সভা চলাকালীন অসুস্থ ছাত্রী, বক্তব্য থামিয়ে নিজেই শুশ্রূষা করলেন ‘মানবিক’ মুখ্যমন্ত্রী

বেঙ্গল এক্সপ্রেস নিউজ: তিনদিনের উত্তরবঙ্গ সফরে সোমবারই আলিপুরদুয়ার পৌঁছেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। মঙ্গলবার আলিপুরদুয়ার প্যারেড গ্রাউন্ডে দলীয় কর্মী সভা করেন তৃণমূল নেত্রী। সেই সভাতেই আরও একবার মানবিক মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে দেখল গোটা রাজ্য।

মঙ্গলবার মুখ্যমন্ত্রীর ভাষণ চলাকালীন রোদের তেজ এবং আর্দ্রতা জনিত কারণে অসুস্থ হয়ে পড়ে মঞ্চের পাশেই দাঁড়িয়ে থাকা এক ছাত্রী। অসুস্থ হয়ে সে মাটিতে পড়ে যায়। যা চোখ এড়িয়ে যায়নি তৃণমূল নেত্রীর। সঙ্গে সঙ্গেই বক্তব্য থামিয়ে ছুটে যান তিনি সেদিকে। মঞ্চ থেকেই নিজের জলের বোতল ছুড়ে দেন মঞ্চের নিচে দাঁড়িয়ে থাকা তৃণমূল কর্মীদের দিকে। ওই ছাত্রীর চোখে-মুখে দ্রুত জল দেওয়ার পরামর্শ দেন তিনি। আরও জলের বোতল নিয়ে আসতে বলেন। এবং সঙ্গে সঙ্গে ওই কর্মীকে চিকিৎসকের কাছে নিয়ে যাওয়ার নির্দেশও দেন।

এরপর তৃণমূল নেত্রী তাঁর বক্তৃতা সেখানেই থামিয়ে দিয়ে বলেন, ‘আপনারা উতলা হবেন না। আমরা বিষয়টা দেখছি। আমাদের এখানে চিকিৎসক আছেন। তাঁকে ডেকে নিয়ে আসো। গরমে এবং ডিহাইড্রেশন থেকেই এরকমটা হতে পারে। আমি মিটিংটা এখানেই শেষ করছি। ওর যত্ন নিতে হবে। চিকিৎসার ব্যবস্থা করি আগে। এরকম মিটিং পরে অনেক হবে। পরেও কথা বলা যেতে পারে। আমি এখানেই আমার বক্তব্য শেষ করছি।’

এরপরই অসুস্থ হয়ে পড়া ওই ছাত্রী মুসকান পরভিন ও তার মাকে মঞ্চে ডেকে নেন মুখ্যমন্ত্রী। ওই ছাত্রীকে চেয়ারে বসিয়ে নিজেই শুশ্রূষা শুরু করেন। পাশেই দাঁড়িয়ে থাকা মন্ত্রী অরূপ বিশ্বাসের গলা থেকে উত্তরীয় খুলে নিয়ে নিজেই ওই ছাত্রীর চোখ, মুখ মুছিয়ে দিয়ে তার গায়ে জড়িয়ে দেন। এবং ওই পড়ুয়ার মায়ের কাছ থেকেও ওড়না নিয়ে ওই ছাত্রীর গায়ে জড়িয়ে দেন মুখ্যমন্ত্রী। জানা গিয়েছে, মুসকানের বাড়ি বীরপাড়ায়। এরপরই মুখ্যমন্ত্রী কথামতো অসুস্থ ওই ছাত্রীকে নিয়ে যাওয়া হয় স্থানীয় সরকারি হাসপাতালে। সেখানেই তাকে চিকিৎসকরা প্রাথমিক চিকিৎসা করার পর ছেড়ে দেন। বর্তমানে মুসকান ভালো আছে বলেই জানা গিয়েছে। মুখ্যমন্ত্রীর এই মানবিক রূপ দেখে আপ্লুত মুসকান এবং তার মা।