দেশের খবর
ছয়-সাত মাস ধরে লাগাতার ধর্ষণ, অভিযুক্তকে খুন করল কিশোরী

বেঙ্গল এক্সপ্রেস নিউজ: প্রতিবেশী কিশোরীর প্রেমের সম্পর্কের কথা জেনে ফেলেছিলেন গ্রামের প্রাক্তন পঞ্চায়েত প্রধানের ছেলে। সেই সম্পর্কের কথা বাড়িতে জানিয়ে দেওয়ার ভয় দেখিয়ে গত ছয়-সাত মাস ধরে ওই কিশোরীকে লাগাতার ধর্ষণ করেন পঞ্চায়েত প্রধানের ছেলে। এমনকি তাঁর বন্ধুদের সঙ্গেও ওই কিশোরীকে শারীরিক সম্পর্কে লিপ্ত হতে বাধ্য করেন। এই লাগাতার শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন থেকে মুক্তি পেতেই একদিন প্রাক্তন পঞ্চায়েত প্রধানের ছেলেকে নেশাগ্রস্ত অবস্থায় ফাঁকা মাঠে ডেকে গলায় ফাঁস দিয়ে খুন করে ওই কিশোরী। চাঞ্চল্যকর এই ঘটনাটি ঘটেছে রাজস্থানের আলওয়ারে।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, প্রাক্তন ওই গ্রাম পঞ্চায়েত প্রধান ধনীরাম যাদবের ছেলের নাম বিক্রম যাদব। বয়স ৪৫। তিনি বিবাহিত। তাঁর কুড়ি বছরের দুই সন্তান রয়েছে। গত ১৮ মে স্থানীয় এক মাঠ থেকে বিক্রমের দেহ উদ্ধার হয়। বাড়ির লোক প্রথমে ভেবেছিল নেশাগ্রস্ত অবস্থায় পড়ে গিয়েই মৃত্যু হয়েছে বিক্রমের। কিন্তু বিক্রমের গলায় আঘাতের চিহ্ন দেখেই পরিবারের খুনের সন্দেহ হয়। পরিবারের লোকজন পুলিশকে খবর দেয়। দেহের ময়না তদন্তের পরই জানা যায়, বিক্রমকে খুন করা হয়েছে। পুলিশ দশ জনকে জিজ্ঞাসাবাদও করে। কিন্তু পুলিশ কিছুতেই খুনের কিনারা করতে পারছিল না। তারপরই ঘটনাস্থল থেকে মাটির নিচে চাপা পড়ে যাওয়ায় একটি মোবাইল ও গলায় ফাঁস দেওয়ার জন্য ব্যবহার করা একটি কাপড়ের ছেঁড়া টুকরো উদ্ধার করে পুলিশ। পুলিশ সূত্রে জানা যায়, ওই উদ্ধার হওয়া মোবাইলটি বিক্রমেরই ছিল। ওই মোবাইল থেকে পুলিশ ওই কিশোরী ও তার প্রেমিকের মধ্যে কথোপকথনের রেকর্ডিং উদ্ধার করে। সেই সূত্র ধরেই খুনের কিনারা করে স্থানীয় কোটকাসিম থানার পুলিশ।
থানার ওসি মহাবীর সিং জানিয়েছেন, ওই কিশোরী প্রায়ই বিক্রমদের বাড়িতে জল আনতে যেত। সেইরকমই একদিন জল আনতে গিয়ে প্রেমিকের সঙ্গে কথা বলার জন্য বিক্রমের থেকে মোবাইল চায় কিশোরী। বিক্রম চালাকি করে অটো কল রেকর্ডিং মোড অন করে কিশোরীকে মোবাইলটি দেয়। ওই কিশোরী তার প্রেমিকের সঙ্গে কথা বলার পর বিক্রমকে আবার মোবাইলটি ফেরৎ দিয়ে দেয়। সেই কল রেকর্ডিং শুনেই বিক্রম ওই কিশোরী প্রেমের সম্পর্কের কথা জানতে পারেন। তারপর থেকেই তাকে ব্ল্যাকমেইল করতে শুরু করেন। এরপর গত ছয়-সাত মাস ধরে ওই কিশোরীকে লাগাতার বিক্রম ধর্ষণ করেন বলে অভিযোগ। শুধু একা নয়, বিক্রম তাঁর বন্ধুদের সঙ্গেও ওই কিশোরীকে শারীরিক সম্পর্কে লিপ্ত হতে বাধ্য করেন। কিশোরীর আপত্তিতে কর্ণপাত করেননি বিক্রম। সেই অত্যাচার সহ্য করতে না পেরে বিক্রমকে খুন করার ছক কষে ওই কিশোরী। এরপর গত ১৭ মে নেশাগ্রস্ত অবস্থায় বিক্রমকে একটি নির্জন মাঠের ডেকে এনে গলায় ফাঁস দিয়ে খুন করে ওই কিশোরী।
বিক্রম ও তাঁর তিন বন্ধুর বিরুদ্ধে পোকসো সহ একাধিক ধারায় মামলা রুজু করেছে পুলিশ। বিক্রমকে পুলিশ গ্রেফতার করলেও তাঁর বাকি তিন বন্ধু এখনও ফেরার। নির্যাতিতা ওই কিশোরীকে একটি জুভেনাইল হোমে পাঠানো হয়েছে।