দুর্গোৎসবের পরই আজও বিষ্ণুপুর মেতে ওঠে রাবণ কাটা নাচে
Connect with us

ভাইরাল খবর

দুর্গোৎসবের পরই আজও বিষ্ণুপুর মেতে ওঠে রাবণ কাটা নাচে

Rate this post

বেঙ্গল এক্সপ্রেস নিউজ: বাঁকুড়ার বিষ্ণুপুরের প্রাচীন এক লোকসংস্কৃতি উৎসব হল ‘রাবণ কাটা’ নাচ। বিষ্ণুপুরের ইতিহাস ইতিহাস ঘাটলে দেখা যায়, মল্লবংশের পূর্বপুরুষরা এসেছিলেন রাজস্থান থেকে।এই উৎসবের শুরুটা হয়েছিল প্রায় ৪০০ বছর আগে কোনও এক মল্লরাজার আমলেই। বিষ্ণুপুরের ইতিহাসে মল্ল রাজাদের আমলে শুরু হওয়া প্রাচীন এক লোকসংস্কৃতি এই ‘রাবণ কাটা’ নাচ। দুর্গোৎসব শেষ হলেই নাকাড়া-টিকারা আর কাঁশর-ঝাঁঝরের শব্দ শোনার জন্য উদগ্রীব হয়ে থাকেন বিষ্ণুপুরবাসী।

বিভীষণ, জাম্বুবান, হনুমান আর সুগ্রীবের দল পাড়ায় পাড়ায় ঘুড়ে ওই বাজনার তালে তাল মিলিয়ে নেচে যায়। গ্রামের শিশুদের কোলে নিয়ে নাকাড়া-টিকারা আর কাঁশর-ঝাঁঝরের তালে তালে নেচে বিষ্ণুপুরবাসীদের আনন্দ দেয় একদল মানুষ। তাঁদের পরনে পাটের তৈরি লাল, কালো আর সাদা রঙ করা ঝুলঝাল লোমশ আলখাল্লা। মাথায় গামার কাঠের তৈরি বিকট দর্শন মুখোশ। যা দেখে রীতিমত ভয় পাওয়ার জোগাড় হয় ছোট ছেলে-মেয়েদের। আর্থিক অনটন সহ্য করে এখনও এই প্রজন্মের শিল্পী সুকুমার অধিকারী, নারায়ণ বারিক, মিঠুন লোহার এবং রঞ্জিত গড়াইরা টিকিয়ে রাখার চেষ্টা করছেন বাপ-ঠাকুর্দার করে যাওয়া এই পরম্পরার সংস্কৃতিকে। তবে আগামী প্রজন্ম গামার কাঠের তৈরি এই মুখোশ এবং পাঠের আলখাল্লা গায়ে চাপিয়ে আর এই সংস্কৃতির বাহক হতে চাইছে না।

এই চারজন ছাড়াও ‘রাবণ কাটা’ নৃত্য শিল্পীর দলে রয়েছেন সনাতন ধাড়া, তারাপদ ধাড়া, শ্যামাপদ পন্ডিত, মধু দাস। নাচের বাদ্য নাকাড়া-টিকারা, ঝাঁঝর-কাঁসর যাঁদের হাতে থাকে। গোটা বছর এঁদের সবাই হয় লটারীর টিকিট বিক্রি করে, কেউ সবজি বিক্রি করে সংসার চালান। তবে পুজো আসলেই এঁরা ওই গামার কাঠের মুখোশে রঙের প্রলেপ দিতে শুরু করছন। ধুলো-ময়লা ঝেড়ে ফেলেন পাটের তৈরি লোমশ নকল শরীরের। পাড়ায় পাড়ায় ঘুরে মানুষদের বিনোদন দিয়েই মেলে কিছু বকশিশ।

Advertisement
Continue Reading
Advertisement