লেভে অনুষ্ঠানে অংশ নিয়ে রাজ্যপাল বলেছিলেন, ‘এ রাজ্যের পরিস্থিতি অত্যন্ত ভয়ংকর। রাজ্যপাল হওয়া সত্ত্বেও রাজ্যে মাথা নিচু করে বাস করছি। রাজ্য এখন সাংবিধানিক দিক থেকে ত্রিশঙ্কু অবস্থায় পরিণত হয়েছে। এ রাজ্যে প্রতিভা আছে, পেশাদারিত্ব আছে। কিন্তু, কেউ কাজ পাচ্ছেন না।আমি ব্যথিত। কলকাতা আর সিটি অফ জয় নেই। কলকাতা এখন সিটি অফ রিটায়ার্ডে পরিণত হয়েছে।’
আইন-শৃঙ্খলা সহ বিভিন্ন বিষয়ে রাজ্য সরকারকে আক্রমণ করে রাজ্যপাল আরও বলেন, ‘আগে দেশের জিডিপিতে পশ্চিমবঙ্গর অবদান ছিল। এখন আর নেই। আগে সংস্কৃতি থেকে শুরু করে অর্থনীতি, সবেতেই এগিয়েছিল এই রাজ্য। এখন পিছতে পিছতে দেয়ালে পিঠ ঠেকেছে। এক দশক ধরে কোনও সিএজি অডিট হয়না রাজ্যে। জিটিএ তে দীর্ঘদিন অডিট হয় না। দুর্নীতিতে প্রচ্ছন্ন মদত রয়েছে রাজ্যের। রাজ্যের সব কিছুতেই সিন্ডিকেট আর মাফিয়া রাজ। ভয়ের বাতাবরণের মধ্যে রয়েছে সংবাদমাধ্যমও।’
রাজ্যপালের এই মন্তব্য সম্পর্কে প্রতিক্রিয়া দিতে গিতে ব্যাঙ্গাত্মক ভঙ্গিতে ফিরহাদ হাকিম বলেছেন, ‘রাজ্যপাল সাহেব অবসর জীবনটা শান্তিতে রাজভবনে কাটাচ্ছেন। রাজ্যপালের তো অন্য কোনও কাজ নেই। আমরা কলকাতায় জন্মেছি, বড় হয়েছি। সম্ভবত মৃত্যুও কলকাতাতেই হবে। আমাদের কলকাতাকে এ ভাবে অপমান করবার ক্ষমতা রাজ্যপালকে কে দিল? আমরা কলকাতার মানুষ। কলকাতাকে সিটি অব জয় বা আনন্দের শহর হিসাবেই দেখি। রাজ্যপাল এ রাজ্যের সংস্কৃতি জানেন না। তিনি এই শহরের ইতিহাস জানেন না।’
রাজ্য বনাম রাজ্যপাল সংঘাত এই প্রথম নয়। এর আগেও বিভিন্ন ইস্যুতে কাঠগড়ায় তুলে রাজ্য সরকারের তীব্র সমালোচনা করেছেন রাজ্যপাল জগদীপ ধনকর। যার পাল্টা জবাব দিয়েছে রাজ্য সরকারও। একটা সময় রাজ্য সরকার বনাম রাজভবন সংঘাত এমন জায়গায় পৌঁছে ছিল যে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় টুইটার থেকে জগদীপ ধনকরকে ব্লক করে দেওয়ার কথা ঘোষণা করেছিলেন।
এই টানাপোড়েনের মধ্যেই কিছুদিন আগে রাজভবনে গিয়ে রাজ্যপালের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সঙ্গে ফিরহাদ হাকিমও ছিলেন। তাঁর নিজের আঁকা একটি ছবি সই করে রাজ্যপালকে উপহার দিয়েছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। মুখ্যমন্ত্রীকেও পাল্টা উপহার দিয়েছিলেন রাজ্যপাল। মনে হচ্ছিল বরফ কিছুটা গলতে শুরু করেছে। কিন্তু রাজ্যপালের এদিনের এই মন্তব্যে আবার নতুন করে বিতর্কের সৃষ্টি করল, তাতে কোনও সন্দেহ নেই।