ISC Top : বাবার কারখানা বন্ধ, ISC তে দেশের মধ্যে তৃতীয় হয়ে মেহেলির স্বপ্ন চিকিৎসক হওয়া
Connect with us

বাংলার খবর

ISC Top : বাবার কারখানা বন্ধ, ISC তে দেশের মধ্যে তৃতীয় হয়ে মেহেলির স্বপ্ন চিকিৎসক হওয়া

Raju Dhara

Published

on

Rate this post

বেঙ্গল এক্সপ্রেস নিউজ: ব্যাটারির কারখানায় কাজ করতেন বাবা। বছরখানেক আগে হঠাৎই সেখানে আগুন লাগায় রাতারাতি বদলে গিয়েছিল দৈন্দদিনের যাপন। কাজ হারিয়েছিলেন বাবা অজিত ঘোষ। অভাব ও কষ্টের সংসারে দিনযাপনের মধ্যে যেন একফালি স্বপ্নের আলো এনে দিয়েছে মেয়ে। হুগলির শ্রীরামপুর হোলিহোম স্কুলের ছাত্রী মেহেলি ঘোষ (Meheli Ghosh)।বায়োলজিতে একশোয় একশো, ইংরেজি, অঙ্ক, ফিজিক্স ও কেমিস্ট্রি এই চার বিষয়ে ৯৯ করে ও বাংলায় ৯৬ নম্বর পেয়েছেন মেহেলি। ISC টুয়েলভে ৯৯.২৫ শতাংশ নম্বর পেয়ে দেশের মধ্যে তৃতীয় হয়েছেন ডানকুনির ভাদুয়ার মেয়ে মেহেলি। এবার পড়তে চান ডাক্তারি।

মেহেলি জানিয়েছেন, মেডিক্যালে ক্রাক করে কলকাতার কোনও সরকারি মেডিক্যাল কলেজ থেকে MBBS করাই তাঁর পরবর্তী লক্ষ। বই পড়া, বাগান পরিচর্যা করা তাঁর শখ। ভালো লাগতো ছবি আঁকতেও। তবে পড়ার চাপে এখন আর ছবি আঁকা হয়ে ওঠে না। পড়াশোনার জন্য স্কুল তাঁকে যেমন সাহায্য করেছে, তেমনই পরিবার তাঁর পাশে থেকেছে। ডাক্তার হয়ে মা-বাবার দুঃখ দূর করতে চান মেহেলি।

 

Advertisement

আরও  পড়ুন – Bankura Crime: রাতের অন্ধকারে চলত অসামাজিক কাজকর্ম, পুলিশি অভিযানে গ্রেফতার ২১

ব্যাটারির কারখানা বন্ধ হয়ে যাওয়ার পর, আর কোনও স্থায়ী রোজগার নেই মেহেলির বাবা অজিত ঘোষের। নিজের কিছু চাষের জমি রয়েছে। সেইগুলো দেখাশোনা করেন। এবং কিছু গোডাউনে মজদুরির কাজ করে যে সামান্য টাকা পান, তা দিয়েই টেনেটুনে চলে সংসার। মেহেলির মা দীপা ঘোষ গৃহবধূ। অভাবের সংসার হলেও মেয়ের পড়াশোনায় কোনও খামতি রাখেননি বাবা-মা। মেহেলির পড়াশুনো চালিয়ে যেতে তাঁর মাশি ও দাদু আর্থিক সাহায্য করেছেন। মেয়ে দেশের মধ্যে তৃতীয় হয়েছে। ভবিষ্যতে ডাক্তার হয়ে তাঁদের অভাব, দুঃখ, দুর্দশা ঘোঁচাবে বলেই এখন আশাবাদী ঘোষ দম্পতি।

