দেশের খবর
বহিরাগত ও সুবিধাবাদীরাই বিজেপি চালাচ্ছে! রাজ্য ও কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের বিরুদ্ধে বিস্ফোরক অভিযোগ জয়প্রকাশ ও রীতেশের

বেঙ্গল এক্সপ্রেস নিউজ: সকালে রাজ্যপাল জগদীপ ধনকর বিধানসভার অধ্যক্ষ বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়, রাজ্য সরকার ও মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে বিস্ফোরণ ঘটিয়ে ছিলেন। আর দুপুরে রাজ্য এবং দলের কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের বিরুদ্ধে বিস্ফোরণ ঘটালেন রাজ্য বিজেপির দুই বহিষ্কৃত নেতা জয়প্রকাশ মজুমদার ও রীতেশ তেওয়ারি।
কেন্দ্রের ও রাজ্যের কিছু নেতার বিরুদ্ধে নজিরবিহীনভাবে আক্রমণ শানালেন বিজেপির বহিস্কৃত দুই নেতা জয়প্রকাশ মজুমদার এবং রীতেশ তেওয়ারি। দু’জনেই জানালেন, পার্টিতে যোগ্যতা অনুযায়ী স্থান দেওয়া হচ্ছে না, কে কার অনুগামী সেটাই পদ পাওয়ার ক্ষেত্রে প্রধান মাপকাঠি হয়ে উঠেছে। মঙ্গলবার কলকাতা প্রেসক্লাবে সাংবাদিক সম্মেলনে বিজেপি রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার, বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী সহ রাজ্যের এবং কেন্দ্রের নেতৃত্বের বিরুদ্ধে বিস্ফোরক অভিযোগ আনলেন এই দুই নেতা। তাঁরাই যে আসল বিজেপি, তা পথে নেমেই প্রমাণ করার চ্যালেঞ্জও এদিন দিয়ে রাখলেন জয়প্রকাশ মজুমদার ও রীতেশ তিওয়ারি। এদিনের সাংবাদিক বৈঠকে গোড়া থেকেই তাঁদের আক্রমণের মূল লক্ষ্য ছিলেন রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার ও সাধারণ সম্পাদক অমিতাভ চক্রবর্তী। নাম না করলেও বারবার পদের দিকে আঙুল তুলে কটাক্ষ করেছেন জয়প্রকাশ ও রীতেশ। জয়প্রকাশ মজুমদার বলেছেন, ‘সাধারণ সম্পাদকের অভিজ্ঞতা ২ বছর।
বর্তমান বিজেপি রাজ্য সভাপতি আড়াই বছর রাজনীতি করেছেন। আমরা তাঁর বিরোধিতা করলেও এটা সত্যি কথা, এই মুহূর্তে তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জাতীয় মুখ হয়ে উঠেছেন। অথচ তাঁর বিরুদ্ধে যাঁরা লড়াই করবেন, তারা সকলেই রাজনীতিতে অনভিজ্ঞ এবং নবীন। এ যেন তিন দিনের অনুশীলনে মেসির বিরুদ্ধে খেলতে নামা। বাইরে থেকে নেতা এনে রাজ্য বিজেপির পুরনো নেতাদের গুরুত্বহীন করা হচ্ছে। একুশের বিধানসভা নির্বাচনের আগেও এটাই করা হয়েছিল। মধুভোগ করার জন্য যারা অন্য দল থেকে বিজেপিতে এসেছে, যাদের জনসমাজে কোনও অবদান নেই তারাই বিজেপি চালাচ্ছে। সুবিধাবাদীরাই বিজেপির মাথা। বর্তমানে দেখছি এবিভিপি যারা করেছে তারাই রাজ্য বিজেপির সর্বের সর্বা। লোকসভা নির্বাচনে আমরাই দলকে রাজ্য থেকে ১৮টা আসন পেতে জান-প্রাণ লড়াই করেছিলাম।
