বাংলার খবর
গঙ্গাসাগর মেলা নিয়ে শুনানি শেষ হলেও রায়দান স্থগিত রাখল আদালত, নতুন করে মেলা বন্ধের আবেদন চিকিৎসকদের

বেঙ্গল এক্সপ্রেস নিউজ: গঙ্গাসাগর মেলা নিয়ে শুনানি শেষ হলেও রায়দান স্থগিত রাখল কলকাতা হাইকোর্ট। গঙ্গাসাগরের মেলা নিয়ে হাইকোর্টের গঠিত তিন সদস্যের কমিটিতে রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী কে রাখা নিয়ে আপত্তি তোলে রাজ্য সরকার।
আদালতের কাছে এই রায় পুনর্বিবেচনার পাশাপাশি কমিটি পুনর্গঠনের দাবি জানানো হয় রাজ্যের পক্ষ থেকে। এদিন সেই দাবি নিয়েই শুনানি ছিল আদালতে। শুনানিতে রাজ্যের তরফে এডভোকেট জেনারেল সৌমেন্দ্রনাথ মুখোপাধ্যায় প্রশ্ন তোলেন, স্বাধীন কমিটি করতে চিকিৎসকদের যদি বাদ দেওয়া হয়, তাহলে শুভেন্দু অধিকারী কেন থাকবেন কমিটিতে? চিকিৎসক সুকুমার মুখোপাধ্যায়ের মতো মানুষের থাকা দরকার বলে দাবি করেন এজি। এরপর বিচারপতি বলেন, ‘এখন যে সংক্রমণ চলছে সেটা কি অস্বীকার করেন? রাজ্যের কি উচিৎ নয় আরও সঠিক পদ্ধতিতে মেলার আয়োজন করা?’ তার উত্তরে এজি জানান, আরটিপিসিআর টেস্ট করছে রাজ্য।
অন্যতম মামলাকারী কবিরুল ইসলাম আদালতে বলেন, মানবাধিকার কমিশনের কোনও চেয়ারম্যান নেই। কমিটিতে ভাইরোলজিস্ট অমিতাভ নন্দী, অভিজিৎ চৌধুরীর মতো স্পেশালিষ্ট চিকিৎসকদের রাখার দাবি জানান তিনি। তার পরিপ্রেক্ষিতে ভারত সেবাশ্রমের মতো সংস্থা ও এনজিওদের কমিটিতে রাখার আবেদন জানান এজি। আরেক মামলাকারী অজয় কুমার দে’র আইনজীবী বিকাশ ভট্টাচার্য্য প্রশ্ন তোলেন, কমিটিতে চিকিৎসকরা না থাকলে পাবলিক হেলথ নিয়ে কমিটি কাজ করবে কী ভাবে! তিনি মানস গুমটা, সুব্রত গোস্বামীর মতো চিকিৎসকদের নাম কমিটিতে রাখার জন্য প্রস্তাব করেন।
চিকিৎসক ছাড়া কমিটিতে আর কাউকে রাখার দরকার নেই বলেও জানান তিনি। অন্য মামলাকারী পুষ্পক চক্রবর্তী এদিনের শুনানিতে দাবি করেন, কমিটিতে এমন কোনও সদস্যই নেই যিনি পরিস্থিতি সামাল দিতে পারেন। তাই তিনিও কমিটিতে ভাইরোলজিস্টদের রাখার কথা বলেন। এদিন রিজু ঘোষালের আইনজীবীর দাবি, এই ধরণের কমিটিতে কুণাল সরকারের মতো চিকিৎসকদের রাখা প্রয়োজন। এদিন আদালতে নতুন করে গঙ্গাসাগর মেলা বন্ধের আবেদন জানিয়েছেন চিকিৎসকরাও। এ দিন চিকিৎসকদের পক্ষ থেকে অনিরুদ্ধ চট্টোপাধ্যায় আদালতে জানান, ইতিমধ্যেই ৫৩ শতাংশ সংক্রমণ হয়েছে। তিনি অনুরোধ করেন, আদালত যেন স্বতঃপ্রণোদিত পদক্ষেপ করে গোটা মেলা বন্ধ করে দেয়। তাঁদের দাবি ইতিমধ্যেই ৫০ হাজারের বেশি মানুষ গঙ্গাসাগরে পৌঁছে গিয়েছেন। মেলায় মানুষের ঢোকার ও বেরনোর ওপর কোনও নিয়ন্ত্রণ নেই। ফলে সংক্রমণ ভয়ঙ্কর পর্যায়ে পৌঁছবে। সব পক্ষের মতামত শোনার পর প্রধান বিচারপতি রায়দান স্থগিত রেখেছেন।