অজিত ঘোষ বলছিলেন, ‘মেয়ে ভালো রেজাল্ট করেছে, খুবই খুশি। কিন্তু মূল যেটা সমস্যা হল গত বছর থেকে আমার ফ্যাক্টরিটা বন্ধ হয়ে যায়। সেক্ষেত্রে আমি খুবই আর্থিক সমস্যার মধ্যে পড়ে যাই। আমার বাবা ও বড় শালী এই দীর্ঘ দেড়-দুই বছর আর্থিকভাবে খুবই সাহায্য করেছে। বর্তমানে আমি বেকার। কোথাও কোনও গোডাউনে কাজ পেলে যাই। বলতে গেলে একরকম বেকার। চাকরির জন্য যেখানেই গিয়েছি, বয়সের জন্য ফিরিয়ে দিয়েছে। এবার সরকার যে স্টুডেন্ট লোন দেয়, তার জন্য আবেদন করব। মেয়ে ডাক্তারি পড়বে, তা জানতাম। এবং ও যে ভালো ফল করবে, তাও জানতাম। তবে এতটা ভালো রেজাল্ট করবে সেটা আশা করিনি। খুবই খুশি। আর্থিক প্রতিবন্ধকতা তো আছেই। সেটাকে কাটিয়েই ওকে যেতে হবে।’

Advertisement

আরও  পড়ুন – বিষ খেয়ে আত্মঘাতির চেষ্টা, প্রাণে বাঁচলেন স্থাস্থ্যকর্মী

মেহেলি ডাক্তারি নিয়ে পড়ে সার্জেন্ট হতে চান। এবং গ্রামে চিকিৎসা করাতে চান বলেই জানিয়েছেন। মেহেলি বলেছেন, ‘খুবই ভালো লাগছে। কিন্তু এতটা ভালো রেজাল্ট আশা করিনি। খুবই ভালো অনুভূতি হচ্ছে। আমি মোট ৯৯.২ শতাংশ নম্বর পেয়েছি। ইংরেজি, বাংলা, অঙ্ক, ফিজিক্স, কেমিস্ট্রি ও বায়োলজি আমার সাবজেক্ট ছিল। বায়োলজি আমার খুবই পছন্দের বিষয় ছিল। তাই পশ্চিমবঙ্গের কোনও মেডিক্যাল কলেজ থেকে এমবিবিএস করতে চাই। সার্জারির দিকে যাওয়ার খুব ইচ্ছা আছে। গ্রামের দিকে চিকিৎসা করাতে চাই। এই স্কুলে আমি অনেক বছর ধরে পড়েছি। স্কুলের শিক্ষক, শিক্ষিকারা খুবই সাহায্য করেছেন। আর বাবা-মার অবদান তো অনস্বীকার্য। চিরকাল আমার পড়াশোনার জন্য আত্মত্যাগ করেছেন। বাবার এখন কারখানা বন্ধ। কিন্তু আমার পড়াশোনায় কোনও কামতি রাখেননি। বাবা স্টার ব্যাটারি কারখানায় কাজ করতেন। সেই কারখানায় আগুন লেগে যায়। তারপর থেকেই কারখানা বন্ধ। উচ্চশিক্ষার জন্য একটু চাপ আসবে। বাবা কিছু সঞ্চয় করেছেন। এবং অবশ্যই লোনের জন্যও চেষ্টা করব।’

আরও  পড়ুন – ২০৫০ সালের মধ্যে চিনের জনসংখ্যা ২.২ শতাংশ কমবে, দাবি রিপোর্টে!

Advertisement

আরও  পড়ুন – যেখানে প্রাথমিক শিক্ষা স্বপ্ন! সেখান থেকে রাইসিনা হিলের বাসিন্দা, শপথ নিয়ে শৈশবে ভাসলেন দ্রৌপদী

আরও  পড়ুন – অ্যাকটিভ কেসের সংখ্যা কমলেও, বাড়ল করোনায় মৃতের সংখ্যা

Advertisement
Continue Reading
Advertisement
Ads Blocker Image Powered by Code Help Pro

Ads Blocker Detected!!!

We have detected that you are using extensions to block ads. Please support us by disabling these ads blocker.