আন্তর্জাতিক
পাকিস্তানে কলেরার প্রাদুর্ভাব, হাসপাতালে ভর্তি প্রায় ২ হাজার শিশু

বেঙ্গল এক্সপ্রেস: ডায়রিয়ার প্রকোপে বিধ্বস্ত প্রতিবেশী দেশ। গত এপ্রিল মাসের ১ তারিখ থেকে এ পর্যন্ত পেটের রোগ নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি রয়েছে অন্তত ২ হাজার শিশু। ঘটনায় আতঙ্ক ছড়িয়েছে এলাকায়।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, খাবার অথবা পানীয় জলে আর্সেনিকের বিষক্রিয়ার কারণে ধাপে-ধাপে এত শিশু কলেরা রোগে আক্রান্ত হয়েছে। ঘটনাটি ঘটেছে পাকিস্তানের লাহোরে (Lahore)। পাঞ্জাবের কমিউনিকেবল ডিজিজ কন্ট্রোল (সিডিসি) বিভাগ জানিয়েছে, ডায়রিয়ার কারণে পাকিস্তানের লাহোরে গত ১ এপ্রিল থেকে প্রায় ২,০০০ শিশু হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে।
প্রাথমিক ভাবে মনে করা হচ্ছে, Vibrio cholerea bacteria-এর সংক্রমণের কারণে এই রোগের প্রাদুর্ভাব শুরু হয়েছে লাহোরে। হাসপাতালে ভর্তি শিশুদের মধ্যে ৯ জনের অবস্থা অত্যন্ত আশঙ্কাজনক বলে জানিয়েছে পাঞ্জাবের কমিউনিকেবল ডিজিজ কন্ট্রোল দফতরের আধিকারিকরা। এই বিষয়ে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (WHO) এটিকে বিশ্বব্যাপী অসমতা ও সামাজিক উন্নয়নের অভাবের সূচক হিসেবে বর্ণনা করেছে।
আরও পড়ুন: আন্তর্জাতিক বাজারে বন্ধ গম রফতানি, ভারতের সিদ্ধান্তের প্রতিবাদ জার্মান কৃষিমন্ত্রীর
এই পরিসংখ্যান লাহোরের সরকারি সেক্টর টিচিং হাসপাতালগুলি থেকে নেওয়া হয়েছিল। সমীক্ষায় বলা হয়েছে যে, বেসরকারি খাতের স্বাস্থ্যসেবা সুবিধা এবং সাধারণ অনুশীলনকারীদের রিপোর্ট করা মামলাগুলি সিডিসি দ্বারা ভাগ করা পরিসংখ্যানের চেয়ে বেশি হতে পারে।
জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা আশঙ্কা করছেন, শহরের কয়েক দশকের পুরনো পয়ঃনিষ্কাশন ব্যবস্থার কারণে পানীয় জল সরবরাহের লাইনগুলি দূষিত হতে পারে। লাহোরের চিলড্রেন’স হসপিটালের হিসেব বলছে, লাহোরের একটি সরকারি হাসপাতালে প্রতিদিন প্রায় ৫০০ লোক তাঁদের কাছে ডায়রিয়ার সংক্রমণ নিয়ে হাজির হচ্ছেন।
ওই শিশু হাসপাতালের পেডিয়াট্রিক মেডিসিন বিভাগের অধ্যাপক জুনায়েদ আরশাদ পাক সংবাদ মাধ্যম ‘ডন’কে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে বলেন, ”আমরা প্রতিদিন প্রায় ৫০জন শিশুকে তীব্র ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হতে দেখছি। যে সংখ্যাটি গত বছরের থেকেও অনেক বেশি।”
এই বিষয়ে পাকিস্তান একাডেমি অফ ফ্যামিলি ফিজিশিয়ানস অভিযোগ করেছে, ডায়রিয়ায় আক্রান্তের প্রকৃত সংখ্যা লুকিয়ে যাচ্ছে সরকার। তাঁর দাবি ডায়রিয়ায় এর থেকেই বেশি আক্রান্ত হয়েছে। তিনি অনুমান করেছেন যে, পাঞ্জাবের মোট ৬০,০০০ ফ্যামিলি চিকিত্সকের মধ্যে ৫০ শতাংশ লাহোরে কাজ করছেন এবং তাদের মোট রোগীর ৪০ শতাংশের ডায়রিয়া হয়েছে।
আরও পড়ুন: পুতিন ‘পাগল’ হয়ে গিয়েছেন, দাবি রুশ ধনকুবেরের
ডাঃ তারিক আরও বলেন, ”রোগ নিয়ন্ত্রণে পারিবারিক চিকিৎসকরা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারেন।” ভাঙ্গা পয়ঃনিষ্কাশনের কারণে শহরের পানীয় জল যাতে দূষিত না হয় তা নিশ্চিত করতে কর্মকর্তাদের সক্রিয় করার জন্য বিভাগ লাহোর কমিশনারকে চিঠি দিয়েছে তিনি। তিনি আরও বলেন, ”উন্নত স্যানিটেশন ও পয়ঃনিষ্কাশন ব্যবস্থার মাধ্যমে ডায়রিয়ার প্রাদুর্ভাব রোধ করা যেতে পারে।”