বাংলার খবর
ভবানীপুরে জোড়া খুনে দ্রুত তদন্তের আশ্বাস দিয়ে নিহত দম্পতির কন্যাকে ফোন মুখ্যমন্ত্রীর

বেঙ্গল এক্সপ্রেস নিউজ: মুখ্যমন্ত্রীর বাড়ি থেকে ঢিল ছোড়া দূরত্বেই সোমবার সন্ধ্যায় রহস্যজনকভাবে মৃত্যু হয় গুজরাতি দম্পতির। ৭৩এ হরিশ মুখার্জি রোড এর ফ্ল্যাট থেকে সোমবার সন্ধ্যে ছটা নাগাদ উদ্ধার হয় অশোক সাহু ও রশ্মিতা সাহু নামে দু’জনের দেহ। পুলিশের প্রাথমিক অনুমান খুন করা হয়েছে ওই দম্পতিকে। এই ঘটনার দ্রুত তদন্ত করার আশ্বাস দিলেন ভবানীপুরের বিধায়ক তথা মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। মঙ্গলবার সকালেই নিহত ওই দম্পতির কন্যার সঙ্গে ফোনে কথা বলেছেন মুখ্যমন্ত্রী। তখনই তিনি ঘটনার দ্রুত তদন্তের আশ্বাস দিয়েছেন। পুলিশ খুনিদের দ্রুত খুঁজে বার করবে। তাই পুলিশের উপর ভরসা রাখার কথাও বলেছেন তিনি। তবে কোন পথে, কীভাবে ঘটনার তদন্ত হবে, সেই বিষয়ে পরিষ্কার করে কিছু মুখ্যমন্ত্রী জানাননি বলেই জানিয়েছেন নিহত দম্পতির কন্যা।
ইতিমধ্যেই ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে কলকাতা পুলিশের হোমিসাইড শাখা ও গোয়েন্দা দফতর। খবর পেয়েই সোমবার রাতে ঘটনাস্থলে পৌঁছান ভবানীপুর থানার পুলিশ, স্থানীয় কাউন্সিলর কাজরী বন্দ্যোপাধ্যায় এবং মেয়র ফিরহাদ হাকিম। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, মৃতদের শরীরে ধারালো অস্ত্র দিয়ে আঘাত ও গুলির চিহ্ন রয়েছে। ঘটনার রহস্য উদঘাটন করতে পুলিশ কুকুরও নিয়ে আসা হয়। খুন করার পর আততায়ীরা পায়ে হেঁটেই পালিয়েছে বলে প্রাথমিক অনুমান পুলিশের। ঘটনাস্থলে পৌঁছায় কলকাতা পুলিশের অ্যাডিশনাল কমিশনার প্রবীণ ত্রিপাঠী, পুলিশ কমিশনার বিনীত গোয়েল ও এসটিএফ। আততায়ীদের হদিশ পেতে রাস্তার সিসিটিভি ফুটেজ খতিয়ে দেখছে পুলিশ।
স্থানীয় বাসিন্দারা জানিয়েছেন, সকাল থেকেই ছোটো মেয়ে বার বার ফোন করেও কোনও উত্তর পাননি ওই দম্পতির। তারপরই তিনি সন্ধে ৬টা নাগাদ বাড়িতে ফিরে দেখেন বাড়ির দরজা খোলা। ঘরের ভিতরে রক্তাক্ত অবস্থায় পড়েছিলেন তাঁর বাব-মা। দরজার সামনে পড়েছিল মহিলার দেহ এবং শোওয়ার ঘরে পড়ে ছিল গৃহকর্তার দেহ। ঘরের আলমারি খোলা ছিল, টিভি চলছিল। খাবার প্লেট, খবরের কাগজ-সহ ঘরের জিনিসপত্র ওলটপালট ছিল। তারপরই তিনি প্রতিবেশীদের খবর দেন। মৃতদের পরনে থাকা কিছু গহনাও খোওয়া গিয়েছে বলেও জানা গিয়েছে। মৃত দম্পতির মেয়ের অনুমান, বাড়িতে ডাকাতি করেতে আসায় বাধা দেওয়াতেই খুন করা হয়েছে তাঁর বাবা-মা কে।
এরকম জনবহুল, আটোসাঁটো নিরাপত্তা বেষ্টিত এলাকায় আততায়ী খুন করে সকলের নজর এড়িয়ে কীভাবে পালিয়ে গেল, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। আর সেখান থেকেই প্রশ্ন উঠছে, তাহলে কি পরিচিত কেউ এই খুন করেছে? তবে সেই উত্তর এখনও তদন্তকারীদের কাছে অধরা। মঙ্গলবার সকালে ঘটনাস্থলে পৌঁছেছে ফরেন্সিক দল। খুনের কিনারা করতে এলাকার সিসিটিভি ফুটেজ এবং স্থানীয় বাসিন্দাদের সঙ্গেও কথা বলছেন তদন্তকারীরা। জানা গিয়েছে, ওই দম্পতির বাড়ি থেকে দুই দিক দিয়ে বেরোনোর রাস্তা রয়েছে। বাড়ির উল্টো দিকে একটি বড় হোটেল আছে। সেই দুই রাস্তার সিসিটিভি ফুটেজ এবং হোটেলের কর্মীদের সঙ্গেও কথা বলছেন তদন্তকারীরা।
পুলিশের প্রাথমিক তদন্তে জানা গিয়েছে কিছুদিন আগেই বাড়ি বিক্রি নিয়ে ওই দম্পতির সঙ্গে সামান্য বচসা হয়েছিল ক্রেতার। বাড়ি বিক্রির জন্য তাঁরা ৬০ লক্ষ টাকা চেয়েছিলেন। কিন্তু ক্রেতা তা দিতে রাজি হননি বলেই জানা গিয়েছে। তাই এই খুনের পিছনে বাড়ি বিক্রি সংক্রান্ত কোনও বিষয় জড়িত কিনা, তাও খতিয়ে দেখছে তদন্তকারী আধিকারিকরা।