সুভাষ ভৌমিকের প্রয়াণে শোক প্রকাশ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও রাজ্যপালের! শোকোস্তব্ধ ক্রীড়ামহল
Connect with us

খেলা-ধূলা

সুভাষ ভৌমিকের প্রয়াণে শোক প্রকাশ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও রাজ্যপালের! শোকোস্তব্ধ ক্রীড়ামহল

Published

on

Rate this post

বেঙ্গল এক্সপ্রেস নিউজ: প্রাক্তন ফুটবলার ও কোচ সুভাষ ভৌমিকের প্রয়াণে রাজ্য জুড়ে নেমে এসেছে শোকের ছায়া। শুধু ময়দানই নয়, তাঁর মৃত্যুতে শোকস্তব্ধ গোটা রাজ্য। শোকজ্ঞাপন করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং রাজ্যপাল জগদীপ ধনকর।

টুইট করার পাশাপাশি এক শোকবার্তায় মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছেন, ‘বিশিষ্ট ফুটবলার ও কোচ সুভাষ ভৌমিকের প্রয়াণে আমি গভীর শোক প্রকাশ করছি। তিনি আজ কলকাতায় শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। বয়স হয়েছিল ৭৩ বছর। সুভাষ ভৌমিক ইস্টবেঙ্গল, মোহনবাগান ক্লাব ছাড়াও বিভিন্ন আন্তর্জাতিক টুর্নামেন্টে ভারতের প্রতিনিধিত্ব করেছেন। ১৯৭০ সালে এশিয়ান গেমসে তিনি যে ভারতীয় দলের সদস্য ছিলেন, সেই দল ব্রোঞ্জ পদক লাভ করে। এছাড়াও তিনি কলকাতার তিন প্রধান ফুটবল টীমের কোচের দায়িত্ব সুচারু ভাবে পালন করেছেন। পশ্চিমবঙ্গ সরকার ২০১৩ সালে তাঁকে ‘ক্রীড়াগুরু’ সম্মানে ভূষিত করে। তাঁর প্রয়াণে ক্রীড়া জগতের এক অপূরণীয় ক্ষতি হল। আমি সুভাষ ভৌমিকের পরিবার-পরিজন ও অনুরাগীদের আন্তরিক সমবেদনা জানাচ্ছি।

‘ রাজ্যপাল জগদীপ ধনকর টুইটারে লিখেছেন, ‘প্রাক্তন ভারতীয় ফুটবলার, দেশের অন্যতম সফল কোচ এবং ১৯৭০ এশিয়ান গেমসে পদকজয়ী সুভাষ ভৌমিকের প্রয়াণে আমি গভীরভাবে শোকাহত। তিনি কলকাতার দুই বড় ক্লাব মোহনবাগান ও ইস্টবেঙ্গলের হয়ে প্রতিনিধিত্ব করেছেন এবং ২০০৩ সালে ইস্টবেঙ্গলকে আশিয়ান কাপ চ্যাম্পিয়ন করেছেন। সুভাষ ভৌমিকের আত্মার শান্তি কামনা করছি।’ শনিবার সকালেই একবালপুরের এক বেসরকারি নার্সিংহোমে করোনা আক্রান্ত হয়ে প্রয়াত হন এই কিংবদন্তি ফুটবলার এবং কোচ। খবর পেয়ে সকালেই হাসপাতালে পৌঁছে গিয়েছিলেন ক্রীড়ামন্ত্রী অরূপ বিশ্বাস এবং মেয়র ফিরহাদ হাকিম। সেখানেই প্রয়াত ফুটবলারকে শ্রদ্ধা জানিয়ে ক্রীড়ামন্ত্রী অরূপ বিশ্বাস বলেছেন, ‘সুভাষদার প্রয়াণে আমরা একজন অভিভাবককে হারালাম।

Advertisement

বাংলা ক্রীড়াক্ষেত্রে এক অপূরণীয় ক্ষতি হল। তাঁর চিকিৎসায় সাহায্য করতে আমরা উদ্যোগী হয়ে ছিলাম। এগিয়ে এসেছিল মোহনবাগান, ইস্টবেঙ্গল, মহমেডান, আইএফএ। শুক্রবার আমরা তাঁর চিকিৎসার পরিকল্পনা নিয়ে বৈঠকও করি। ঠিক হয়েছিল, উনি করোনামুক্ত হলেই আগামী দু-একদিনের মধ্যেই বাইপাসের ধারে এক হাসপাতালে নিয়ে গিয়ে তাঁর চিকিৎসা করা হবে এবং তাঁর কিডনি প্রতিস্থাপনের ব্যবস্থা করা হবে। কিন্তু সেই সুযোগ আর দিলেন না সুভাষদা।’ মেয়র ফিরহাদ হাকিম বলেছেন, ‘আমি ছোটবেলা থেকেই সুভাষ ভৌমিকের বড় ফ্যান ছিলাম। উনার খেলা দেখি আমরা বড় হয়েছি। উনি যখন খেলতে যেতেন তখন রাসবিহারীর মোড়ে দাঁড়িয়ে থাকতাম ওঁকে দেখার জন্য। ওঁর খেলা দেখতে ময়দানেও ছুটে গিয়েছি আমি। পরে ওঁনার সঙ্গে আমার খুব ভালো সম্পর্ক তৈরি হয়েছিল।

