বাংলার খবর
ট্যাক্সেশন ট্রাইব্যুনালের চেয়ারম্যানের পদ নিয়ে রাজ্য-রাজ্যপাল সংঘাতের আশঙ্কা
বেঙ্গল এক্সপ্রেস নিউজ: রাজ্য হিউম্যান রাইটস কমিশন সহ একাধিক কমিশনের চেয়ারম্যানের নাম সুপারিশ করে রাজভবনে পাঠিয়েছে রাজ্য সরকার। কিন্তু এখনও সেগুলোর অনুমোদন দেননি রাজ্যপাল। এর মধ্যেই পশ্চিমবঙ্গ ট্যাক্সেশন ট্রাইব্যুনালের চেয়ারম্যান হিসেবে অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি জাস্টিস সম্বুদ্ধ চক্রবর্তীর নাম মনোনীত করে রাজ্য সরকারকে নোট পাঠালেন রাজ্যপাল জগদীপ ধনকর। এবং অর্থ দফতরকে তাঁর মনোনীত প্রার্থীকে দ্রুত নিয়োগ দেওয়ার কথাও ওই নোটে উল্লেখ করেছেন তিনি। ওয়েস্ট বেঙ্গল ট্যাক্সেশন অ্যাক্ট ১৯৮৭ এর 3(2)(a) ধারা মেনে এবং কলকাতা হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি প্রকাশ শ্রীবাস্তবের সঙ্গে আলোচনা করেই ট্যাক্সেশন ট্রাইব্যুনালের চেয়ারম্যান হিসেবে বিচারপতি সম্বুদ্ধ চক্রবর্তীর নাম মনোনীত করা হয়েছে বলেও জানিয়েছেন রাজ্যপাল।
রাজ্য অর্থ দফতরের অধীনস্থ ট্যাক্সেশন ট্রাইব্যুনালের চেয়ারম্যান নিয়োগের জন্য একটি বিশেষ কমিটি রয়েছে। সেই কমিটিতে রাজ্য সরকারের দুই প্রতিনিধি থাকেন। সাধারণত রাজ্যের প্রস্তাবিত নাম এই কমিটি বিবেচনা করে রাজ্যপালের কাছে পাঠায়। রাজ্যপাল সই করে তাতে অনুমোদন দেন। কিন্তু নবান্ন সূত্রে খবর, সম্বুদ্ধ চক্রবর্তীকে ট্যাক্সেশন ট্রাইব্যুনালের সভাপতি করার ক্ষেত্রে রাজ্য সরকার বা নিয়োগ কমিটির সঙ্গে কোনও আলোচনা করেনি রাজ্যপাল। তিনি সরাসরি হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতির সঙ্গে আলোচনা করে এই নাম রাজ্যের কাছে পাঠিয়েছেন।
তবে ওয়েস্টবেঙ্গল ট্যাক্সেশন অ্যাক্ট ১৯৮৭ তে এও বলা আছে রাজ্যপাল চাইলে হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতির সঙ্গে আলোচনা করেই রাজ্যের কাছে নাম পাঠাতে পারেন। এক্ষেত্রে রাজ্যপাল সেই ধারাই প্রয়োগ করেছেন। তাই তিনি আইনবিরুদ্ধ কোনও কাজ করেছেন, সে কথা বলা যাবে না। কিন্তু এতদিন ধরে চলে আসা রাজ্য ও রাজভবনের মধ্যে সৌজন্যতার রীতিকে এক্ষেত্রে তিনি ভেঙেছেন বলেই মনে করছে ওয়াকিবহাল মহল।
এমনিতেই কত কয়েক বছর ধরেই রাজ্য ও রাজ্যপালের মধ্যে সংঘাত বেঁধেই রয়েছে। একাধিক ইস্যুতে রাজ্যের সঙ্গে প্রকাশ্যে সংঘাতে জড়িয়েছেন রাজ্যপাল জগদীপ ধনকর। রাজ্য সরকার এবং শাসক দলের একাধিক বিষয় নিয়ে তিনি প্রকাশ্যে প্রতিবাদ করেছেন। বিবাদ এতটাই চরমে পৌঁছেছে যে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সোশ্যাল মিডিয়ায় তাঁকে ব্লক পর্যন্ত করে দিয়েছেন। তাই এক্ষেত্রে রাজ্য সরকারকে এড়িয়েই রাজ্যপাল ট্যাক্সেশন ট্রাইব্যুনালের চেয়ারম্যান নিজেই মনোনীত করে রাজ্যকে পাঠালেন বলে মনে করা হচ্ছে। হিউম্যান রাইটস কমিশন, ইনফর্মেশন কমিশনের চেয়ারম্যান পদের জন্য মনোনীত প্রার্থীদের নাম সুপারিশ করে ইতিমধ্যেই রাজভবনে রাজ্য সরকার পাঠালেও সেগুলোয় এখনও অনুমোদন দেননি রাজ্যপাল। অথচ নিজেই উপযাজক হয়ে ট্যাক্সেশন ট্রাইব্যুনালের চেয়ারম্যানের নাম মনোনীত করে পাঠানোয় প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। এই নিয়ে আবারও রাজ্য বনাম রাজ্যপাল সংঘাত হতে চলেছে, তা আর বলার অপেক্ষা রাখে না।