খেলা-ধূলা
রাসেল ধামাকাতেও জয় অধরা নাইটদের, প্লেঅফ থেকে ক্রমশ দূরে সরছে শ্রেয়সরা

বেঙ্গল এক্সপ্রেস নিউজ : শেষ ওভারে প্রথম বল করতে এসে তুলে নিয়েছিলেন চার চারটি উইকেট। দলের বিপদে ব্যাট করতে নেমে ঝড়ো ইনিংস খেলে জয়ের দোরগোড়ায় পৌঁছেও দিয়েছিলেন। ৪ বলে দরকার ছিল ১১ রান। তাঁর কাছে তা নস্যি ছিল। কিন্তু আউট হয়ে নায়ক হতে হতেও খলনায়ক বনে গেলেন আন্দ্রে রাসেল। ফলে গুজরাত টাইটানসের কাছে ৮ রানে হেরে প্লেঅফে ওঠা আরও কিছুটা কঠিন করে ফেলল কলকাতা নাইট রাইডার্স। ৭ ম্যাচের তিনটেয় জিতে এবং পাঁচটায় হেরে ৬ পয়েন্ট নিয়ে লিগ টেবিলে সাত নম্বরে রয়েছে নাইটরা। সেখানে সাত ম্যাচে ছ’টায় জিতে এবং মাত্র একটায় হেরে ১২ পয়েন্ট নিয়ে টেবিলের শীর্ষে উঠে এল হার্দিক পান্ডিয়ারা। শনিবার ডিওয়াই পাটিল স্টেডিয়ামে টসে জিতে প্রথমে ব্যাট করার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন গুজরাত অধিনায়ক হার্দিক।
শুরুতেই ওপেনার শুভমন গিলকে (৮) ফিরিয়ে দেন প্যাট কামিন্সের জায়গায় দলে আসা টিম সাউদি। প্রাথমিক ধাক্কা সামলে অধিনায়ক হার্দিক এবং অপর ওপেনার ঋদ্ধিমান সাহা মিলে ভালোই এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছিলেন। ২৫ বলে দুই বাউন্ডারি এবং এক ওভার বাউন্ডারির সাহায্যে ২৫ রান করেন ঋদ্ধি। তাঁকে ফেরান উমেশ যাদব। দু’জনের পার্টনারশিপে ওঠে ৭৫ রান। যদিও একটা দিক ধরে রেখেছিলেন হার্দিক। উল্টোদিকে ঋদ্ধির জায়গায় নামা ডেভিড মিলারও শুরুটা ভালো করেন। তবে বেশিদূর এগোতে পারেননি। ২০ বলে এক বাউন্ডারি ও দুই ওভার বাউন্ডারির সাহায্যে ২৭ রান করে মাভির শিকার হন। বেশিক্ষণ থাকতে পারেনি হার্দিকও। মিলার ফেরার পরের ওভারেই তাঁকে ফিরিয়ে দেন সাউদি। ৪৯ বলে ৪ বাউন্ডারি ও জোড়া ওভার বাউন্ডারির সাহায্যে ৬৭ রান করেন গুজরাত অধিনায়ক। হার্দিক যখন আউট হন তখন গুজরাতের রান ১৮.২ ওভারে ১৩৮। ১৯ তম ওভারে রশিদ খানকে খাতা খোলার আগেই ফিরিয়ে দেন সেই সাউদি। এরপরই শেষ ওভারে বল করতে এসেই প্রথম দুই বলেই রাসেল ফেরান অভিনব মোনহর (২), লকি ফার্গুসনকে (০)। হ্যাটট্রিকের সুযোগও এসে গিয়েছিল রাসেলের কাছে। কিন্তু তৃতীয় বলে সিঙ্গেল নিয়ে তা আটকে দেন আলজারি জোসেফ। এরপর পঞ্চম ও শেষ বলে রাহুল তেওয়াটিয়া (১৭) ও জশ দয়ালকে (০) ফিরিয়ে দেন রাসেল। ফলে ৯ উইকেটে ১৫৬ রানেই শেষ হয়ে যায় গুজরাতের ইনিংস। রাসেল ধামাকায় গুজরাটের শেষ পাঁচটি উইকেট পড়ল মাত্র ১৮ রানের মধ্যে।
