আন্তর্জাতিক
লকডাউন করেও রোখা যাচ্ছে না সংক্রমণের দাপট, চিনে করোনায় নতুন করে মৃত ২

বেঙ্গল এক্সপ্রেস নিউজ: টানা দু’বছর অতিমারীর দাপটে অতিষ্ট হয়ে উঠেছিল জনজীবন। সংক্রমণ রুখতে সরকারি বিধিনিষেধের জেরে এক-দেড় বছরেরও বেশি সময় ধরে গৃহবন্দি ছিল গোটাবিশ্ব। ওয়ার্ক ফ্রম অফিস চলে গিয়েছিল ‘ওয়ার্ক ফ্রম হোমে’। এই অবস্থায় বাজারে ভ্যাকসিন আসতে পরিস্থিতির কিছুটা উন্নতি ঘটে। ফের ধীরে ধীরে স্বাভাবিক হওয়ার পথে গোটাবিশ্ব।
কিন্তু নতুন বছর শুরুর দু’মাস যেতে না যেতেই ফের সংক্রমণের আতঙ্ক তাড়া করছে Covid19-এর আঁতুড়ঘর চিনকে। লকডাউন করেও রোখা যাচ্ছে না সংক্রমণের রেশ। ২০২১ সালে যেখানে একটিও নতুন কোভিড কেস ছিল না। সেখানে ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারি মাস থেকে চিনের বিভিন্ন প্রদেশে বিশেষ জিলান প্রদেশে হু-হু করে বাড়ছে কোভিড সংক্রমণের সংখ্যা। বিশেষ করে খবর মিলছে করোনার নতুন ভ্যারিয়ান্ট ওমিক্রনে আক্রান্ত হওয়ার কথা।
আরও পড়ুন: দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর ইউরোপজুড়ে ভয়াবহ শরণার্থী সঙ্কট তৈরি করছে রুশ-ইউক্রেন দ্বন্ধ: দাবি সমীক্ষায়
চিনা স্বাস্থ্যমন্ত্রকের তরফে জারি করা কোভিড বুলেটিন থেকে জানা গিয়েছে, শনিবার পর্যন্ত চিনের জিলান প্রদেশে নতুন করে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা ছুঁয়েছে ২১৫৭। যদিও কোভিড সংক্রমণ রুখতে জিরো-টলারেন্স নীতি গ্রহণ করেছে চিনা সরকার। অর্থাৎ যেখানে কোভিড সংক্রমণ ধরা পড়বে শুধুমাত্র সেই জায়গাতেই লকডাউন করা হবে। এদিকে করোনা সংক্রমণ রুখতে বিভিন্ন পরিষেবার উপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে চিনা প্রশাসন। শুধু তাই নয়, আন্তর্জাতিক উড়ানের ক্ষেত্রেও বেশকিছু নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে। বিদেশ থেকে চিনে আসার ভিসা বাতিল করা হয়েছে। আর এতে বেজায় সমস্যায় পড়েছেন ভারতে পাঠরত অন্তত পক্ষে ২৩ হাজার পড়ুয়া।
এদিকে ২০২০ পর চিনে ধীরে ধীরে কমে এসেছিল করোনায় মৃত্যু মিছিল। সেদেশে শেষ করোনায় মৃত্যুর খবর মিলেছিল ২০২১ সালের জানুয়ারি মাসে। তারপর নতুন করে কোনও সংক্রমণের খবর মেলেনি। যদিও ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারি মাস থেকে ফের চিনে বাড়তে শুরু করেছে ওমিক্রন ভ্যারিয়েন্টে আক্রান্তের সংখ্যা। শুক্রবার পর্যন্ত সেদেশে নতুন করে কোভিড আক্রান্ত হয়েছেন ২১৫৭ জন। এরমধ্যে মিলেছে ২ জনের মৃত্যুর খবর। আর যা নিয়ে উদ্বেগ বাড়ছে ক্রমশ। তাহলে কি ফের আছড়ে পড়তে চলেছে কোভিডের চতুর্থ ঢেউ।
আরও পড়ুন: নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসের দাম ছুঁয়েছে আকাশ, পুতিনের দেশেও অসহায় অবস্থা সাধারণ নাগরিকদের
এদিকে হংকং শহরে করোনা সংক্রমণের গ্রাফচিত্র ক্রমশ ঊর্ধ্বমুখী। সেখানে ইতিমধ্যে এক মিলিয়নেরও বেশি মানুষ সংক্রামিত হয়ে গিয়েছে। নতুন করে ডাকা হয়েছে লকডাউন। এদিকে, মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বিডেনের প্রধান চিকিৎসা উপদেষ্টা ডাঃ অ্যান্টনি ফৌসি সতর্ক করেছেন যে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে শীঘ্রই লকডাউন ব্যবস্থা আরোপ করতে হতে পারে। যদি কোভিড কেসগুলি ফের বেড়ে যায়। তিনি আরও বলেন, ”Omicron-এর BA.2 উপ-ভ্যারিয়েন্ট শীঘ্রই মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে সংক্রমণের হার বাড়িয়ে দিতে পারে।”
এদিন তিনি সিএনএন-এর সঙ্গে একটি সাক্ষাত্কারে পরামর্শ দিয়েছেন যে, মার্কিন নাগরিকরা সাধারণ জীবনযাপন এবং লকডাউনের মধ্যে জীবনযাপনের মধ্যে খুব শীঘ্রই “পিভট” করতে শিখবে।”
অন্যদিকে করোনার বাড়বাড়ন্ত ঠেকাতে ব্রিটেনেও বেশকিছু বিধিনিষেধ আরোপ করা হয়েছে। বাইরে ভ্রমণের ক্ষেত্রে ভ্যাক্সিনেটেড থাকা জরুরি। এছাড়াও আন্তর্জাতিক উড়ানের ক্ষেত্রে কোভিড সম্পর্কিত কিছু থাকলে তা বাতিল করা হতে পারে।
আরও পড়ুন: ইউক্রেনীয়দের জন্য বড় ঘোষণা বরিস প্রশাসনের, শরণার্থীদের টাকা দেবে ব্রিটেন
এদিকে দক্ষিণ কোরিয়াতেও ক্রমশ বাড়ছে ওমিক্রন আক্রান্তের সংখ্যা। কোরিয়া ডিজিজ কন্ট্রোল অ্যান্ড প্রিভেনশন এজেন্সি জানিয়েছে, শনিবার পর্যন্ত সেখানে নতুন করে কোভিড সংক্রামিত হয়েছেন ৩৮১,৪৫৪ জন।