বিক্ষিপ্ত কিছু ঘটনা ছাড়া ৪ পুর নিগমের ভোট শান্তিপূর্ণ, ভোট পড়ল ৭৫ শতাংশের বেশি
Connect with us

বাংলার খবর

বিক্ষিপ্ত কিছু ঘটনা ছাড়া ৪ পুর নিগমের ভোট শান্তিপূর্ণ, ভোট পড়ল ৭৫ শতাংশের বেশি

Rate this post

বেঙ্গল এক্সপ্রেস নিউজ: কিছু বিক্ষিপ্ত ঘটনা ছাড়া মোটের উপর শান্তিপূর্ণভাবেই শেষ হলো চার জেলার চার পুরনিগমে ভোটগ্রহণ। দার্জিলিং জেলার শিলিগুড়ি পুরনিগম, হুগলি জেলার চন্দননগর পুরনিগম, উত্তর ২৪ পরগনার বিধাননগর পুরনিগম ও পশ্চিম বর্ধমানের আসানসোল পুরনিগমে ভোট হল শনিবার।

সকাল ৭টা থেকে ভোটগ্রহণ শুরু হয়। চলে বিকেল ৫টা পর্যন্ত। ১৪ ফেব্রুয়ারি অর্থাৎ আগামী সোমবার ভোটের ফল ঘোষণা হবে। ভোট শুরু হতেই বিভিন্ন জায়গায় বিক্ষিপ্ত অভিযোগ আসতে শুরু করে। বেলা গড়াতেই বাড়তে থাকে বিরোধীদের অভিযোগের তালিকা। শিলিগুড়ি, আসানসোল এবং বিধাননগর থেকে কখনও ভুয়ো ভোটার, কখনও বিরোধীদের উপর শাসকদলের হামলা, আবার কখনও ভোটারদের প্রভাবিত করার অভিযোগ উঠছে। আসানসোলের ৯ নম্বর ওয়ার্ডের বোগড়া রিফিউজি কলোনি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ১১১ নম্বর বুথ দখল করে ছাপ্পা দেওয়ার অভিযোগ উঠল তৃণমূলের বিরুদ্ধে। ৪৭ নম্বর ওয়ার্ডের অন্তর্গত ডিএভি স্কুলে উত্তেজনা সৃষ্টি হয়। দুই পুলিশ কর্মী জখম হয়েছেন বলে জানা গিয়েছে। ৫ জন দুষ্কৃতীকে গ্রেফতার করা হয়েছে। বিধাননগর পুরনিগমের ৪১ নম্বর ওয়ার্ডের বিজেপি প্রার্থী প্রিয়াঙ্কা চক্রবর্তীর স্বামীর মাথিয়ে ফাটিয়ে দেওয়া হয় বলে অভিযোগ। ৪১ নম্বর ওয়ার্ডের ১ এবং ২ নম্বর বুথে প্রিসাইডিং অফিসাররের উপস্থিতিতে তৃণমূলের পোলিং এজেন্ট বহিরাগতদের নিয়ে এসে দেদার ছাপ্পা ভোট চালাচ্ছিল বলে অভিযোগ।

ছাপ্পা ভোটের খবর পেয়ে বুথে যান বিজেপি প্রার্থী ও তাঁর স্বামী। ছাপ্পা ভোটের প্রতিবাদ করতেই বিজেপি প্রার্থীকে মারধর করা হয়। তাঁর গলা টিপে ধরা হয় বলেও অভিযোগ। তাঁকে বাঁচাতে গিয়ে প্রার্থীর স্বামীও আক্রমণের শিকার হন। তাঁর মাথা ফাটিয়ে দেওয়া হয়। পুলিশ নিষ্ক্রিয় ভূমিকা পালন করছিল বলে অভিযোগ করেছেন বিজেপি প্রার্থী। ৩৩ নম্বর ওয়ার্ডের ১৭৪ নম্বর বুথে প্রয়াত রবীন্দ্র সঙ্গীত শিল্পী দ্বিজেন মুখোপাধ্যায়ের নামে ভোট পড়েছে। এছাড়াও আরও এক মৃত ব্যক্তির নামে ভোট পড়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। আসানসোলের ২৭ নম্বর ওয়ার্ডে ধাদকা এমসি লাহিড়ী স্কুলের কাছে গুলি চলার অভিযোগ উঠেছে। শূন্যে কয়েক রাউন্ড গুলি চালিয়ে ভোটারদের ভয় দেখানোর চেষ্টা করা হয় বলে অভিযোগ। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে ছুটে আসেন বিজেপির জিতেন্দ্র তিওয়ারি। ছুটে আসে পুলিশও। দুষ্কৃতীদের খুঁজতে পুলিশ তল্লাশি চালায়। দুষ্কৃতীরা মোটরবাইকে এসেছিল। বিজেপির একটি সাজানো বুথে ভাঙচুর করা হয়। বিজেপি নেতা জিতেন্দ্র তিওয়ারি তৃণমূলের দিকেই আঙুল তুলেছেন। চন্দননগর পুরনিগমের ২৭ নম্বর ওয়ার্ডে বুথজ্যামের অভিযোগ উঠেছে। বিজেপির তরফে এই অভিযোগ করা হয়েছে। সেই কারণে ভোটার লিস্ট নিয়ে চলে যাওয়া হয়েছে।