কিন্তু বিধানসভা ভোটের সময় রাজ্যের সেই নেতা-কর্মীদের বাদ দিয়ে কেন্দ্রীয় নেতারা এসে প্রচার করলেন, দায়িত্ব নিলেন। তখন আমি বারবার বলেছিলাম ভুল হচ্ছে কিন্তু কেউ কোন কথা শোনেনি। আজকে রাজ্যে দলের এই ফলাফলের জন্য কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব সমানভাবে দায়ী। যার ফল বিধানসভায় মাত্র ৭৭ আসন পাওয়া।’ তিনি আরও বলেন, ‘বিধানসভা ভোটে হারের পর কোনও পর্যালোচনা হয়নি রাজ্য বিজেপিতে। রাজ্যে দলটাকে ভেঙ্গে দেওয়ার চেষ্টা চলছে। দিল্লির নেতারা বললেন দিলীপ ঘোষ ছাড়াই বাংলা দখল করব। যারা বিজেপিকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছিল তাদের ছাঁটা হল, দিল্লির নেতারা নিজেদের মতো করে এগোতে থাকল। অন্য দল থেকে যোগদান করানো হল। মুকুল রায়ের দলত্যাগ নিয়ে রাজ্য বিজেপির কেউ সাংবাদিকদের মুখামুখো হয়নি। দিনটা ছিল ১১ জুন। আমিই সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়েছিলাম।
একুশের ভোটের হারের পর আমিই সাংবাদিক সম্মেলন করি। রাজ্য সভাপতি এসেই জেলা সভাপতি নির্বাচন করলেন। ৪২টি সাংগাঠনিক জেলার মধ্যে ৩২টির নেতাকে এলাকার লোক বা জেলার মানুষেরা চেনে না। দিলীপ ঘোষকে বললাম, একি হচ্ছে! উনিও সদুত্তর দিতে পারেননি। এর দায় কে নেবে? রাজ্যে বিজেপি-কে দুর্বল করার চেষ্টা দলেরই একাংশের, আগেই দিল্লিকে জানিয়েছি। বাংলায় বিজেপি কর্মীরা ভালো নেই। পালিয়ে বেড়াচ্ছে। কেন্দ্রীয় নেতাদের জানিয়েছি সব। কিছু নেতা সম্পূর্ণ ভুল বুঝিয়ে নিজেদের স্বার্থসিদ্ধি করার চেষ্টা করেন৷ সাধারণ সম্পাদক (সংগঠন) সুব্রত চট্টোপাধ্যায় এবং তৎকালীন রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষকে বাদ দিয়ে কিছু নেতা দলকে পরিচালনা করার চেষ্টা করেন। কাচের ঘরে বসে রাজনীতি করছেন শীর্ষ নেতারা। হারের পর দলে কোনও রকম পর্যালোচনা হয়নি। এখানে মুখ খোলা যায় না।
নিজেদের অভিজ্ঞতা-দুর্বলতা ঢাকতে কেউ কিছু বললেই তাঁদের চুপ করিয়ে দেওয়া হচ্ছে। আমাকে এবং রীতেশকে বরখাস্ত করা হয়েছে, নাকি তাড়িয়ে দেওয়া হয়েছে, নাকি সাসপেন্ড করা হয়েছে- তার মানে আমরা কেউ বুঝতে পারছি না। আমি সবটাই জেনেছি সংবাদমাধ্যম থেকে। নতুন সভাপতি এসে বেশ কিছু কমিটি গড়েছেন। কিন্তু তাতে সবই নিজের লোক বসানো। যাঁরা বিজেপি-র পতাকা নিয়ে তৃণমূলের বিরুদ্ধে লড়াই করতে পারেন, কাচের ঘরে থাকা দলের নেতাদের বিরুদ্ধেও কর্মীরা নামতে তৈরি। ভয় দেখিয়ে বন্ধ করা যাবে, এমন অলীক স…