নাইটদের হয়ে রাসেল চারটি, সাউদি তিনটি এবং একটি করে উইকেট পান উমেশ ও মাভি। জবাবে ব্যাট করতে নেমে শুরুতেই ব্যাটিং বিপর্যয়ের মুখে পড়ে নাইটরা। মাত্র ৩৪ রানের মধ্যেই প্রথম চার ব্যাটসম্যানকে খুইয়ে বসে কলকাতার দলটি। ইনিংসের প্রথম ওভারের চতুর্থ বলেই স্যাম বিলিংসকে (৪) ফিরিয়ে দেন মহম্মদ সামি। তৃতীয় ওভারে বল করতে এসে অপর ওপেনার সুনীল নারিনকেও (৫) ফিরিয়ে নাইট শিবিরে দ্বিতীয় ধাক্কাটি দেন সামিই। পঞ্চম ওভারে নীতিশ রানাকে ফেরান (২) ফার্গুসন। এরপরে অধিনায়ক শ্রেয়স আইয়ার (১২) দয়ালের শিকার হয়ে প্যাভিলিয়নে ফিরে দলের বিপদ আরও বাড়িয়ে দেন। এরপর রিঙ্কু সিং এবং ভেঙ্কটেশ আইয়ার মিলে খাদের কিনারা থেকে দলকে টেনে তোলার চেষ্টা করেছিলেন। কিন্তু ২৮ বলে ৪ বাউন্ডারি ও এক ওভার বাউন্ডারি সাহায্যে ৩৫ রান করা রিঙ্কুকে ফিরিয়ে নাইট শিবিরে পঞ্চম ধাক্কাটি দেন সেই দয়াল। তখন নাইটদের রান ৭৯। এরপরই শুরু হয় রাসেল ঝড়। উল্টোদিকে ভেঙ্কটেশ আইয়ার (১৭), শিভম মাভি (২) রশিদ খানের শিকার হয়ে ফিরে গেলেও নাইটদের শেষ আশাটুকু বাঁচিয়ে রেখেছিলেন রাসেল। ক্যারিবিয়ান ব্যাটিং জায়ান্ট এবং উমেশ যাদব মিলে দলকে প্রায় জয়ের দোরগোড়ায় পৌঁছে দিয়েছিলেন। শেষ ওভারে নাইটদের জয়ের জন্য দরকার ছিল ১৮ রান। ২০তম ওভারে জোসেফের প্রথম বলেই ছক্কা হাঁকিয়ে নাইটদের জয়ের আশা আরও উজ্জ্বল করেন আন্দ্রে রাস। কিন্তু দ্বিতীয় বলে আবারও তুলে মারতে গিয়ে ফার্গুসনের হাতে জমা পড়ে যান। আর সেখানেই নাইটদের চতুর্থ জয়ের আশা শেষ হয়ে যায়। ৮ উইকেটে ১৪৮ রানেই থেমে যায় নাইটদের ইনিংস। ২৫ বলে একটি বাউন্ডারি ও হাফডজন ওভার বাউন্ডারির সাহায্যে ৪৮ রান করে ফেরেন রাসেল। উল্টোদিকে ১৫ বলে একটি করে বাউন্ডারি ও ওভার বাউন্ডারির সাহায্যে ১৫ রান করে অপরাজিত থেকে যান উমেশ যাদব। ৪ ওভারে ২২ রান দিয়ে ২ উইকেট নিয়ে ম্যাচের সেরা হয়েছেন রশিদ খান। এছাড়াও গুজরাতের হয়ে সামি ও দয়াল দু’টি করে এবং জোসেফ ও ফার্গুসন একটি করে উইকেট পেয়েছেন।