দেশের খবর
সন্ধ্যা মুখোপাধ্যায় করোনা পজেটিভ! মুখ্যমন্ত্রী দেখে যাওয়ার পরই বাইপাসের ধারে বেসরকারি হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হল শিল্পীকে

বেঙ্গল এক্সপ্রেস নিউজ: বৃহস্পতিবার দুপুর দেড়টা নাগাদ গুরুতর অসুস্থ অবস্থায় এসএসকেএম হাসপাতালে ভর্তি করা হয় কিংবদন্তী সঙ্গীতশিল্পী সন্ধ্যা মুখোপাধ্যায়কে। জ্বর, শ্বাসকষ্ট, ফুসফুসের সংক্রমণ নিয়ে এসএসকেএম হাসপাতালের উডবার্ন ওয়ার্ডের ১০৩ নম্বর কেবিনে ভর্তি হন তিনি।
শরীরে অক্সিজেনের মাত্রা কম থাকায় অক্সিজেন সাপোর্ট দিতে হয় তাঁকে। তাঁর চিকিৎসার জন্য ফুসফুস বিশেষজ্ঞ সোমনাথ কুন্ডুর নেতৃত্বে সাত সদস্যের মাল্টিডিসিপ্লিনারি মেডিক্যাল বোর্ড গঠন করা হয়। প্রাথমিকভাবে জানা যায়, তিনি নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত হয়েছেন। তিনি করোনা আক্রান্ত কিনা, তা জানতে করা হয় আরটিপিসিআর টেস্ট। বিকালে সেই টেস্টের রিপোর্ট এলে দেখা যায় তিনি করোনা পজেটিভ। এবং তাঁর হৃদযন্ত্র মাঝেমধ্যেই কাজ করছে না বলেও জানা যায়। তাঁর বয়সের কথা চিন্তা করে তাই কোনও ঝুঁকি না নিতে এবং সর্বোচ্চ সেরা চিকিৎসার জন্য সন্ধ্যা মুখোপাধ্যায়কে সন্ধ্যাবেলায় এসএসকেএম হাসপাতাল থেকে বাইপাসের ধারে এক বেসরকারি হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হয়।
বিকালেই শিল্পীকে দেখতে এসএসকেএম হাসপাতালে যান মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেখানেই চিকিৎসক সোমনাথ কুণ্ডু, অসীম কুণ্ডু, নীলাদ্রি সরকারদের সঙ্গে কথা বলার পর এবং সন্ধ্যা মুখোপাধ্যায়ের শারীরিক অবস্থার খোঁজখবর নিয়ে মুখ্যমন্ত্রীই জানান, সন্ধ্যা মুখোপাধ্যায়কে বেসরকারি হাসপাতালে স্থানান্তরিত করার কথা। এরপর সন্ধে ৬.২০ নাগাদ গ্রিন করিডোর করে এসএসকেএম হাসপাতাল থেকে বাইপাসের ধারে বেসরকারি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয় সন্ধ্যা মুখোপাধ্যায়কে। মুখ্যমন্ত্রী এসএসকেএমে দাঁড়িয়ে বলেছেন, ‘আমাদের দেশের, জাতির গর্ব উনি। বাংলার কথা তো ছেড়ে দিন। সন্ধ্যা’দির কথা মনে আসলেই ‘দেখ মিষ্টি, কী মিষ্টি’ গানটা সবসময়ই মনে পড়ে।
মিষ্টি সকালের মধ্যেও আবার দৈত্যের আগমন সন্ধ্যা’দিকে ছিন্ন বিচ্ছিন্ন করে দিয়েছে। আমরা চাই উনি সেরে উঠুন, আবার ছন্দে ফিরে আসুন। সন্ধ্যাদি কোভিড পজেটিভ। উনার বয়সটা একটু বেশি। তাই বাইপাসের ধারে এক হাসপাতালে তাঁকে স্থানান্তরিত করা হচ্ছে। উনার হার্টের সমস্যা দেখা দিয়েছে। মাঝে মাঝেই হার্ট ফেলিওরের একটা প্রবণতা রয়েছে। উনি দ্রুত সেরে উঠুন, এটাই কামনা করছি। কিন্তু আপনারা জানেন এসএসকেএম-এ উডবার্ন ওয়ার্ডে করোনার চিকিৎসা হয় না। করোনার চিকিৎসা হয় শম্ভুনাথ পণ্ডিত হাসপাতালে।
সেখানেও আমাদের বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকরা রয়েছেন। তাই আমরা ভেবেছিলাম শম্ভুনাথ পণ্ডিতে নিয়ে গিয়েই উনার চিকিৎসা করা হবে। সন্ধ্যাদির কন্যা ও পরিবারের পুরো ভরসা আছে সরকারি হাসপাতালে। শম্ভুনাথ পণ্ডিত হাসপাতালে ভর্তি করতে চেয়েছিল ওঁর পরিবার। সেখানে ভালো চিকিৎসা হলেও সন্ধ্যা মুখোপাধ্যায়ের হার্টের সমস্যা রয়েছে। কিন্তু শম্ভুনাথ পণ্ডিত হাসপাতালে হার্টের চিকিৎসার পরিকাঠামো অতটা ভালো নয়। উডবার্ন হলে কোনও চিন্তা ছিল না। কিন্তু ওখানে করোনা রোগীর চিকিৎসার ব্যবস্থা নেই। তাই কোনও ঝুঁকি না নিয়ে সেরা চিকিৎসাটা দিতেই আমরা ওকে স্থানান্তর করার ব্যবস্থা করেছি।’