বাংলার খবর
রাজ্যের বন্যা পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বিগ্ন সেচমন্ত্রী, বাতিল করলেন সেচ দফতরের ছুটি

বেঙ্গল এক্সপ্রেস নিউজ : প্রবল বৃষ্টি তারসঙ্গে ডিভিসি জল ছাড়ায় হাওড়া, হুগলি, পূর্ব বর্ধমান, পশ্চিম বর্ধমান, বীরভূম এবং পশ্চিম মেদিনীপুরের বিস্তীর্ণ এলাকা প্লাবিত হয়ে গিয়েছে। পুজোর আগেই রাজ্যের একাধিক জেলায় বন্যা পরিস্থিতি তৈরি হওয়ায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন সেচমন্ত্রী সৌমেন মহাপাত্র। বন্যা পরিস্থিতি মোকাবিলায় সেচ দফতরের সমস্ত কর্মীদের ছুটিও বাতিল করে দিয়েছেন তিনি। সেচমন্ত্রী বলেছেন, ‘মাত্রাতিরিক্ত বৃষ্টি হওয়ার ফলে রাজ্যের তিনশো থেকে সাড়ে তিনশ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে। বৃহস্পতিবার দুর্গাপুর ব্যারেজ ২ লক্ষ ৭৫ হাজার কিউসেক জল ছেড়েছিল।
শুক্রবার তা কমিয়ে ১ লক্ষ ৯৪ হাজার কিউসেক জল ছাড়ে। ব্যায়েজগুলোর অতিরিক্ত জল ছাড়ার প্রভাব এখনও না পড়লেও খানাকুল, উদয়নারায়ণপুর, আমতা ১ ও ২ এলাকা গুলো বন্যার প্রকপে পড়বে। আমরা আগে থেকেই বৃষ্টি ও নিম্নচাপের প্রস্তুতি নিয়ে ছিলাম। কতটা জল বাড়ে তার জন্য আগাম প্রস্তুতি নিয়ে রেখেছি। কিন্তু যে হারে জল বাড়ছে তাতে রাতারাতি নদী বাঁধের উচ্চতা এই মুহূর্তে বাড়িয়ে দেওয়া সম্ভব নয়। বাঁধ টপকে জল ঢুকবে। তবে জনগনকে সজাগ করা হয়েছে। পাশাপাশি ত্রাণ শিবিরও খোলা হয়েছে। ইতিমধ্যেই জোনে ভাগ করে মন্ত্রীদের হাতে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। তাঁরা বন্যা কবলিত এলাকা ঘুরে দেখবেন। আমরা সেচ দফতরের তরফে সবরকম ভাবে চেষ্টা করছি। ইতিমধ্যেই সকল আধিকারিকদের ছুটি বাতিল করা হয়েছে।’ মন্ত্রী জানিয়েছেন, ‘দ্বারকেশ্বর, গন্ধেশ্বরী, বাঁকুড়া এলাকায় বৃহস্পতিবার জল ছাড়ার পরিমাণ ছিল ১ লক্ষ ২০ হাজার কিউসেক।
শুক্রবার তা দাঁড়িয়েছে ৩৪ হাজার কিউসেকে। সেই কারণে প্লাবিত হওয়ার আশঙ্কা করেছিলাম। তবে জলের গভীরতা কমেছে। বৃহস্পতিবার শিকাটিয়া ব্যারেজ থেকে ৯০ হাজার কিউসেক জল ছাড়ার ফলে অজয় নদের জল ঢুকছে বীরভূমের নানুরে। শুক্রবার তা কমিয়ে ৮০ হাজার কিউসেকে করা হয়েছে। তবে এখনও পর্যন্ত নানুরে বন্যা পরিস্থিতি তেমন ভয়ঙ্কর রূপ নেয়নি। কংসাবতী ব্যারেজের জল অনেকটা কমেছে। তবে ঘাটাল, পাঁশকুড়া, ময়না,দুর্গাঝুটির নদী বিপদসীমার ওপর দিয়ে বইছে। এখনও পর্যন্ত বাঁধগুলি ঠিকঠাক রাখা গিয়েছে। আরামবাগে কয়েকটা ব্রীজ ভেঙে গন্ধেশ্বরী নদীর জল বিস্তীর্ণ এলাকা প্লাবিত করেছে। বন্দর, খানাকুল, ঘাটালে জলস্তর বাড়তে পারে।
সার্বিক ভাবে এখনও পর্যন্ত নদীবাঁধ গুলি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। তবে আরও বৃষ্টি হলে বন্যা পরিস্থিতি কোন জায়গায় যাবে তা বলা মুশকিল। বৃষ্টি হলে পরিস্থিতি আরও খারাপ হবে। মুখ্যমন্ত্রী নিজে সতর্ক করেছেন ব্যারেজগুলিক যাতে নিয়ন্ত্রনে রেখে জল ছাড়া হয়। ঝাড়খণ্ড এলাকায় যদি প্রবল বৃষ্টি হয়, তবে মারাত্মক আকার ধারন করবে। বন্যা পরিস্থিতি কোনদিকে যাবে তা এখনও বলা মুশকিল।’ আরামবাগ, ঘাটালে পর্যাপ্ত পরিমানে শুকনো খাওয়ার ও ত্রিপল পৌঁছে দেওয়া হয়েছে দুর্গত এলাকায়। দুর্গতদের উদ্ধারে ইতিমধ্যে সেনা বাহিনী নামানো হয়েছে। বাড়ি থেকেই দফায় দফায় কনফারেন্সের মাধ্যমে সেচ দফতরের আধিকারিকদের সাথে বৈঠক করছেন সেচমন্ত্রী সৌমেন মহাপাত্র।