আমরা বন্ধুর মতো ছিলাম। সুভাষ ভৌমিকের প্রয়াণে আমি গভীরভাবে শোকাহত। ওঁর চলে যাওয়াটা বাংলা ক্রীড়াক্ষেত্রে অপূরণীয় ক্ষতি।’ সুভাষ ভৌমিকের মৃত্যুতে শোক প্রকাশ করেছে অল ইন্ডিয়া ফুটবল ফেডারেশন। এআইএফএফ সভাপতি প্রফুল্ল প্যাটেল এক বিবৃতিতে বলেছেন, ‘নিজের প্রজন্মের সেরা ফুটবলার সুভাষদা আর নেই। এটা শুনে অত্যন্ত দুঃখিত। ভারতীয় ফুটবলে ওঁর অবদান ভোলার নয় এবং কোনওদিন ভোলা যাবে না। উনি চিরকাল আমাদের মধ্যেই থাকবেন। ভারতীয় ফুটবল আরও এক নক্ষত্রকে হারাল।’ প্রাক্তন ফুটবলার ও সতীর্থ সুব্রত ভট্টাচার্য বন্ধুকে হারিয়ে বলেছেন, ‘ভৌমিকদা বড় মাপের ফুটবলার ছিলেন। তাঁর না থাকাটা মেনে নেওয়া যাচ্ছে না।

ফুটবল জগতের বিশাল ক্ষতি হয়ে গেল। ওঁর সঙ্গে আমার নিয়মিত ফোনে কথা হতো। কিছুদিন আগেও কথা হয়েছিল। তখন আমাকে বললো ডায়ালিসিসের কথা। আরেকটু আগে যদি সবাই সাহায্যের জন্য এগিয়ে আসত তাহলে খুবই ভালো হতো।’ শ্যাম থাপা বলেছেন, ‘সুভাষের চলে যাওয়া ময়দানের অপূরণীয় ক্ষতি। দীর্ঘদিনের বন্ধুকে হারালাম।’ সতীর্থ গৌতম সরকার বলেছেন, ‘সুভাষের মতো ফুটবলারদের মৃত্যু হয় না। সুভাষ বেঁচে থাকবেন ফুটবল প্রেমীদের হৃদয়ে। ও যে মাপের ফুটবলার ছিল, সেইমতো যোগ্য সম্মান পায়নি।’ শোক প্রকাশ করেছেন তাঁর কোচিংয়ে খেলা অ্যালভিটো ডি’কুনহা, রহিম নবি, মেহতাব হোসেনের মতো ফুটবলাররাও। অ্যালভিটো বলেছেন, আমি এখনও বিশ্বাস করতে পারছিনা সুভাষ স্যার আর নেই। ফুটবলার ও কোচের বাইরেও এক অতুলনীয় চরিত্র ছিলেন সুভাষ স্যার।

Advertisement

ভালো মানুষ ছিলেন। উনি আমার কাছে পিতৃসম। যখন পারফরমেন্স খারাপ হতো, তখন নিজের বাড়িতে নিয়ে গিয়ে আমার দেখভাল করতেন। আমার ছন্দ ফেরাতে সাহায্য করতেন। যে ভাবে আমাকে সেই সময় সামলেছিলেন, অনেক কম লোকই তা পারে। ভারতীয় ফুটবলের একটা অপূরণীয় ক্ষতি হয়ে গেল।’ মেহতাব হোসেনের কথায়, ‘বড় মাপের কোচ ছিলেন বলেই এত সাফল্য পেয়েছেন। তাঁর খেলানোর পদ্ধতির সঙ্গে মতের মিল না থাকলেও কেউ তাঁর সাফল্যকে উপেক্ষা করতে পারবে না।’ রহিম নবি বলেছেন, ‘অনেক বড় মাপের ফুটবলার এবং কোচ ছিলেন সুভাষ স্যার। আমার ফুটবলার হয়ে ওঠার পিছনে অন্যতম বড় নাম সুভাষ ভৌমিক।’

Ads Blocker Image Powered by Code Help Pro

Ads Blocker Detected!!!

We have detected that you are using extensions to block ads. Please support us by disabling these ads blocker.