বাংলার খবর
আপনি কি প্রধানমন্ত্রী হতে চান? স্পষ্ট জবাব দিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়
বেঙ্গল এক্সপ্রেস নিউজ: একুশের বিধানসভা নির্বাচনে বিপুল জনসমর্থন নিয়ে তৃতীয়বারের জন্য রাজ্যে ক্ষমতা এসেছে তৃণমূল। তারপরই গোয়া, ত্রিপুরা, মণিপুরের মতো রাজ্যগুলিতে সংগঠন বিস্তারেও জোর দিয়েছে। রাজ্যের গণ্ডি পেরিয়ে জাতীয় রাজনীতিতে তৃণমূল কংগ্রেসের গুরুত্ব বাড়াতে সচেষ্ট মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়রা। তাঁদের পরবর্তী লক্ষ্য যে ২৪ এর লোকসভা নির্বাচন, তা অনেক আগেই জানিয়ে দিয়েছেন তৃণমূল সুপ্রিম। ইতিমধ্যেই জাতীয় রাজনীতিতে অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ বিরোধী মুখ হয়ে উঠেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। রাজনৈতিক মহলের একাংশ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কেই দেশের পরবর্তী প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দেখতে শুরু করে দিয়েছেন। কিন্তু এই নিয়ে তিনি কী ভাবছেন, তা সোমবার পরিষ্কার করে জানিয়ে দিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
তাঁকে কি ভবিষ্যতে দেশের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দেখা যাবে? এই প্রশ্নের উত্তরে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছেন, ‘বড় পদ নিয়ে আমার কোনদিনই কোনও আগ্রহ ছিল না। এখনও নেই। পদের জন্য আমি কিছু করি না। আমরা আত্মত্যাগ করে দেশের উন্নতির জন্য কাজ করি। আমাদের মহিলারা, কৃষকরা, শ্রমিকরা যাতে হাসেন, সেই লক্ষ্য নিয়েই আমরা কাজ করি।’
মহারাষ্ট্র রাজনৈতিক পরিস্থিতি থেকে শুরু করে নিজের প্রধানমন্ত্রী হওয়া, কংগ্রেসের সঙ্গে জোট, সবকিছু নিয়েই খোলামেলা কথা বললেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। জাতীয় রাজনীতি নিয়ে আলোচনা প্রসঙ্গে মহারাষ্ট্রের রাজনৈতিক পরিস্থিতির কথা উঠতেই বিজেপিকে তীব্র ভাষায় আক্রমণ করেছেন তৃণমূল সুপ্রিমো। বিজেপির ভূমিকা নিয়ে ক্ষোভপ্রকাশ করার পাশাপাশি তিনি অভিযোগ করেছেন, বিক্ষুব্ধ শিবসেনা বিধায়কদের বিজেপি শুধু টাকাই দেয়নি, এছাড়া আরও অনেক কিছুই দিয়েছেন।
রাষ্ট্রপতি নির্বাচনের জন্য বিরোধী দল গুলোর পাশাপাশি কংগ্রেসের সঙ্গে আলোচনা করলেও রাজ্যে নির্বাচনী লড়াইয়ের ক্ষেত্রে কংগ্রেসকে যে তিনি কোনও জায়গা দেবেন না, তাও সোমবার পরিষ্কার করে জানিয়ে দিয়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এই প্রসঙ্গে তিনি বলেছেন, ‘আমরা পশ্চিমবঙ্গে কেন কংগ্রেসকে আসন দেব? ওরা রাজ্যে আমাদের বিরুদ্ধে লড়াই করে। কংগ্রেস গত দশ বছর ধরে বামেদের সঙ্গে মিলে তৃণমূলের বিরুদ্ধে লড়াই করছে। এত কংগ্রেস কংগ্রেস কেন করছেন? আমার বড় হওয়ার কোনও সাধ নেই। আমি কোনও কিছুতেই আগ্রহী নই। আমার কাছে সবার আগে হল দেশ। আমি অন্য দলকে নিয়ে কিছু বলবো না। ওরা সিপিআইএম, বিজেপির সঙ্গে হাত মিলিয়েছে। তাই রাজ্যে কংগ্রেসকে আমি আসন ছাড়বো না।’
সোমবারের এই আলোচনা সভায় রাজনীতিতে পরিবারতন্ত্র নিয়েও কথা ওঠে। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ভাইপো অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় ডায়মন্ড হারবারের সাংসদ হওয়ার পাশাপাশি দলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক। তবে তার মধ্যে কিছু অন্যায় দেখছেন না মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। উল্টে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহর পুত্র জয় শাহর ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ডের সচিব হওয়ার উদাহরণ টেনে তৃণমূল নেত্রী বলেছেন, ‘আমার পরিবার থেকে যদি কেউ একজন রাজনীতিতে থাকে, তাহলে ক্ষতির কী আছে? নতুনদেরও তো রাজনীতিতে সুযোগ দিতে হবে। একজন তো নিজেই তাঁর ছেলেকে ক্রিকেট বোর্ডে বসিয়ে পরিবারতন্ত্র নিয়ে কথা বলছেন!’ তাহলে শুধু ভাইপো ভাইপো কেন করেন? অভিষেককে গিয়ে প্রশ্ন করুন। আমি কারও দায়িত্ব নিতে পারব না।’