বাংলার খবর
চাকরির পরীক্ষায় পাশ করেও লিস্টে নাম না থাকায় আত্মঘাতী যুবক

বেঙ্গল এক্সপ্রেস নিউজ : শিক্ষা, মেধা সব ছিল। ছিল অসাধারণ পরিশ্রম করার ক্ষমতা এবং চেষ্টা। কিন্তু, ছিল না কোনও চাকরি। আর তাই পরিস্থিতির সাথে লড়াইয়ে হেরে গেলেন এক তরতাজা যুবক। শোনা যাচ্ছে মানসিক অবসাদে আত্মঘাতী হয়েছেন ওই যুবক। এলাকা জুরে নেমে এসেছে শোকের ছায়া। ঘটনাটি ঘটেছে মুর্শিদাবাদ জেলার বরঞা গ্রামে। মুর্শিদাবাদ জেলার বরঞা গ্রামের বাসিন্দা খুব দরিদ্র পরিবারের ছেলে বাবু দলুই। ছোটবেলা থেকেই খুব মেধাবী ছিলেন বাবু।
গত সাত বছর আগে তাঁর বাবা মারা যায়। বছর দুই আগে মাও মারা যান । বাবা-মা দু’জনকে হারিয়েও নিজের চেষ্টা এবং অদম্য জেদের জোরে নিজেকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছিলেন বাবু। কিন্তু এবার সব থেমে গেল। শোনা যাচ্ছে পড়াশোনায় খুব মেধাবী ছিলেন বাবু। মাধ্যমিকে ৭৮%, উচ্চ মাধ্যমিকে ৭৫% এবং ইংরেজি নিয়ে স্নাতক হওয়ার পর সরকারি কেন্দ্র থেকে সম্পূর্ণ করেছিলেন প্রাথমিক শিক্ষকের ডিএলএড- এর প্রশিক্ষণ। এছাড়া একের পর এক চাকরির পরীক্ষা দেওয়ার পাশাপাশি নিজের খরচ চালাতে দিনমজুরি করতেও দ্বিধা করেনি বাবু। একটা সময় দিনমজুরের কাজ করতে কলকাতায় এসেছিলেন বাবু। সেখানে কাজ করার সময়ে জানতে পারেন পিএসসি-তে পাশ করার সুবাদে তাঁর নাম সেরা ছ’হাজারের মধ্যে আছে।
খবর পেয়ে খুব আনন্দ পেয়ে বাড়ি ফিরে আসেন। কিন্তু সেই আনন্দ বেশিদিন স্থায়ী হয়নি। বীরভূমে রামপুরহাটের বাসিন্দা বাবুর এক জামাইবাবু তমাল দলুই জানিয়ছেন, কলকাতাতেই ছিলেন বাবু। পিএসসি লিস্টে সেরা ছয় হাজারে তাঁর নাম থাকায় খুব আনন্দ পেয়ে চলে এসেছিল জামাইবাবুর বাড়িতে। জামাইবাবু তাঁকে টাইপিং স্কুলে ভর্তিও করে দিয়েছিলেন। কিন্তু প্রথম লিস্ট বাতিল হওয়ায় পিএসসি বোর্ড দ্বিতীয় লিস্ট বের করে। কিন্তু সেখানে বাবুর নাম আঠারো হাজারে চলে যায়। মন খারাপ করে নিজের গ্রামে ফিরে যান বাবু। কিন্তু এবার সবচেয়ে খারাপ খবর শুনে খুব ভেঙে পড়েন বাবুর জামাইবাবু। বাবুর জামাই বাবু জানিয়েছেন, একটা সুইসাইড নোট লিখে রেখে গিয়েছেন বাবু। তাতে লেখা আছে, ‘আমি বাবু দলুই। বিদায় নিচ্ছি। আমাদের সমাজ এবং রাজ্য খুব খারাপ।’ একরাশ হতাশা এবং ক্ষোভ প্রকাশ করে আত্মঘাতী হয়েছেন গরীব পরিবারের এই মেধাবী ছাত্র।