বিনোদন
দিল্লিতেও জয়জয়কার সাঁওতালি চলচ্চিত্র ‘আশা’র, সেরা অভিনেত্রীর পুরস্কার জিতলেন ডগর টুডু
বেঙ্গল এক্সপ্রেস নিউজ : দর্শক মহলে উচ্চ প্রশংসিত হয়েছিল আগেই। এবার পুরস্কারও জিতে নিল পল্লব রায় পরিচালিত সাঁওতালি চলচ্চিত্র ‘আশা’। দিল্লিতে অনুষ্ঠিত ১২তম দাদা সাহেব ফালকে ফিল্ম ফেস্টিভ্যালে ‘আশা’ চলচ্চিত্রে অসামান্য অভিনয়ের জন্য সেরা অভিনেত্রীর পুরস্কার পেলেন সাঁওতালি চলচ্চিত্রের জনপ্রিয় অভিনেত্রী ডগর টুডু। ছবিটির মুখ্য চরিত্রে বিশেষ ভাবে সক্ষম এক তরুণীর ভূমিকায় অভিনয় করেছেন ডগর। ছবিটির প্রযোজনা করেছেন কল্যাণী সলভেক্স প্রাইভেট লিমিটেডের অন্যতম কর্ণধার কৃষ্ণ কল্যাণী।
প্রায় এক ঘণ্টা ৫০ মিনিটের চলচ্চিত্রটির প্রেক্ষাপট তৈরি হয়েছে বিশেষ ভাবে সক্ষম এক আদিবাসী তরুণীর অসম জীবন যুদ্ধের লড়াইকে নিয়ে। সমাজের চোখে সে মূল্যহীন এবং উপেক্ষিতা। হাজারও লাঞ্ছনা, গঞ্জনা সহ্য করলেও জীবনের যুদ্ধে হার মানেনি। হাজার প্রতিকূলতার মধ্যেও জীবনের সব রং সে ফুটিয়ে তুলেছে সাদা ক্যানভাসে। অন্ধকারের মধ্যে থেকেও জ্বেলেছে আলো। ‘শারীরিক অক্ষমতা আমাদের সমাজে অক্ষমতা নয়, মানসিক অক্ষমতাই প্রকৃত অক্ষমতা’- ছবিটির মাধ্যমে এই বার্তাই সমাজের কাছে পৌঁছে দেওয়ার চেষ্টা করেছেন পরিচালক পল্লব রায়। আর অসামন্য দক্ষতা দিয়ে চরিত্রটিকে পর্দায় ফুটিয়ে তুলেছেন ডগর। যা যথেষ্ট তারিফযোগ্য। তারই স্বীকৃতি পেলেন ডগর।
গত শুক্রবার ২৭তম কলকাতা আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবেও প্রদর্শিত হয়েছিল ‘আশা’। এই প্রথম বাংলা থেকে তৈরি সাঁওতালি ভাষায় কোনও পূর্ণ দৈর্ঘ্যের সিনেমা দেখানো হয় কলকাতা চলচ্চিত্র উৎসবে। এবারের কলকাতা ফিল্ম ফেস্টিভ্যালের অন্যতম আকর্ষণই ছিল সাঁওতালি ভাষার এই ছবিটি। এবং দর্শক মহলে ছবিটির পাশাপাশি আলাদা করে যথেষ্ট প্রশংসিত হয়েছে ডগরের অভিনয়ও। রাজ্যের গণ্ডি পেরিয়ে এবার রাজধানী দিল্লিতেও প্রশংসা আদায় করে নিয়েছে ‘আশা’। শনিবার ১২তম দাদাসাহেব ফালকে চলচ্চিত্র উৎসবেও প্রদর্শিত হয়েছিল ছবিটি। সেখানেও সিনে প্রেমীদের মন জিতে নিয়েছে ‘আশা’ ও ডগরের অভিনয়। তবে দিল্লিতে বাড়তি প্রাপ্তি ডগরের সেরা অভিনেত্রীর পুরস্কার পাওয়া।
এই ধরনের কঠিন চরিত্রে অভিনয় করে দর্শকদের মন জয় করতে পেরে এবং পুরস্কার পাওয়ায় খুশি তিনিও। কঠোর পরিশ্রমের ফল পেলেন বলছেন ডগর। এই পুরস্কার তাঁকে আরও ভালো অভিনয় করতে অনুপ্রাণিত করবে বলেই জানিয়েছেন তিনি। সদ্য মুক্তি পাওয়া এই ছবি ইতিমধ্যেই বিভিন্ন মহলে প্রশংসা কুড়িয়েছে। শুক্রবার নন্দনে ‘আশা’ ছবিটি দেখতে উপস্থিত ছিলেন রাজ্যের বনদফতরের রাষ্ট্রমন্ত্রী বিরবাহা হাঁসদা। প্রশংসা করার পাশাপাশি ছবিটি দেখে উচ্ছ্বসিত হন তিনিও। ভবিষ্যতে সাঁওতালি ভাষায় এ ধরনের আরও ভালো ভালো ছবি তৈরি হবে বলেও আশা প্রকাশ করেছিলেন তিনি। নন্দনের পাশাপাশি, শনিবার দিল্লিতেও ছবিটি দেখতে সিনে প্রেমীদের ভিড় ছিল চোখে পড়ার মতো।