Advertisement

এর জেরে ভোটগ্রহণ প্রক্রিয়া বেশ কিছুক্ষণ বন্ধ ছিল ২৭ নম্বর ওয়ার্ডের ১৪০ নম্বর বুথে। দেড় ঘণ্টার উপরে এই বুথে ভোটগ্রহণ প্রক্রিয়া বন্ধ ছিল। আসানসোলের জামুড়িয়ার ১১২ ও ১১৪ নম্বর বুথে গুলি চলার অভিযোগও উঠেছে। সিপিএমের অভিযোগ শ্রীপুর হাইস্কুলের ওই দুটি বুথ দখল করার চেষ্টা করে তৃণমূলের দুষ্কৃতীরা। তারা প্রতিরোধ গড়ে তুলতে দুষ্কৃতীরা গুলি চালাতে চালাতে পালিয়ে যায়।রানিগঞ্জের ৩৪ নম্বর ওয়ার্ডের ৯ নম্বর বুথের রামবাগান সুরমাপাড়ায় সিপিএম প্রার্থীকে মারধরের অভিযোগ ওঠে তৃণমূলের বিরুদ্ধে। বামেদের অভিযোগ, বহিরাগতদের এনে বুথ দখল করে ভোট করাচ্ছিল শাসক শিবির। সিপিএম প্রার্থী সঞ্জয় প্রামাণিক বুথে এসে প্রতিবাদ জানালে শাসক দলের গুন্ডা বাহিনী তাঁর উপর হামলা চালায় বলে অভিযোগ। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে ঘটনাস্থলে যায় বিশাল পুলিশ বাহিনী। সারাদিন ধরেই ৪ পুর নিগমের ভোটকে ঘিরে এ ছাড়াও আরও বেশ কিছু বিক্ষিপ্ত ঘটনা ঘটেছে।

শেষ পাওয়া খবর অনুযায়ী ৪ পুর নিগমেই ৭০ শতাংশের ওপর ভোট পড়েছে। বিধাননগরে ছিল ৭৭.৮০%, আসানসোলে ৭৬.৪৯%, চন্দনগরে ৭৭.৮০% এবং শিলিগুড়িতে ৭৭.৫০% ভোট পড়েছে। রাজ্য নির্বাচন কমিশনার সৌরভ দাস জানিয়েছেন, ‘কয়েকটি বিক্ষিপ্ত ঘটনা ছাড়া ৪ কর্পোরেশনের ভোট শান্তিপূর্ণভাবে হয়েছে। আসানসোলের জামুড়িয়ার একটি জায়গা থেকে গুলি চালনার খবর এসেছে। ওটা খতিয়ে দেখা যাচ্ছে। রিপোর্ট এখনও পাইনি। যেখান যেখান থেকে অভিযোগ এসেছে। খতিয়ে দেখা হয়েছে। কয়েকটি ভুয়ো অভিযোগও এসেছে। আসানসোলে এক জন পুলিশ কর্মী আহত হয়েছেন। গ্রেফতারের সংখ্যা এখনও আসেনি। গড়ে ৭২ শতাংশ ভোট পড়েছে।’ আসানসোলের ৫টি ভোটকেন্দ্রে ইভিএম বিকল হয়েছে।

Advertisement