বাংলার খবর
স্বনির্ভর গোষ্ঠী গড়ে প্রত্যন্ত গ্রামাঞ্চলের মহিলাদের রোজগারের পথ দেখাচ্ছেন ওঁরা

বেঙ্গল এক্সপ্রেস নিউজ: আমাদের সমাজে প্রায় অর্ধেক শ্রমশক্তির মূলে রয়েছেন মহিলারা। মহিলারা বিভিন্ন ক্ষেত্রে প্রতিষ্ঠিত হলেও প্রত্যন্ত এলাকার মহিলারা আত্মনির্ভরশীল হওয়ার ক্ষেত্রে অনেকটাই পিছিয়ে ছিল। বৃহত্তর জনসমাজে নারী সমাজকে আত্মনির্ভরশীল হিসাবে গড়ে তুলতে এই শতাব্দীর গোড়া থেকে স্বনির্ভর গোষ্ঠী গঠন করার কাজ শুরু হয়েছে।
ব্যাঙ্ক থেকে ঋণ নিয়ে বিভিন্ন ব্যবসা করে এই স্বনির্ভর গোষ্ঠীর মাধ্যমে বহু মহিলা আজ সমাজে প্রতিষ্ঠিত। অনেকে আবার শুধু নিজে নয় গোষ্ঠীর অন্যান্য মহিলাদেরও মাসিক রোজগারের পথ দেখিয়েছেন।
ঠিক এইরকম এক মহিলা স্বনির্ভর গোষ্ঠীর নেত্রীর নাম দেবী ছেত্রী। বাড়ি ডুয়ার্সের পাহাড় ঘেঁষা বিভিন্ন জনজাতির বাস মালবাজার শহর থেকে ১০ কিমি দূরে প্রত্যন্ত ডালিমকোট চা বাগানে।
একবিংশ শতাব্দীর যুগে দাঁড়িয়ে অনেকেরই স্বনির্ভর গোষ্ঠী সম্পর্কে ধারণা নেই। সেই সময় প্রত্যন্ত চা বাগানের এই মহিলা ওই চা বাগানের অন্য ১১ জন মহিলাকে নিয়ে গড়ে তোলেন স্বনির্ভর গোষ্ঠী। নাম দেন মধুমালা সেল্ফ হেল্প গ্রুপ। এরপর ২০০৪ সালে মাল বিডিও চত্বরে একটি ক্যান্টিন চালানোর কাজে হাত দেন।
আরও পড়ুন: সরকারি চাকরির দেওয়ার নামে লক্ষাধিক টাকার প্রতারণা, কাঠগড়ায় স্কুল শিক্ষক
গোটা ব্লকের বহু মানুষ নানান কাজে বিডিও অফিসে আসেন। তাঁদের দুপুরের খাবার, চা সহ অন্যান্য খাদ্যসামগ্রী সরবরাহ করার কাজ শুরু করেন তাঁরা। নিজেরাই রান্না করা থেকে থেকে বাসন মাজার কাজ করে ব্যবসা শুরু করেন। প্রথমে কাজ সহজ ছিল না। সাতসকালে ১০ কিমি পথ পেরিয়ে বাড়ির কাজ সেরে অন্যান্য মহিলাদের নিয়ে শহরে আসা। তারপর উনুন ধরিয়ে রান্না করা, মানুষকে খেতে দেওয়া প্রভৃতি কাজ করতে হতো।
সেসময় বিডিও অফিস সংলগ্ন এলাকায় দোকানপত্র সেরকম ছিল না। ব্যবসা খুব বেশি ভালো হতো না। তবু হাল ছাড়েননি লড়াই চালিয়ে গিয়েছেন অন্যান্যদের নিয়ে। বর্তমানে মাল বিডিও অফিস চত্বর এলাকা ভালো ব্যবসার জায়গা। রয়েছে অন্যান্য বেশ কয়েকটি সরকারি দফতর। প্রতিদিনই ব্যবসা হয়। দীর্ঘ ১৮ বছর ধরে লড়াই চালিয়ে বর্তমানে শুধু ক্যান্টিন নয়, গণ বন্টনেরও কাজে হাত দিয়েছেন।
আরও পড়ুন: দূরারোগ্য ব্যাধিতে আক্রান্ত মেয়ে, অথৈ জলে পরিবার
পাশাপাশি নিজের সংসারের কাজও সামলাচ্ছেন তাঁরা। এই বিষয়ে স্বনির্ভর গোষ্ঠীর নেত্রী দেবী ছেত্রী বলেন,”আগে তো এখনকার মতো সুবিধা ছিল না। বর্তমান সরকার স্বনির্ভর গোষ্ঠীদের ঋণ দেয় স্বনির্ভর হওয়ার জন্য। এখন রাস্তাঘাট থেকে শুরু করে যোগাযোগ ব্যবস্থা সব ভালো। তাই এখন অনেক সুবিধা।”